খুলনা, বাংলাদেশ | ২৪ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৯ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  আরও এক মামলায় খালাস পেলেন ফখরুল-রিজভী-আমির খসরু
  ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে রেণু হত্যা : একজনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন
  ইউনিয়ন ব্যাংকের এমডি মোকাম্মেল ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব জব্দ
  সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে নতুন নিয়োগ পাওয়া ২৩ বিচারপতি শপথ নিয়েছেন
  এনআইডির তথ্য ফাঁসের ঘটনায় সজীব ওয়াজেদ জয় ও জুনাইদ আহমেদ পলকসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে কাফরুল থানায় মামলা
করোনার লোকসান পুষিয়ে নেওয়ার আশা

৩ দিবস ঘিরে স্বপ্ন দেখছেন ফুল ব্যবসায়ীরা

পাইকগাছা প্রতিনিধি

পহেলা ফাল্গুন, ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবসকে ঘিরে যেন নবরূপে সেজেছে খুলনার পাইকগাছার বিভিন্ন এলাকার ফুলের দোকানগুলো। যদিও নানা সংকটে উপজেলা সদর থেকে শুরু করে বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে ফুলের দোকান মিলেছে মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি। তবুও আগামী ৩টি দিবসকে সামনে রেখে দোকান গুলোতে যেন পুনরায় প্রাণ ফিরেছে।

একাধিক ফুলের দোকানিরা জানান, এ তিনটি দিবস যতই এগিয়ে আসবে ফুলের দাম ততই বৃদ্ধি পাবে। তারা আশা করছেন গেল দু বছরে করোনার প্রাদুর্ভাবে যে বড় ধরণের ক্ষতির শিকার হয়েছেন তার কিছুটা অন্তত এ বছর বিভিন্ন দিবসে ফুল বিক্রি করে পুষিয়ে উঠতে পারবেন।

আর আগামী সোমবার (১৪ ফেব্রয়ারি) বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ভালোবাসা দিবসের প্রধান উপহার ফুল। আর সে ফুলের মধ্যে সবার পছন্দ গোলাপ। তাও আবার লাল রঙের। এ দিনটিতে তরুণীরা সাজবে ক্রাউন পরে। প্রত্যেকটি ক্রাউনে ৫ থেকে ৬টি ফুল থাকবে। এ ফুলের মধ্যে প্রধানত থাকবে গোলাপ।

বাংলাদেশের ন্যায় সারা বিশ্বে ২১ ফেব্রুয়ারি পালিত হবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ওই দিন শহীদ বেদীতে বিভিন্ন ফুল দিয়ে মহান ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। আর তাই ৩ দিবসে ফুলের চাহিদা মেটাতে উপজেলার বিভিন্ন ফুলের দোকান গুলোতে মজুত করা হয়েছে কয়েক হাজার পিস লাল গোলাপ সহ বিভিন্ন ধরণের ফুল।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ভালোবাসা দিবসে চাহিদা ছিল হলুদ গোলাপের। ২০১৮ সালে চাহিদা হয় সাদা গোলাপ। এরপর থেকেই চাহিদা লাল গোলাপের।

কৃষ্ণচূড়া, গোলাপ, চন্দ্রমলিঙ্কা, কাঠ গোলাপ, করবী, কলমী লতা, কলাবতি, কেয়া, গন্ধরাজ, চম্পা/চাপা, চামেলি, চেরি, জুই, জেসমিন, টিউলিপ, ডালিয়া, দোপাটি, দোলনচাপা, নয়নতারা, পদ্ম, পপি, পলাশ, বকুল, বেলী, মাধবীলতা, মালতী, মোরগ, মৌসন্ধ্যা, রঙ্গন, রজনীগন্ধা, লিলি, শাপলা, শিউলি, শেফালী, শ্বেত চন্দন, সন্ধ্যা মালতী, সূর্যমুখী ও হাসনাহেনা ফুল খুবই জনপ্রিয়।

উপজেলার একাধিক ফুলের দোকানিরা জানান, গোলাপ প্রতি পিস ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা এবং ক্রাউন ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হবে। দাম বেশির ব্যাপারে অভিযোগ করে তারা জানান, যশোরের গদখালী থেকে একশ’ পিস গোলাপ এলে তার অর্ধেক নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণেই দাম বাড়াতে হয়। গদখালীর ব্যাবসায়ীরা সিন্ডিকেট তৈরী করে বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে ফুলের দাম বাড়িয়ে দেয় বলেও দাবি করেন তারা।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির তথ্যমতে, যশোরে ফুলচাষী রয়েছেন প্রায় ছয় হাজার। তারা অন্তত ১৫০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার ফুল চাষ করেন।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির একাংশের সভাপতি আব্দুর রহিম জানান, করোনাকালীন সরকারের বিধিনিষেধে তারা উদ্বিগ্ন ছিলেন। কিন্তু অবশেষে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ফুলের বাজার। আগামী তিনটি দিবসকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে মানুষ ফুল কিনতে শুরু করেছে। আর বিভিন্ন কারণে এবার ফেব্রুয়ারিতে ফুল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে তিন দিবসে অন্তত ২০-২৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলেও ধারণা করছেন তিনি। তবে বৈরী আবহাওয়া ও অসময়ের বৃষ্টিতে অনেক ফুল নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে সব ধরনের ফুলের দাম দ্বিগুণ। পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবস যত ঘনিয়ে আসবে, ফুলের দামও তত বাড়বে বলেও জানান তিনি।

উপজেলার একাধিক ফুল বিক্রেতারা জানান, ফেব্রুয়ারি মাস শুরু হলেই বিভিন্ন দিবসকে ঘিরে ফুলের বেচাকেনা ভালোই হয়। তবে করোনার প্রাদুর্ভাবে গত দু’ বছর কোন রকম ফুল বিক্রয় হয়নি। এতে করে ব্যবসায়ীদের বড় অঙ্কের লোকসান গুনতে হয়েছে। সে ধকল কাটিয়ে ওঠা এখনও সম্ভব হয়নি। যার ফলে একাধিক ব্যবসায়ীরা পেশা বদলাতে বাধ্য হয়েছেন বলেও জানান তারা। পাশাপাশি সর্বত্র কৃত্রিম ফুলের আমদানি বেড়ে যাওয়াতেও প্রকৃত ফুল ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বলেও দাবি তাদের।

তবে গেল দু’ বছর বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ১লা ফাল্গুন, বাংলা নববর্ষ, বিশ্ব ভালবাসা দিবস, ঈদ-পুজায় কাঙ্খিত বেচাকেনা না হলেও চলতি ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তিন দিবসকে সামনে রেখে সারা বছর বিভিন্ন দিবসে ফুল বিক্রি করে বিগত দু’বছরের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে উঠতে পারবেন এমনটাই আশা করছেন তারা।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!