খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ৪০তম ব্যাচের ক্যাডেট এসআইদের সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত
  সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে ৪ জন নিহত

৭ স্ত্রীকে নিয়ে রবিজুলের সুখের সংসার

গেজেট ডেস্ক

একটি দুটি নয় সাত সাতটি বউ নিয়ে সংসার করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন লিবিয়া ফেরত রবিজুল হক। এর মধ্যে গত তিন মাসেই তিনটি বিয়ে করেছেন তিনি। আলোচিত রবিজুলের বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ি মিয়াপাড়ায়।

রাষ্ট্রীয় আইন এবং ইসলামের দৃষ্টিতে একসঙ্গে সাত বউ নিয়ে সংসার করার সুযোগ না থাকলেও সবাইকে নিয়ে সুখে আছেন রবিজুল। এ কারণে এলাকার মানুষ বিষয়টিকে স্বাভাবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করছেন।

৩৮ বছর বয়সি রবিজুল হকের দাবি, মা-বাবার একমাত্র সন্তান হওয়ায় তার মা ছেলেকে সাতটি বিয়ে দেওয়ার মানত করেছিলেন। মায়ের সেই মানত রক্ষা করতেই তিনি সাতটি বিয়ে করেছেন।

দরিদ্র পরিবারের সন্তান রবিজুল হক। তার বাবার নাম আয়নাল হক। রবিজুল জানান, মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিনি বিয়ে করেন জেলার মিরপুর উপজেলার বালুচর গ্রামের কিশোরী রুবিনা খাতুনকে। বিয়ের দুবছরের মাথায় এই দম্পতির এক পুত্র সন্তান হয়। পরে বউ ও সন্তান বাড়ি রেখে লিবিয়া পাড়ি জমান রবিজুল হক। সেখানে টাইলসের কাজ দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। পরে লিবিয়াতে পরিচয় হয় কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার হেলেনা খাতুনের সঙ্গে। পরে তারা দুজন সম্পর্কে জড়ান এবং একপর্যায়ে তাদের বিয়ে হয়। তাৎক্ষণিক প্রথম স্ত্রীকে বিষয়টি না জানালেও পরে জানার পর তিনি এ বিয়ে মেনে নেন। এরপর প্রথম স্ত্রী রুবিনাকেও লিবিয়া নিয়ে যান রবিজুল। সেখানে দুই স্ত্রী এবং সন্তান নিয়ে ১২ বছর বাস করেন তিনি। এরপর দেশে ফিরে বাপের ভিটায় দুতলা বাড়ি নির্মাণ করেন। এর কিছু দিন পরেই মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জের নুরুন্নাহারের সঙ্গে। পরে নুরুন্নাহারকে বিয়ে করেন রবিজুল। তবে নুরুন্নাহারের অভিযোগ সম্পর্কের শুরুতে তিনি জানতেন রবিজুলের একজন স্ত্রী আছেন।

রবিজুলের দাবি মায়ের মানত রক্ষায় ধারাবাহিকভাবে তিনি চতুর্থ বিয়ে করেন গত বছর। তার চতুর্থ স্ত্রীর নাম স্বপ্না খাতুন, বাড়ি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে। এরপর গত তিন মাসে পরপর তিনটি বিয়ে করেছেন রবিজুল। তার পঞ্চম স্ত্রীর নাম বানু খাতুন, বাড়ি আলমডাঙ্গা উপজেলার ডম্বলপুর গ্রামে। ষষ্ঠ স্ত্রীর নাম রিতা আক্তার। তার বাড়ি জেলার মিরপুর উপজেলার পোড়াদাহ ইউনিয়নে।

আর মাসখানেক আগে বিয়ে করা সপ্তম স্ত্রী মিতা খাতুনের বাড়ি সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে।

দুতলা বাড়ির সাতটি কক্ষে বসবাস করেন সাত স্ত্রী। প্রত্যেক স্ত্রীর শয়নকক্ষ তিনি আসবাবপত্র দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছেন একইভাবে।

রবিজুল হক জানান, তিনি সাতজন নারীকে বিয়ে করলেও কারো সঙ্গে বৈষম্য করেন না। সব স্ত্রীর ঘরে আলাদা আলাদা রান্না হয়। বাজার করে তিনি প্রত্যেক স্ত্রীকে সমানভাগে ভাগ করে দেন।

রবিজুলের ছয় স্ত্রী নিজেদের সুখী মনে করলেও প্রথম স্ত্রী রুবিনা বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি বলে তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।

অন্য স্ত্রীরা জানান, তারা সবাই মিলে বোনের মতো একসঙ্গে সংসার করছেন। স্বামী হিসেবে তাদের কোনো চাহিদাই অপূর্ণ রাখেন না রবিজুল। বর্তমানে প্রথম স্ত্রীর ঘরে রবিজুলের দুই ছেলে, দ্বিতীয় স্ত্রীর এক ছেলে ও এক মেয়ে এবং তৃতীয় স্ত্রীর ঘরে জন্ম নিয়েছে এক কন্যা সন্তান। বড় স্ত্রীর ছেলের বর্তমান বয়স ২৩ বছর, তিনি ইতালি প্রবাসী। রবিজুলের এই বড় ছেলে বিবাহিত এবং ছেলের বউ বর্তমানে সন্তান সম্ভবা।

রবিজুলের মা এক বছর হলো মারা গেছেন। বাবা আয়নাল হক ছেলের সংসারে আছেন। আয়নাল হক জানান, ছেলে এতগুলো বিয়ে করেছে এটি নিয়ে তার কিছু বলার নেই।

মানত রক্ষার কারণে রবিজুল সাতটি বিয়ে করেছেন কি-না এ প্রশ্নের জবাবে আয়নাল হক জানান, তার এ ব্যাপারে জানা নেই। তবে ছেলের সাত বউ তার যত্ন নেন।

রবিজুলের প্রতিবেশী কারী মাহমুদ উজ্জ্বল জানান, ধর্মীয় দিক দিয়ে সাত বউ নিয়ে সংসার করার সুযোগ না থাকলেও রবিজুল সবাইকে নিয়ে সুখে সংসার করছেন- এ কারণে এলাকাবাসীর কোনো প্রশ্ন নেই।

পাটিকাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিজবি উদ জামান কানু বলেন, রবিজুল ছেলে হিসেবে অনেক ভালো; বলতে গেলে সাদা মনের মানুষ। সে সাতটি বিয়ে করে স্ত্রীদের নিয়ে ঘর-সংসার করছেন। বর্তমান যুগে এক স্ত্রীর সঙ্গেই অনেকেই ঠিকমত সংসার করতে পারে না। কিন্তু সাতটি স্ত্রী নিয়েও এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি রবিজুলের বিরুদ্ধে। স্ত্রীদের মধ্যে সম্পর্ক ভালো।

খুলনা গেজেট/ এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!