খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বাসা থেকে ২ সন্তানসহ বাবা-মায়ের মরদেহ উদ্ধার
  কুমিল্লায় অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কায় নিহত বেড়ে ৭

৯ বছরে রেকর্ড তাপমাত্রা খুলনা অঞ্চলে, আছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনা বিভাগে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। গত ৯ বছরের মধ্যে আজ রেকর্ড তাপমাত্রা এই অঞ্চলে। এখানে টানা প্রায় দুই সপ্তাহ দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। সেইসঙ্গে গত ২/৩ দিন লোডশেডিং আর বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। প্রচন্ড গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে খুলনা অঞ্চলের মানুষের। রোজার মধ্যে গরমের তীব্রতায় দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। এই তাপমাত্রা আরও ২/৩ দিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

নগরের রিক্সাচালক মো. মিঠু বলেন, সূর্যের অনেক তাপ। রোদে সারা শরীর পুড়ে যায়। ভোর থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত আর বিকালে ৫টার পর থেকে গরম কিছুটা কম থাকে। সকাল ১০টার পর থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত পৰচন্ড তাপদাহ থাকে। মনে হয় যেন চামড়া জ্বলে যাচ্ছে। শরীর ঘেমে যায়। শরীর দূর্বল হয়ে আয়। রিক্সা চালাতে অনেক কষ্ট হয়। মাঝে মধ্যে একটু ছায়াতে থাকি। বৃষ্টিও হচ্ছে না, বৃষ্টি হলে ভালো হতো।

নগরীর খালিশপুর পার্কের রোডের বাসিন্দা জাহিদ হাসান তুষার বলেন, বাতাসে যেন আগুন উড়ছে। প্রচন্ড গরম। গরমের সাথে ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে। এই গরমে বাহিরে যেমন বের হওয়া যাচ্ছে না, তেমনই ঘরেও অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে। গরমের সাথে বাহিরে ধুলাবালিও অনেক বেশি। গরম থেকে প্রশান্তি পেতে দিনে ও রাতে ২/৩ বার গোসল করছি।

নগরীর রায়ের মহল এলাকার বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম বলেন, একদিকে সিয়াম সাধনার মাস অন্যদিকে তীব্র তাপদাহ। সাথে কর্ম ব্যস্ততা শেষ করে বাসায় ফিরে কোথায় স্বস্তিতে থাকব, সেখানে দিনে ও মধ্যরাতে ঘনঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। এই গরমে অসহনীয় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।

রূপসা উপজেলার বাসিন্দা বিএম শহিদুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন তাপমাত্রা অনেক বেশি। বাহিরে তেমন বের হওয়া যায় না। বের হলেও ছাতা ব্যবহার করতে হচ্ছে। গরমে খেটে খাওয়া মানুষগুলোর কষ্ট আরও বেশি। বৃষ্টির প্রয়োজন।

আরও পড়ুন : ৪২ ডিগ্রি ছাড়াল চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা

দিনমজুর মো. আশরাফুল বলেন, রাজমিস্ত্রীর হেলপারের কাজ করি। রোজার মধ্যে এতো গরমে খুব কষ্ট হচ্ছে। শরীর থেকে ঘাম ঝড়ছে। রোদের তাপও বেশি। ঈদের সময়, কাজও করা প্রয়োজন। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কমে যেত। আমাদের কাজ করতেও সুবিধা হতো। বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করছি।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, ৯ বছরের মধ্যে আজকে খুলনা বিভাগের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে বিভাগের চুয়াডাঙ্গা জেলায়। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর খুলনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এছাড়া যশোরে ৪০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মোংলায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কুষ্টিয়ার কুমারখালী ৪০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে।

এরআগে ২০১৪ সালে চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল। আর ২০২১ সালে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। গত ৯ বছরের মধ্যে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠেনি। ফলে খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, তাপমাত্রা আরও ২/৩ দিন অব্যাহত থাকবে। এরপর কিছুটা কমবে এবং দু-এক জায়গাতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

ওয়েস্টজোন পাওয়ার জেনাীেশন কোম্পানী (ওজোপাডিকোর) চীফ ইঞ্জিনিয়ার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গরমে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। তবে আজ সকাল থেকে লোডশেডিং নেই। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে কিছু কিছু স্থানে বিদ্যুৎ বন্ধ থাকছে। তবে শুক্রবার লোডশেডিং ছিল। তবে কি কারণে লোডশেডিং ছিল আমাদের জানা নেই।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!