সুন্দরবনের অভ্যন্তরে বন বিভাগের অফিস চত্বরে আবারও বাঘের দেখা পেয়েছেন বনরক্ষিরা। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে সুন্দরবনব পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ অফিসের চত্বরে বাঘটিকে দেখতে পায় বনরক্ষিরা। টর্চ লাইট মেরে বাঘটির ভিডিও করেন বনরক্ষীরা। এ সময় বনরক্ষীরা কৌশলে বাঘটিকে তাড়িয়ে দেয়। পরে রাত ১২টার দিকে আবারও বাঘটির উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। এদিকে ঘটনার পর থেকে সন্ধ্যার পরে বনরক্ষীদের একা বের হতে নিষেধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শরণখোলা রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক (এসিএফ) শেখ মাহাবুব হাসান।
এ নিয়ে চলতি বছরে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের বিভিন্ন অফিসে চারবারে ছয়টি বাঘের দেখা পেয়েছেন বনরক্ষীরা। এর আগে ৭ অক্টোবর রাতে ধানসাগর ফরেস্ট স্টেশন অফিসের বনরক্ষীদের ব্যারাকের সামনে দুটি বাঘ দেখা গেছে। ৮ আগস্ট সকালে কচিখালী অভয়ারণ্য কেন্দ্রের বনরক্ষীদের ব্যারাকের খুব কাছে চলে আসে বিশাল এক রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এ সময় মোবাইলে বাঘটির ভিডিও ধারণ করেন বনরক্ষীরা।
এ ছাড়া গত ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে রেঞ্জের চান্দেশ্বর টহল ফাঁড়ি অফিসের পুকুরপাড়ে দেখা মেলে জোড়া বাঘের। প্রায় ২২ ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করে বাঘ দুটি আবার বনে ফিরে যায়।
এসিএফ শেখ মাহাবুব হাসান বলেন, সন্ধ্যার দিকে অফিস চত্বরে কয়েকটি হরিণ ঘাস খাচ্ছিল। এমন সময় বনের ভেতর থেকে বিশাল একটি বাঘ এসে আক্রমণ করে হরিণের পালে। পরে ব্যারাক থেকে বনরক্ষীরাও বিষয়টি দেখতে পায় এবং কিছু ভিডিও করেন। এ সময় নানাভাবে শব্দ করে বাঘটিকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে রাত ১২টার দিকে হরিণের অস্বাভাবিক ডাকাডাকি শুনতে পান তারা। এতে ধারণা করা হচ্ছে বাঘটি গভীর রাতে আবারও ওই এলাকায় এসেছিল। বাঘ দেখার পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শিগগিরই হয়তো সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, এর আগেও অফিসের চারপাশে বিভিন্ন স্থানে বাঘের পায়ের অসংখ্য ছাপ দেখতে পেয়েছি। এ থেকে বোঝা যায় এর আগেও বাঘ এসেছিল অফিস চত্বরে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মো. নূরুল করিম বলেন, শরণখোলা রেঞ্জ অফিসটির পূর্ব পাশ থেকেই গহীন বন এবং পশ্চিম পাশে ভোলা নদী। তাই পূর্ব পাশ থেকেই বাঘ, হরিণসহ বিভিন্ন পন্যপ্রাণি অফিস চত্বরে সহজেই প্রবেশ করে। পূর্ব পাশের পৌনে এক কিলোমিটার এলাকা যদি কাটাতারের বেড়া দিয়ে আটকানো যায় তাহলে আর কোনো বাঘ ঢুকতে পারবে না, নিরাপদ থাকবে কর্মকর্তাসহ বনরক্ষীরা। শিগগিরই সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। মনে হচ্ছে সুন্দরবনে আগের তুলনায় বাঘ বৃদ্ধি পেয়েছে।
খুলনা গেজেট/এমএম