কলকাতার বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, লেখক-গবেষক, প্রাবন্ধিক ও ঐতিহ্যবাহী চতুরঙ্গ পত্রিকার প্রাক্তন সম্পাদক আব্দুর রাউফ অজস্র মানুষের চোখের জলে শেষ বিদায় নিলেন। শনিবার কলকাতার পার্কসার্কাস ৩ নম্বর গোবরা গোবরস্হানে তাকে দাফন করা হয়। তার আগে এদিনই পার্কসার্কাস এলাকার মেহের আলি রোডের তাঁর বাসভবনের কাছে তাঁর জানাজা হয়। অজস্র মানুষ ও গুনমুগ্ধ জানাজায় সামিল হন। এদিন ভোরে তাঁর একমাত্র ছেলে আসাদ রাউফ নেদারল্যান্ডে থেকে কলকাতা পৌছান। তারপর সিদ্ধান্ত হয় বাদ জহর রাউফ সাহেবের দাফন হবে।
উল্লেখ্য, রাউফ সাহেব মারা যান ৯ জুন বৃহস্পতিবার রাতে। গত এপ্রিল মাস থেকে তিনি অসুস্থ ছিলেন। কলকাতার পার্কসার্কাস এলাকার মেহের আলি রোডের বাসভবনে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্হা করা হয়। সর্বক্ষনের জন্য আয়া রাখা হয়। এছাড়া তাঁর স্ত্রীও সবসময় দেখভাল করতেন।
১৯৪৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারী হুগলি জেলার তারকেশ্বর থানার গয়েশপুর গ্রামে আব্দুর রাউফ জন্মগ্রহণ করেন । গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে কলকাতার মৌলানা আজাদ কলেজে (সাবেক ইসলামিয়া কলেজ) ইতিহাসে অনার্স নিয়ে ভর্তি হন। কৃতিত্ত্বের সঙ্গে অনার্স পাশ করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস নিয়ে এম এতে ভর্তি হন। ওখান থেকে এম এ পাশ করে জড়িয়ে পড়েন লেখালেখির সঙ্গে। একসময় আনন্দবাজার পত্রিকাতে চাকুরি করতেন। পরে সেখান থেকে চলে আসেন।
হুমায়ুন কবীর ও আতাউর রহমান প্রতিষ্ঠিত চতুরঙ্গ পত্রিকার সম্পাদক হন। কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গের বিদ্বজনদের কাছে এই পত্রিকা খুব জনপ্রিয় ছিল। এছাড়াও দীর্ঘ একদশক ধরে সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকায় উপসম্পাদকীয় লিখতেন। কলকাতার পার্কসার্কাস এলাকার ব্রাইট স্ট্রিট থেকে প্রকাশিত দিনকাল পত্রিকার তিনি ছিলেন প্রধান সম্পাদক। ২০০৭-০৮ সালে তিনি সেরা সম্পাদক হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমী পুরস্কার পান। বেশ কিছুদিন তিনি সারদা গ্রুপের দৈনিক সকালবেলা-র বিভাগীয় সম্পাদক ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে কলকাতা একজন বিদগ্ধ ব্যক্তিত্বকে হারালেন।
খুলনা গেজেট/ আ হ আ