মাদক মামলায় জামিন পেলেন রিয়া চক্রবর্তী। বুধবার সকালে বম্বে হাইকোর্টে বাঙালি অভিনেত্রীর জামিন মঞ্জুর হয়েছে। তবে রিয়ার ভাই শৌভিকের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার নিম্ন আদালত তাদের বিচার বিভাগীয় হেফাজতের মেয়াদ ২০ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিল। তাই আপাতত হেফাজতেই থাকতে হবে শৌভিককে।
ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, ১ লাখ রুপি জামানতে অভিনেত্রীর জামিন মঞ্জুর হয়। আদালত জানিয়েছে, আগামী ১০ দিন নিকটবর্তী থানায় হাজিরা দিতে হবে তাকে। নিজের পাসপোর্টও জমা রাখতে হবে থানায়। পুলিশের অনুমতি ছাড়া বৃহত্তর মুম্বাইয়ের বাইরে যেতে পারবেন না তিনি। বিদেশ যেতে গেলেও আদালতের অনুমতি নিতে হবে।
অভিনেত্রীর আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে বলেন, ‘‘আদালতের সিদ্ধান্তে খুশি আমরা। সত্যের জয় হয়েছে। প্রকৃত ঘটনাবলিকেই মেনে নিয়েছে আদালত। আইন মেনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিচারপতি সারং ভি কোতোয়াল।’’
বিনা যুক্তিতে রিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন সতীশ মানশিন্ডে। তিনি বলেন, ‘‘আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে বিনা যুক্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল রিয়াকে। বিনা যুক্তিতে এত দিন হেফাজতে রাখা হয়েছিল তাকে। তিনটি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এবং নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)-কে দিয়ে রিয়াকে হেনস্তা করা হয়েছে। এবার তা শেষ হওয়া দরকার। আমরা সত্য বের করে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’
রিয়ার পাশাপাশি এ দিন সুশান্তর দুই কর্মচারী দীপেশ সাবান্ত ও স্যামুয়েল মিরান্ডার জামিনও মঞ্জুর করেছে আদালত। ৫০ হাজার টাকা করে জামানত দিতে হয়েছে তাদের। দুজনের পাসপোর্টও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে সুশান্তকে মাদক সরবরাহ করার অভিযোগ যে আবদুল পরিহারের বিরুদ্ধে, তার জামিন মঞ্জুর হয়নি।
সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর তদন্তে মাদক যোগ সামনে আসার পর, গত ৮ সেপ্টেম্বর তার বান্ধবী রিয়াকে গ্রেপ্তার করে এনসিবি। বলা হয়, রিয়াই সুশান্তের জন্য জোগাড় করতেন। মাদক চক্রের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন রিয়া। সুশান্তর জন্য কেনা মাদকের টাকাও মেটাতেন তিনি।
কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়াই তাকে ও তার ভাইকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রিয়া। জামিনের আরজিতে তিনি জানান, মাদক নেওয়ার অভ্যাস ছিল সুশান্তর। তার জন্য কাছের মানুষদের ব্যবহার করতেন তিনি। মাদকের নেশা থেকে সুশান্তকে বের করে আনার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সফল হননি। সুশান্ত বাইপোলার ডিসঅর্ডারে ভুগছিলেন, অবসাদগ্রস্ত ছিলেন বলেও দাবি করেন রিয়া। তিনি জানান, সেই সময় পরিবারের লোকজনও সুশান্তর পাশ থেকে সরে যায়। লকডাউনে সুশান্তর অবস্থার আরও অবনতি হয়।
মাদকের পরিমাণ অনেক বাড়িয়ে দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন রিয়া। তার বিরুদ্ধে ওঠা মাদক চক্রে যুক্ত থাকা এবং অপরাধীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগও নস্যাৎ করে দেন অভিনেত্রী।
খুলনা গেজেট / এমএম