ব্রাজিলের শেষ ষোলো নিশ্চিত হয়ে থাকলেও আজকের ম্যাচ কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। ব্রাজিল ক্যামেরুনের কাছে ১-০ গোলে হেরে গেলে আর অন্য ম্যাচে সুইজারল্যান্ড সার্বিয়ার বিপক্ষে তিন গোলের ব্যবধানে জিতলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হবে সুইসরাই। তিতে নিশ্চয়ই চাইবেন না দ্বিতীয় হয়ে নকআউটে খেলতে। সে কারণেই রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকা সাতজনকে আজ মাঠে নামালেও জয়ের ছন্দটা ধরে রাখতে চাইবে সেলেসাওরা।
কিন্তু একইভাবে পরীক্ষা করতে গিয়ে তিউনিসিয়ার কাছে ফ্রান্সের অবস্থা তো দেখেছে বিশ্বকাপ। আজ যদি তেমন কিছু হয় আত্মবিশ্বাসে তো ধাক্কাটা লাগতে পারে? প্রশ্নটি ছিল তিতের কাছে তীরের মতোই। উত্তর দিতে গিয়ে ভরসার জায়গাটি এতটুকু টলেনি ব্রাজিল কোচের, দলে বদল আসবে, তার মানে এই না যে আমরা দুর্বল দল হয়ে যাব। স্কোয়াডে ২৬ জনেরই বিকল্প রয়েছে। আমাকে সবকিছুই দেখে নিতে হবে।
সামনে থাকা ব্রাজিলিয়ান সাংবাদিকরা মনে হয় রাগে ফুঁসছিলেন বছর ঊনচল্লিশের আলভেসকে অধিনায়ক ঘোষণা করায়। কিন্তু এই বয়সী একজনকে দিয়ে তো আর ভবিষ্যৎ দল গড়ার প্রকল্প হতে পারে না, তাহলে কেন তাকে অধিনায়ক করা হবে? প্রশ্নটি শুনতে হয়েছিল আলভেসকেই, এটা ঠিক, আমার বয়সের কারণে এবং সাম্প্রতিক ফর্মের কারণে বিশ্বকাপে আমার স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত হওয়া হয়তো অনেকে মেনে নিতে পারেননি। তবে এটাও ঠিক, আমি ব্রাজিলের মিশনে নিজের সর্বোচ্চ দিয়েই চেষ্টা করব। ডিফেন্সে থিয়াগো সিলভাকে অফ ডে দেয়া হবে। সে কারণেই ওই জায়গায় অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার রাখার সিদ্ধান্ত আলভেসকে নিয়ে।
ব্রাজিল দলে আজকের বদলটি শুরু হবে গোলপোস্টের নিচে থেকে। নিয়মিত গোলরক্ষক অ্যালিসনকে বসিয়ে নামানো হবে এন্ডারসনকে। মিডফিল্ডের দায়িত্বে থাকবেন ফ্যাবিনো। আর আক্রমণে অ্যান্থনি আর গ্যাব্রিয়েল মার্সিয়াল থাকবেন গোল করার দায়িত্বে।
ইতিহাস বলছে, বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে ব্রাজিল এতটাই ধারাবাহিক, গত ১১টি বিশ্বকাপের এই পর্ব দারুণভাবে উতরে গেছে তারা। গ্রুপ পর্বে টানা ১৭ ম্যাচ অপরাজিত তারা, যার মধ্যে ১৪টি জয় আর তিনটি ড্র। বিশ্বকাপে ২৯টি গ্রুপ ম্যাচের মধ্যে সর্বশেষ হেরেছিল সেই ১৯৯৮ সালে ফ্রান্স বিশ্বকাপে। হারটি ছিল নরওয়ের বিপক্ষে।
আজ অবশ্যই সেসব শঙ্কা নেই ব্রাজিলের। তারপরও একটা ঝুঁকি নিতেই চান কোচ তিতে, এই বদলটাকে কেউ ঝুঁকি বলতে পারেন, কেউ আবার নতুনদের জন্য সুযোগও বলতে পারেন। তবে আমি এই বদলের পক্ষে। সেদিক থেকে বলা যায়, তৃতীয় ম্যাচে নতুন ছকে দল নামাবেন তিতে।
দল নিয়ে তিতে যে এবার আদাজল খেয়ে নেমেছেন, তা শুরু থেকেই স্পষ্ট হয়ে গেছে। এমনকি বিয়ে বার্ষিকীতে হোটেলে পরিবারও এসেছিল তার সঙ্গে দেখা করতে। স্ত্রীকে ফুল, কেক আর চকলেট দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন তিতে। বলে দিয়েছেন, দেখা আর কথা হবে বিশ্বকাপের পরে!