খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  রাজধানীর উত্তরা থেকে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম গ্রেপ্তার
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৮৩
  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অবন্তিকার আত্মহত্যা : জবি শিক্ষক ও সহপাঠী আম্মান আটক

গেজেট ডেস্ক

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার (১৬ মার্চ) রাতে  এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।

এদিকে ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত থেকে উত্তেজনা চলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। এ ঘটনায় ৬ দফা দাবি উত্থাপন করে শনিবার বিক্ষোভ করেন অবন্তিকার সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দাবি বাস্তবায়নের জন্য তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন।

এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় নিজের কোনো দায় নেই বলে দাবি করেছেন দ্বীন ইসলাম। শনিবার (১৬ মার্চ) বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন দাবি করেন তিনি।

নিজ এলাকার মানুষ হওয়ায় অবন্তিকা ও তার পরিবারকে যথেষ্ট সহায়তা করেছেন জানিয়ে দ্বীন ইসলাম বলেন, অফিশিয়ালি যে দায়িত্ব পেয়েছিলেন, সে অনুযায়ী তা পালন করেছেন। ঘটনা প্রায় দেড় বছর আগের। অবন্তিকার ব্যাচমেটরা কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন। ফেসবুকের কয়েকটি অ্যাকাউন্ট থেকে তাদের নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছিল। জিডি করার সময় অবন্তিকাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ তখন উচ্চতর তদন্তের আশ্বাস দিয়ে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গুজব ছড়ানো আইডির পরিচালককে ধরার আশ্বাস দেয়। পরে থানা থেকে বেরিয়ে অবন্তিকা তার বন্ধুদের ফেসবুকের ফেক অ্যাকাউন্ট থেকে সে গুজব ছড়ায় বলে জানায়। এর জন্য সে দুঃখ প্রকাশ করে। পরে এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা প্রক্টর অফিসে এসে অবন্তিকার বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ৮ আগস্ট একটা লিখিত অভিযোগ দেয়।

দ্বীন ইসলাম আরও বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন প্রক্টর মোস্তফা কামাল আমাকে এবং সহকারী প্রক্টর গৌতম কুমার সাহাকে (গণিত বিভাগ) ২০২২ সালের ১১ আগস্ট তদন্তের দায়িত্ব দেন। পরবর্তী সময়ে গত ১৬ আগস্ট, ২০২২ সালে প্রক্টর স্যারের উপস্থিতিতে আমি এবং সহকারী প্রক্টর গৌতম কুমার সাহা অবন্তিকা এবং তার অভিভাবকদের প্রক্টর অফিসে আসার জন্য আহ্বান করি। পরে অবন্তিকার মা মিটিংয়ে আসেন এবং অবন্তিকার ক্লাসমেটসহ (অভিযোগকারীরা) সবাই উপস্থিত ছিল।

সে সময় অবন্তিকার মা তার ব্যাচমেট (যারা এ অভিযোগ করেছে) তাদের কাছে ঘটনার সত্যতা শুনে বলেন যে, ‘আমার মেয়ে যা করেছে ভুল করেছে, ঘটনার জন্য অভিযোগকারী সবার কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে এবং ভবিষ্যতে আমার মেয়ে আর এই ধরনের কাজ করবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। যদি সে এমন কিছু করে তার দায় আমরা নিবো।’

বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য অবন্তিকার মা অনুরোধ জানান এবং বলেন, ‘আমার মেয়ে ভালো শিক্ষার্থী কিন্তু সে কয়েকদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ এবং ওষুধ খাচ্ছে। তখন তার ব্যাচমেটরা বিষয়টা মানবিক এবং ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখেন। এভাবে বিষয়টা প্রাথমিকভাবে মীমাংসা করা হয়। মীমাংসার পর অবন্তিকার মা জিডি তুলে নেয়ার জন্য অভিযোগকারীদের অনুরোধ করেন। কিন্তু অভিযোগকারীরা জিডি তুলে নিতে অসম্মতি জানায়, কারণ তাদের ধারণা অবন্তিকা ভবিষ্যতে এ ধরনের আচরণ আবারও করতে পারে।

সহকারী প্রক্টর হিসেবে জিডি তোলার বিষয়ে কিছু করার ছিল না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা শুধু প্রতিবেদন দেয়ার অধিকার রাখি। অবন্তিকা ও তার পরিবারের সদস্যদের আমি এ বিষয়ে জানিয়ে প্রক্টর স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করারও পরামর্শ দেই। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরও অনুরোধ জানাই বিষয়টি মীমাংসা করতে।

তবে অভিযোগকারীরা জানান, তারা অবন্তিকাকে আগামী ৩ মাস পর্যবেক্ষণ করবে এবং যদি সে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে, তাহলে জিডি তুলে নেয়া হবে। এর কিছুদিন পর অবন্তিকা ও তার মা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন এবং আমাকে প্রক্টর অফিসে না পেয়ে আমার বিভাগে আসেন। ওইদিন অবন্তিকার মা আমাকে (শিক্ষক দ্বীন ইসলাম) জানান, অবন্তিকার হলের বন্ধুরা ওর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছেন না, এতে সে মানসিকভাবে আরও ভেঙে পড়েছে। তখন আমি তাদেরকে প্রক্টর অফিসে লিখিতভাবে অভিযোগ করার পরামর্শ দেই। তখন অবন্তিকার মা বলে যা হওয়ার হয়ে গেছে, এখন আর এ বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে চাইছি না।

তখন তিনি (অবন্তিকার মা) বলেন, আমি মেয়েকে আর হলে রাখব না, এতে তার পড়াশোনা খারাপ হয়ে যাবে এবং সে মানসিকভাবে আরও ভেঙে পড়বে। তখন আমি তাকে বলি আপনি অভিভাবক যা ভালো মনে করেন সেটাই করেন। যে কোনো প্রয়োজনে আমার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। অভিযোগ নিষ্পত্তির ৩ মাসেরও কিছুদিন পর অবন্তিকা এবং তার বাবা-মা প্রক্টর অফিসে জিডি তোলার জন্য আসেন, কিন্তু তার ব্যাচমেটরা জিডি তুলতে অসম্মতি জানায়।

খুলনা গেজেট /কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!