খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৬শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  কুয়েট উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি

৮ মাসে ২২ দলের আত্মপ্রকাশ

গেজেট ডেস্ক

চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর গত আট মাসে ওই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) ২২টি রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে। গত বছরের শেষ চার মাসে আত্মপ্রকাশ করে ১১টি দল। আর চলতি বছরের প্রথম চার মাসে আত্মপ্রকাশ করেছে ১১টি দল। এর মধ্যে গত বছর আত্মপ্রকাশ করা বেশির ভাগ দল সাংগঠনিকভাবে নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছে।

আর চলতি বছর আত্মপ্রকাশ করা দলগুলোর মধ্যে এনসিপিসহ দু-তিনটির দল গঠনের কাজ এখনো প্রক্রিয়াধীন। নতুন আত্মপ্রকাশ করা কয়েকটি দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা নির্বাচন কমিশনের শর্ত অনুযায়ী জেলা ও উপজেলায় কমিটি গঠন ও দলীয় অফিস স্থাপনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এ উপলক্ষে রমজান ও ঈদে দলগুলোর নেতাকর্মীরা নিজ নিজ এলাকায় গণসংযোগ ও ইফতারের কর্মসূচি পালন করেন। তবে এনসিপিসহ চলতি বছর আত্মপ্রকাশ করা বেশির ভাগ দল এখনো জেলা ও উপজেলার কমিটি ঘোষণা করতে এবং নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনের শর্ত পূরণ করতে পারেনি।

এ জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে নিবন্ধনের সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন করেছে এবং করতে যাচ্ছে দলগুলো।
এরই মধ্যে নিবন্ধনের সময় বৃদ্ধির জন্য গত ১৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে এনসিপি। চিঠিতে দলটির পক্ষ থেকে ৯০ দিনের মতো সময় বৃদ্ধির আবেদন জানানো হয়েছে।

এসব নতুন দলের বাইরেও বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫০। গত বছর আবেদন করে নিবন্ধন পায়নি এমন দলের সংখ্যা প্রায় ৮৭।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুসারে দল নিবন্ধনের শর্ত শিথিল হলে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। সেই সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলের সংখ্যাও অতীতের সব রেকর্ড ভাঙতে পারে। দেশের ১২টি সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ৩৯টি দল অংশ নিয়েছিল ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। আর সবচেয়ে কম তিনটি দল অংশ নিয়েছিল ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে।

দল নিবন্ধনের বিষয়ে এনসিপির যুগ্ম আহবায়ক সারোয়ার তুষার  বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করব। আমরা এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনের কাছে তিন মাসের সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছি। আমরা আশা করি, দুই মাসের মধ্যে আমাদের সাংগঠনিক বিস্তার সম্পন্ন করতে পারব।’

এনসিপি ছাড়াও গত আট মাসে আত্মপ্রকাশ করা আরো কয়েকটি দল নিবন্ধনের সময় বৃদ্ধি এবং নিবন্ধনের শর্ত শিথিলের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেছে। এই দলগুলোর মধ্যে রয়েছে ওয়ার্ল্ড মুসলিম কমিউনিটি ও সমতা পার্টি।

ওয়ার্ল্ড মুসলিম কমিউনিটি নামের একটি দল আত্মপ্রকাশ করে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর। হাফেজ মাওলানা মাহমুদ আব্বাসকে আহবায়ক এবং হাফেজ মাওলানা ইলিয়াস হোসাইনকে সদস্যসচিব ঘোষণা করে দলটি। তবে সেই ঘোষণার সাত মাস পরও দলটি এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নিবন্ধন আবেদনের শর্ত পূরণ করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন দলটির আহবায়ক। তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনের গণবিজ্ঞপ্তি জারির পর থেকে ২১ জেলায় ও ৬০ উপজেলায় কমিটি দিতে পেরেছি। কিন্তু আমরা ইসির সব শর্ত পূরণ করতে পারিনি। তাই আমরা ইসির কাছে নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময় বৃদ্ধি ও শর্ত কিছুটা হলেও শিথিল করার আবেদন করব।’

একই পরিস্থিতির কথা জানান গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর আত্মপ্রকাশ করা রাজনৈতিক দল সমতা পার্টির আহবায়ক হানিফ বাংলাদেশি। হানিফ বাংলাদেশি বলেন, ‘আমি ১৩ জেলায় ও ৬২ উপজেলায় কমিটি দিয়েছি। কিন্তু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এখনো করতে পারিনি। আর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের যে জটিলতা তাতে মনে হয় না যে এটি করা সম্ভব হবে। আমরা নিবন্ধনের শর্ত শিথিল এবং সময় বাড়াতে ইসিতে চিঠি দিয়েছি।’

এসসিপি, ওয়ার্ল্ড মুসলিম কমিউনিটি ও সমতা পার্টি নিবন্ধনের সময় বৃদ্ধির আবেদন জানালেও নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সময়ের মধ্যেই নিবন্ধনের আবেদন করেছে নতুন আত্মপ্রকাশ পাওয়া কয়েকটি দল। এই দলগুলোর মধ্যে রয়েছে আমজনতার দল, সার্বভৌমত্ব আন্দোলন ও জনতার বাংলাদেশ পার্টি।

গণ অধিকার পরিষদ ভেঙে আসা একাংশের সদস্যরা চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি আমজনতার দল নামের একটি নতুন দলের নাম প্রকাশ করে। দলটি নির্বাচন কমিশনের সব শর্ত পূরণ করে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে বলে জানিয়েছেন দলের সদস্যসচিব মো. তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা ৩৬টি জেলা ও ৬০টি উপজেলায় কমিটি দিয়েছি। এর পাশাপাশি ২৬ জায়গায় আমরা অফিস নিয়েছি। আমাদের নেতাকর্মীরা সারা দেশে জেলা কমিটির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। আশা করি, দু-তিন দিনের মধ্যে ১০০ উপজেলায় কমিটি গঠন হয়ে যাবে।’

আর আজ রবিবার নিবন্ধনের জন্য আবেদন করবে গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর আত্মপ্রকাশ পাওয়া নতুন দল সার্বভৌমত্ব আন্দোলন। দলটিতে ১০ জনকে সংগঠক ও ৮৩ জনকে সহসংগঠক করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের সব শর্ত পূরণ করা হয়েছে জানিয়ে দলটির কেন্দ্রীয় সংগঠক শ্মশান ঠাকুর বলেন, ‘আমরা নিবন্ধনের কাগজপত্র গুছিয়ে ফেলেছি। আমরা ২৩টি জেলায় এবং ১৩৫টি উপজেলায় কমিটি করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা শেষ দিনেই নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমা দেব।’

চলতি বছরের ১৩ মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আইনজীবীদের নেতৃত্বে জনতার বাংলাদেশ পার্টি নামের নতুন একটি রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করে। দলটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. সফিকুল ইসলাম সবুজ খান এবং মহাসচিব অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম।

দলটি আত্মপ্রকাশ করার এক মাসের মধ্যে ইসির সব শর্ত পূরণ করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আমরা ২৫টি জেলা এবং ২০০টি উপজেলায় কমিটি দিয়েছি। আমরা রবিবার (আজ) নির্বাচন কমিশনে আবেদন করব।’

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ১৮ দিন পর ২৩ আগস্ট প্রথম রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে নিউক্লিয়াস পার্টি অব বাংলাদেশ (এনপিবি)। দলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে আত্মপ্রকাশ করে। সেদিন দলটির পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আহবায়ক হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা করেন অধ্যাপক মোহাম্মদ সিদ্দিক হোসাইন।

নিউক্লিয়াস পার্টি অব বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশের ১৬ দিন পর ৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি হোটেলে এস এম শাহাদাতের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টি। দলটির মহাসচিব সাইফুল আলম।

গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ জনপ্রিয় পার্টি (বিপিপি)। দলটির আহবায়ক মো. সিরাজুল ইসলাম এবং যুগ্ম আহবায়ক মো. বকুল হোসেন হৃদয়।

গত বছরের ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি) নামের আরো একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটে। লন্ডনপ্রবাসী মো. সোহেল রানাকে দলটির আহবায়ক করা হয়।

২৮ নভেম্বর আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টি। দলটির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ইকরামুল খান এবং মহাসচিব আবুল কালাম আজাদ।

গত বছরের ৩০ নভেম্বর আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি)। এই নতুন দলে গোপালগঞ্জ জেলার জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশিদ চৌধুরীকে আহবায়ক করা হয়।

গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে আত্মপ্রকাশ করে মুসলিম জাতীয়তাবাদী নতুন ধারার রাজনৈতিক দল জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ। খোমেনী এহসানকে আহবায়ক এবং হাসান আরিফকে দলটির সদস্যসচিব ঘোষণা করা হয়।

চলতি বছর যে আটটি দলের আত্মপ্রকাশ 

৪ জানুয়ারি দেশ জনতা পার্টি নামের একটি নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করে। মো. নূর হাকিমকে দলটির চেয়ারম্যান এবং ইদ্রিস আলী নান্টুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

গত ২৮ জানুয়ারি মেজর জেনারেল (অব.) মো. এহতেশাম উল হকের নেতৃত্বে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক শক্তি নামের একটি দলের আত্মপ্রকাশ ঘটে।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ‘নতুন সমাজ সমৃদ্ধ দেশ, হোক জনগণের বাংলাদেশ’ স্লোগান সামনে রেখে বাংলাদেশ সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি নামের একটি রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করে। ওই দিন সংবাদ সম্মেলন করে দলের আনুষ্ঠানিক যাত্রার ঘোষণা করেন দলটির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. বিভূতি রায়।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ মিলনায়তনে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ জন-অধিকার পার্টি। দলটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন ইসমাইল সম্রাট।

গত ২০ মার্চ রাজধানী ঢাকায় ঘোষণার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে জনতার দল। প্রাথমিকভাবে দলটিতে তিন সদস্যের একটি আহবায়ক কমিটি কাজ করছে। দলের প্রধান সমন্বয়ক ও মুখপাত্রের দায়িত্বে রয়েছেন জাতিসংঘে কাজ করে আসা ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নিরাপত্তাবিষয়ক লেখক ডেল এইচ খান। চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. শামীম কামাল। আর সদস্যসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন আজম খান।

গত ১১ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি নামের নতুন একটি রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করে। নতুন এই দলের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মালেক ফরাজী।

গত ১৪ এপ্রিল ভাসানী অনুসারী পরিষদ থেকে ভাসানী জনশক্তি পার্টি নামের একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটরিয়ামে এক প্রতিনিধি সম্মেলনে এই দল গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

নতুন এই দলে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু এবং মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ড. আবু ইউসুফ সেলিম।

সর্বশেষ গত ১৭ এপ্রিল রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত শেরাটন হোটেলে মানুষের সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিতসহ ৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণার মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টি (বিএজেপি)। আত্মপ্রকাশকালে ৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির আহবায়ক ডেসটিনি গ্রুপের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীন। দলের সদস্যসচিবের দায়িত্বে আছেন ফাতিমা তাসনিম।

২০২৪ সালের ১৬ নভেম্বর গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী এলাকার সাবেক ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুক্তির ডাক ৭১ নামের একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটে। ছাত্রলীগের মতোই লোগো নিয়ে গোপনীয়তার সঙ্গে ঢাকার একটি রেস্টুরেন্টে দলটির আত্মপ্রকাশ ঘটে।

ইসিতে নিবন্ধিত দল ৫০টি 

নির্বাচন কমিশনে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। এ পর্যন্ত ৫৫টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও পরবর্তী সময়ে শর্ত পূরণ, শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের (জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা) নিবন্ধন বাতিল করা হয়। গত বছর ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আদালতের নির্দেশে এবি পার্টি নিবন্ধন পায়। এ ছাড়া নুরুল হক নুরের গণ অধিকার পরিষদ (জিওপি), মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য এবং গণসংহতি আন্দোলনের নিবন্ধন দেয় নির্বাচন কমিশন। এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসি দায়িত্ব নেওয়ার পর আদালতের আদেশে নিবন্ধন পায় বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি) ও বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি ( বিএমজিপি)। এ অবস্থায় এখন নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫০।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নিবন্ধন পেতে নতুন ৯৩টি দল আবেদন করে। এর মধ্যে ভুঁইফোড় দল হিসেবে পরিচিত দুটি দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টিকে নিবন্ধন দেয় তৎকালীন নির্বাচন কমিশন। তার আগে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে শর্ত পূরণ না করার কারণ দেখিয়ে আবেদন করা ৭৬টি দলের কোনোটিকেই নিবন্ধন দেয়নি ইসি। পরে ২০১৯ সালে ববি হাজ্জাজের দল এনডিএম আদালতের আদেশে নিবন্ধন পায়।

ইসিতে নিবন্ধিত এই দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ এবং তাদের জোটের শরিকসহ ২৭টি দল গত বছরের ৭ জানুয়ারি বিতর্কিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। এসব দলের বেশির ভাগের কার্যক্রম নেই বললেই চলে।

ইসির তালিকায় অনিবন্ধিত ৮৭টি দল

নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যেসব দল আবেদন করে নিবন্ধন পায়নি, সেসব দলের তালিকাও সংরক্ষণ করে রেখেছে। এ ধরনের অনিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৮৭। এ দলগুলোর মধ্যে রয়েছে নৈতিক সমাজ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল রিপাবলিকান পার্টি, মুসকিল লীগ, নতুন বাংলা, বঙ্গবন্ধু দুস্থ ও প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ, বাংলাদেশ ইত্যাদি পার্টি, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি), বৈরাবরী পার্টি, বাংলাদেশ বিদেশ প্রত্যাগত প্রবাসী ও নন-প্রবাসী কল্যাণ দল, গণরাজনৈতিক জোট (গর্জো), বাংলাদেশ বেকার সমাজ (বাবেস), নাকফুল বাংলাদেশ, মুক্ত রাজনৈতিক আন্দোলন, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি (বিএসপি), বাংলাদেশ জনতা পার্টি (বিজেপি), জনতার অধিকার পার্টি (পিআরপি), বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা লীগ, ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, জনস্বার্থে বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা কল্যাণ পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ড, গণ অধিকার পার্টি (পিআরপি) ও বাংলাদেশ গরিব পার্টির মতো প্রায় অপরিচিত ও বিচিত্র নামের দলগুলোও।

 

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!