তেরখাদায় অদক্ষদের হাতে ইজিবাইক থাকায় বাড়ছে যানজট আর দূর্ঘটনার শঙ্কা। এসব ইজিবাইক চালকদের নেই কোন প্রশিক্ষণ। ফলে যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠা-নামা, দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানো আর পাল্লা দিয়ে ইজিবাইক চালানোর কারণে হামেশায় ঘটছে দূর্ঘটনা। গ্রাম্য সড়ক থেকে শুরু করে মহাসড়ক পর্যন্ত এখন যেন ইজিবাইকের দখলে। চলাচলরত অসংখ্য ইজিবাইকের কারণে তেরখাদা উপজেলা সদরের কাটেংগা বাজার, জয়সেনা বাজার, তেরখাদা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলায় চলাচলরত ইজিবাইক চালকরা কোন নিয়ম শৃঙ্খলার তোয়াক্বা না করে সড়কে ইচ্ছামত ইজিবাইক ঘোরানো, ঘন ঘন রাস্তায় এপাশ-ওপাশ পরিবর্তন করার কারণে ঘটছে দূর্ঘটনা। একই সাথে মোটর সাইকেলসহ দ্রুতগতির পরিবহনের পেছন থেকে আগে উঠতে গেলে ইজিবাইকে ধাক্কা লেগে প্রতিনিয়ত ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। ইজিবাইকচালকদের খাম-খেয়ালীতে উপজেলা সদর এলাকায় সৃষ্টি যানযট এখন প্রতিদিনের চিত্র।
সাধারন পথচারিদের অভিযোগ, ইজিবাইক চালকরা উপজেলার মধ্য যেখানে সেখানে তাদের গাড়ি পার্কিং করার কারণে সৃষ্ট যানযটে ২/৩ মিনিটের রাস্তায় কখনও কখনও ১০/১৫ মিনিট সময় লেগে যায়। প্রাপ্ত তথ্যমতে ২০১১ সালের দিকে তেরখাদা উপজেলায় অল্প কিছু সংখ্যক ইজিবাইক দেখা গেলেও বর্তমানে প্রায় ২৫০ এর বেশি ইজিবাইক চলাচল করছে।
সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, যারা ইজিবাইক চালাচ্ছেন, তাদের মধ্যে ১২/১৩ বছরের কম বয়সের কিশোরও রয়েছে। এখন প্রতিদিন নতুন নতুন ইজিবাইক সড়কে নামানো হচ্ছে। এসব ইজিবাইক এলাকার যে কোন সড়কে চালানোর কোন অনুমতি না থাকলেও যাত্রী নিয়ে মহাসড়কে দ্রুত গতিতে যানবাহনের সাথে পল্লা দিয়ে যাত্রী বহন করছে। এসব ইজিবাইক চালকদের মধ্যে কেউ মাঠে কৃষক, শ্রমিক অথবা আগে রিকশা, ভ্যান চালাতেন। আবার কেউ কেউ কিশোর, এদের শতকরা ৮০ জন চালকই জানেন না কিভাবে ইজিবাইক চালাতে হয়। নেই কোন প্রশিক্ষণও। তারপরও তারা নিয়মিত সড়ক মহাসড়ক ছাড়াও গ্রামাঞ্চলের সড়কে ৮ জন করে যাত্রী নিয়ে দ্রুত গতিতে চালিয়ে যাচ্ছেন।
ইজিবাইক চালক হেদায়েত মোল্যা জানান, তিনি ৪/৫ বছর ধরে ইজিবাইক চালাচ্ছেন, আজ এটা চালিয়ে ৬ সদস্যর সংসার চলছে। তবে যে হারে প্রতিদিন নতুন নতুন ইজিবাইক রাস্তায় নামছে, তাতে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তার অভিযোগ নতুন ইজিবাইক চালকরা আইন কানুন মানে না, কে কত টাকার ভাড়া আয় করবে তারা সেই প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত। এর কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে।
শরিফুল, নওশেরসহ কয়েকজন ইজিবাইক চালক বলেন, আগে ভালো পয়সা রোজগার হত, কিন্তু এখন ইজিবাইকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় আয় কম হচ্ছে। তারা জানান, বর্তমানে উপজেলায় এমন অবস্থা যেন মানুষের চেয়ে ইজিবাইকের সংখ্যা বেশি হয়ে গেছে।
মোল্যা রায়হান নামে এক পথচারী বলেন, উপজেলার ভিতরে চলাচলরত ইজিবাইক দেখলে মনে হয় এটা যেন ইজিবাইকের শহর।
অপ্রাপ্ত বয়স্কদের মটোরসাইকেল ও ইজিবাইক চালানো এবং খুব বেশি রেসিং থেকে বিরত থাকা এবং ইজিবাইক চালাকদের নিয়ন্ত্রিতভাবে চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন তেরখাদা থানার অফিসার ইনচার্জ (চলতি) স্বপন কুমার রায়।
খুলনা গেজেট / এমএম