সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ছোট বোনের স্বামী কর্তৃক ছোড়া পেট্রোল আগুনে দগ্ধ ভ্যানচালক আব্দুল কাদেরের মৃত্যুর পর এবার মারা গেলেন তার স্ত্রী শারমিন খাতুন। বুধবার (১৪ জুন) সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত শারমিন খাতুনের স্বামী ভ্যানচালক আব্দুল কাদের ১ জুন বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
ভ্যান চালক কাদের সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়ানের চন্দনপুর গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে।
পারিবারিক বিরোধের জের ধরে ২৮ মে রোববার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর গ্রামে ছোট বোনের স্বামীর দেয়া আগুনে ঘুমন্ত অবস্থায় মারাত্মকভাবে অগ্নিদগ্ধ হয় ওই গ্রামের কাদের, তার স্ত্রী শারমিন খাতুন ও শিশুকন্যা ফাতেমা(৭)। আব্দুল কাদের এর ঘরের দরজার বাইরে তালাবদ্ধ করে জানালা দিয়ে পেট্রোল ছুড়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এ সময় তাদের আত্ম চিৎকারে আশপাশের ঘুমন্ত প্রতিবেশিরা উঠে এসে জানালার রড ও তালা ভেঙ্গে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় ক্লিনিকে ও পরে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে আশংকাজনক অবস্থায় কাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, কাদেরের সঙ্গে তার বোনের স্বামী বেনাপোলের সবুজ হোসেনের কয়েকদিন ধরে ঝামেলা চলছিলো। এমনকি মোবাইল ফোনে কাদেরকে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলো সবুজ। বিষয়টি কাদের ইউপি চেয়ারম্যানকেও অবহিত করেছিলেন। এনিয়ে একটি শালিস-বৈঠকের কথা ছিলো। কিন্তু সবুজ সালিশের অপেক্ষা না করে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে তাদের ঘরে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চন্দনপুর ইউপি চেয়ারম্যান ডালিম হোসেন জানান, ভ্যানচালক স্বামী আব্দুল কাদের এর মতই শেষ পর্যন্ত জীবনযুদ্ধে হেরে গেলেন স্ত্রী শারমিন খাতুনও। কাদের তার স্ত্রী ও কন্যা অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আহত কাদের ও তার স্ত্রী শারমিন খাতুন মারা গেলেন। এখন তাদের একমাত্র শিশুকন্যা ফাতেমা খাতুন চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত সবুজের সহযোগি কাঁদপুর গ্রামের মান্নান বিহারীর ছেলে সোহাগ হোসেন (২০) কে পুলিশ আটক করেছে। সোহাগ ও সবুজ পরষ্পর বন্ধু। তারা মামাতো-ফুফাতো ভাইরাভাই ছিলো। তিনি এই জঘন্য অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান ভ্যানচালক আব্দুল কাদের এর স্ত্রী শারমিন খাতুন এর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন , এ ঘটনায় নিহত কাদের এর বোন সুফিয়া খাতুন বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে সোহাগ হোসেনকে আটক করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত সবুজকে আটকের চেষ্টা চলছে।
খুলনা গেজেট/এসজেড