জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার (১৬ মার্চ) রাতে অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম বাদী হয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় গোয়েন্দা পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তার করেছে।
শনিবার (১৬ মার্চ) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।
এর আগে শুক্রবার (১৫ মার্চ) মেয়ের আত্মহত্যার ঘটনাকে হত্যা দাবি করে অবন্তিকার মা বলেন, ‘আমার মেয়েকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আম্মান, রাফি, মাহিয়ান, লাকি, রিমি, আঁখি, বন্যা ও দ্বীন ইসলাম আমার মেয়ের জীবনটাকে বিষিয়ে তুলেছিল। তারা বিভিন্নভাবে আমার মেয়েকে হয়রানি করে আজকের অবস্থার সৃষ্টি করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে গিয়েও আমার মেয়ে কোনো বিচার পায়নি। উল্টো তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হয়েছে, অপমান করা হয়েছে। আমার মেয়ে বিচার পেলে আজকের দিনে তাকে চলে যেতে হতো না।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমি বিভাগের চেয়ারম্যান ও প্রক্টর সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, বিষয়টির সুরাহার জন্য। আমার মেয়ে যাতে ভালোভাবে পড়াশোনা শেষ করতে পারে, সেটি আর হলো না। ওদের জন্য আমি মেয়ে হারিয়েছি, আমি তাদের বিচার চাই।’
এদিকে অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় নিজের কোনো দায় নেই বলে দাবি করেছেন দ্বীন ইসলাম। একটি সাক্ষাৎকারে এমন দাবি করেন তিনি। নিজ এলাকার মানুষ হওয়ায় অবন্তিকা ও তার পরিবারকে যথেষ্ট সহায়তা করেছেন জানিয়ে দ্বীন ইসলাম বলেন, অফিশিয়ালি যে দায়িত্ব পেয়েছিলেন, সে অনুযায়ী তা পালন করেছেন।
অন্যদিকে, অবন্তিকার মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিচারসহ ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৬ মার্চ) বিক্ষোভ মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি ঘোষণা করে। তারা বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি মানা না হলে, সোমবার (১৮ মার্চ) ভাইস চ্যান্সেলরের (ভিসি) কার্যালয় ঘেরাও করা হবে।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি হলো-
১. হত্যার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে।
২. অভিযুক্ত আম্মান সিদ্দিকী ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।
৩. জরুরি সিন্ডিকেট আহ্বান করে অভিযুক্তদের স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে।
৪. ভিকটিমের পরিবারকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে হবে।
৫. বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বাদী হয়ে মামলা করতে হবে।
৬. বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন সেল কার্যকর করতে হবে।
খুলনা গেজেট/কেডি