খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  অ্যান্টিগা টেস্ট: শেষ দিনে বাংলাদেশের দরকার ২২৫ রান, হাতে ৩ উইকেট
খুলনার পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক

অফিসই তার বাসভবন, কর্মীরা কাজের লোক

একরামুল হোসেন লিপু

যোগদানের চার মাসের মধ্যেই বিভিন্ন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, হয়রানিমূলক বদলী ও বিধিবহির্ভূত কর্মকান্ডের অভিযোগ উঠেছে খুলনা জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মোঃ সামসুদ্দীন মোল্লার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি দপ্তরটি পরিদর্শন শেষে এসব অভিযোগের সত্যতাও পেয়েছেন বিভাগীয় পরিচালক। এসব নিয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুলনায় যোগদানের পর থেকে তিনি কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের এসিযুক্ত গেস্টরুমে বসবাস শুরু করেন। একই সাথে তিনি অফিসের রান্নাঘর, ডাইনিং রুম ব্যবহার করছেন। সরকারি অফিসসূচি সকাল ৯টা থেকে বেলা ৪ টা পর্যন্ত হলেও তিনি কর্মচারীদের সকাল ৮টা থেকে রাত ১১ টা অফিসে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।

অফিসের একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী দিয়ে তিনবেলা তার ব্যক্তিগত রান্নাবান্নার কাজ করানো হচ্ছে। ব্যক্তিগত ও অফিসিয়াল কাজে তিনি উপ-পরিচালকের জন্য বরাদ্দ করা গাডড়ির পাশাপাশি পরিবার পরিকল্পনা সংক্রান্ত সিনেমা দেখানো চলচ্চিত্রের গাড়িটিও ব্যবহার করছেন। শুধু তাই নয়, যাতায়াতের দূরত্বের বিল চলচ্চিত্রের প্রজেকশনিস্ট ও গাড়িচালককে সিনেমা দেখানোর বিলের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে বলেছেন।

দপ্তর সংশ্লিষ্টরা জানান, খুলনায় যোগদানের আড়াই মাসে তিনি ১৯ দিন নৈমত্তিক ছুটি নিয়েছেন। এ ছাড়া প্রায়শই বিভিন্ন অজুহাতে কর্মস্থলের বাইরে ঢাকায় অবস্থান করেন । ব্যক্তিগত পোশাক ধোয়া ও আয়রনসহ রুমের বালিশের কভার, কম্বল, কাঁথা ইত্যাদি পরিস্কার বাবদ অফিসের টাকা ব্যয় করেছেন।

এই কর্মকর্তা যোগদানের পর থেকে অফিসের মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগ সমর্থিত কর্মচারীদের হয়রানি করছেন। গত ২৪ এপ্রিল একই সঙ্গে বিভিন্ন ইউনিয়নের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা, দাই নার্স, আয়া, অফিস সহায়কসহ ১৩ জনকে হয়রানিমূলক বদলির অভিযোগ উঠেছে।

এমন অবস্থায় গত ২৬ এপ্রিল পরিবার পরিকল্পনা খুলনা বিভাগের পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) মোঃ হাবিবুল হক খান খুলনা জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় পরিদর্শন করেন। সেই সময়ে তিনি ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মোঃ সামসুদ্দীন মোল্লাসহ আরো কয়েকজন কর্মচারীকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত পান। তিনি অনুপস্থিত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষে অবহিত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছেন।

পরিদর্শন প্রতিবেদনে বিভাগীয় পরিচালক উল্লেখ করেন, ভারপ্রাপ্ত উপ পরিচালক শামসুদ্দিন মোল্লা গত ১০ জানুয়ারি থেকে বিধি বহির্ভূতভাবে জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের ১নং গেস্টরুমে সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। তাঁর স্থায়ীভাবে অবস্থান করার কারণে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ায় তাঁকে অফিসের মধ্যে অবস্থান না করার জন্য ( স্মারক নং . ২৩-২৯০ তাং ৬/৪/২০২৩) পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি এখনও অফিসের মধ্যে গেস্ট রুমে অবস্থান করছেন। অফিসের মধ্যে অবস্থান না করার নির্দেশনাসহ তাকে আগামী ৩০/৪/২০২৩ তারিখের মধ্যে গেস্টরুম খালি করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করেন, অফিসের পরিচ্ছন্নতাকর্মী মঞ্জুয়ারা বেগম ভারপ্রাপ্ত উপ পরিচালক মোঃ সামসুদ্দিন মোল্লার অফিসের মধ্যে রান্না-বাড়ার কাজে ব্যস্ত থাকেন। ফলে অফিসের পরিছন্নতা কাজের ব্যহত হয়। উত্থাপিত অভিযোগ সম্পর্কে সোমবার (১৫ মে) রাতে মোবাইল ফোনে জানতে চাওয়া হলে ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মোঃশামসুদ্দীন মোল্লা বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘ আপনাকে আমি চিনি না, টেলিফোনে কোন বক্তব্য দেওয়া যাবে না।’

 

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!