বয়স মাত্র ৩ মাস। এর মধ্যেই সাত বার বিক্রি করা হলো ছোট্ট শিশুকন্যাকে। এমনই ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে। শিশুটি অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানার বিক্রি হতে হতে অবশেষে মায়ের কোল ফিরে পেয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশের পশ্চিম গোদাবরী জেলার এক ব্যক্তির কাছ থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ডেপুটি পুলিশ সুপার মঙ্গলাগিরি জে রামবাবু জানান, মেদাবালিমি মনোজ গণলাইহপেটের দিনমজুর। তার তিন মেয়ে রয়েছে। মদ্যপানে আসক্ত মনোজের পক্ষে তিন কন্যার ভরণপোষণ দেওয়া অসম্ভব ছিল। তাই ছোট শিশুটিকে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
তেলেঙ্গানার নালগোন্ডা জেলার মেঘাওয়াথ গায়ত্রী নামে এক নারীর কাছে ৭০ হাজার টাকায় নাগলক্ষ্মীর মাধ্যমে শিশুটিকে বিক্রি করেন মনোজ। বিষয়টি না জেনেই শিশুটির ঠাকুমা নিখোঁজের অভিযোগ করেন। শিশুটিকে খুঁজে বের করতে পুলিশের বিশেষ দলও গঠন করা হয়। পরে পুলিশ জানতে পারে গায়ত্রী ওই শিশুকন্যাটিকে নালগোন্ডা জেলার পালকেড গ্রামের লাম্বাডি দেবলা তান্ডার ভুকিয়া নন্দু নামে এক নারীর কাছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।
শিশুটিকে ওই দামে কিনে ভুকিয়া নন্দু আবার হায়দরাবাদের দিলশুক নগরের এসকে নুরজাহানের কাছে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। নুরজাহান শিশুটিকে হায়দ্রাবাদের নারায়ণগুড়ার চিক্কাদপল্লীর বোম্মাদা উম্মাদেবী নামে এক নারীর কাছে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।
আবার বোম্মাদা উমাদেবী শিশুটিকে ২ লাখ টাকায় বিক্রি করেন বিজয়ওয়াড়া বেঞ্জ সার্কেলের পাদালা শ্রাবণীর কাছে। পাদালা শ্রাবণী শিশুকন্যাটিকে গোল্লাপুডির গরিকামুক্কু বিজয়লক্ষ্মীর কাছে ২ লাখ ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। সব শেষ শিশুকন্যাটিকে অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরী জেলার এলুরুর ভারে রমেশের কাছে আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, শিশু বিক্রির সঙ্গে জড়িত সবাই কোনো সংগঠিত শিশু পাচারচক্রের অংশ ছিল না। তারা কেবল আরও বেশি অর্থ উপার্জনের জন্যই এমনটা করেছিল, বলেন ডিএসপি রামবাবু।
তিনি আরও জানান, মেয়েটির বাবাসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই