শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সেরা আটের সমীকরণ সহজ করেছিল বাংলাদেশ। এবার অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিশ্চিত হবে তাদের। এমনকি অজিদের বিপক্ষে কম ব্যবধানে হারলেও টাইগারদের সামনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পথ খোলা থাকবে। এমন ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাটিং করছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ- ৩০২/৬ (৪৮.৫ ওভার)
ভারত বিশ্বকাপে একও রকম রান বন্যাই হয়েছে! অথচ সেখানে নির্বাক দর্শক ছিল বাংলাদেশ! তবে আসরের শেষ ম্যাচে এসে অন্তত তিনশ পেরিয়েছে টাইগাররা।
রানের গতি বাড়াতে গিয়ে ফিরলেন মুশফিক
উইকেটে এসে মানিয়ে নিতে খানিকটা সময় লেগেছে মুশফিকের। তবে সময়ের সঙ্গে সাবলীল হয়েছেন। জাম্পাকে স্লগ সুইপে ছক্কাও হাঁকিয়েছিলেন। তবে রানের গতি বাড়াতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনলেন। এগিয়ে এসে মিড উইকেটের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন প্যাট কামিন্সের হাতে। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২৪ বলে ২১ রান।
হৃদয়ের ফিফটি
আসরটা খুব একটা ভালো যায়নি হৃদয়ের। প্রত্যাশার সিকি ভাগও পূরণ করতে পারেননি এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। তবে শেষ ম্যাচে এসে কিছুটা হলেও নিজের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করলেন তিনি। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ৬১ বলে স্পর্শ করলেন হাফ সেঞ্চুরি।
এবার রান আউট মাহমুদউল্লাহ
শান্তর পর আরন আউটে কাটা পড়লেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তিনি। ২৮ বলে ইনিংসে ১ চারের সঙ্গে ছক্কা হাঁকিয়েছেন ৩টি। ৩৬তম ওভারে স্লো পুশ করে দ্রুত রান নিতে গিয়ে আউট হয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৩২ রান।
আক্ষেপ নিয়ে ফিরলেন শান্ত
তৃতীয় উইকেটে তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে শান্তর রসায়নটা বেশ ভালোই জমেছিল। দুই প্রান্তেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দলের রানের চাকাও দ্রুত ঘুরছিল। তবে এই সুখ বেশিক্ষণ সইলো না! ২৮তম ওভারের পঞ্চম বলটি লেগ স্টাম্পের ওপর করেছিলেন অ্যাবট, সেখানে জায়গা করে পেছনের পায়ে ভর দিয়ে স্কয়ার লেগে ঠেলে দেন শান্ত— এক রান অনায়াসে নেওয়ার পর খানিকটা ভেবে দ্বিতীয় রানের জন্য দৌড় শুরু করেন, কিন্তু সময়মতো ক্রিজে পৌঁছাতে পারেননি। তাতে হাফ সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফিরতে হয়েছে শান্তকে। এর আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৪৫ রান।
উইকেট বিলিয়ে দিলেন লিটন
আরো একবার নিজের উইকেট বিলিয়ে দিলেন লিটন। সবলীল ব্যাটিংয়ে ফিফটি পথে এগোচ্ছিলেন। কিন্তু ১৭তম ওভারে হঠাৎ করেই অ্যাডাম জাম্পাকে উড়িয়ে মারতে গেলেন। একজন সেট ব্যাটার হয়ে এভাবে তেড়ে-ফুড়ে খেলতে যাওয়াটা রীতিমতো আত্মহত্যার শামিল। সেটাই করলেন লিটন। ঠিকমতো টাইমিং না হওয়ার লং অনে ল্যাবুশেনের হাতে ধরা পড়েন। সাজঘরে ফেরার আগে লিটনের ব্যাট থেকে এসেছে ৪৫ বলে ৩৬ রান।
১৫.১ ওভারে বাংলাদেশের ১০০
তামিমের বিদায় রান রেটে কোনো প্রভাব ফেলেনি। কারণ উইকেটে এসেই শট খেলছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। রানে-বলে খেলে লিটনকে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সাবলীল ব্যাটিংয়ে অজিদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করছে বাংলাদেশ। প্রথম ৫০ রান করতে লেগেছিল ৫০ বল, পরের ৫০ রান এসেছে ৪২ বলে, সবমিলিয়ে ৯২ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছে বাংলাদেশ।
থিতু হয়েও ফিরলেন তামিম
৩৬ রান করে তামিম ফেরায় ভাঙে ৭৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলটি শর্ট লেন্থে করেছিলেন শন অ্যাবট। শরীর বরাবর আসা বাউন্সার লাফিয়ে উঠে ডিফেন্স করতে যান তামিম, ব্যাটের উপরের দিকে লেগে ফিরতি ক্যাচ যায় বোলারের কাছে। তাতে তামিমের সম্ভাবনাময় ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে সফট ডিসমিসালে
উড়ন্ত শুরু বাংলাদেশের
পুরো আসরেই ব্যর্থ ছিল বাংলাদেশি টপ অর্ডার। বিশেষ করে ওপেনিং। তবে আজ দুর্দান্ত শুরু করেন দুই ওপেনার তানজিদ তামিম ও লিটন দাস। শুরুতে দেখে-শুনে খেললেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তারা। প্রথম ৫০ রান তুলতে তারা খরচ করেছেন ৫০ বল। দুই ওপেনারের দারুণ ব্যাটিংয়ে প্রথম পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬২ রান তুলেছে বাংলাদেশ।
তিন পরিবর্তন নিয়ে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ
বাংলাদেশের একাদশে আজ তিনটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। স্পিন নির্ভর দল নিয়ে মাঠে নামছে টাইগাররা। তিন স্পিনারের সঙ্গে রয়েছেন দুই পেসার। অধিনায়ক সাকিব চোটের কারণে আগেই ছিটকে গেছেন। তার জায়গায় একাদশে ফিরেছেন শেখ মেহেদি। এছাড়া আগের ম্যাচ খেলা শরীফুল ইসলামের পরিবর্তে নাসুম আহমেদ এবং পেসার তানজিম হাসান সাকিবের পরিবর্তে মুস্তাফিজুর রহমানকে নেওয়া হয়েছে।
একাদশে দুটি পরিবর্তন এনেছে অস্ট্রেলিয়া। আগের ম্যাচে অতিমানবীয় ডাবল সেঞ্চুরি করা গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ও মিচেল স্টার্ককে বিশ্রামে রাখা হয়েছে। তাদের পরিবর্তে একাদশে ফিরেছেন স্টিভ স্মিথ ও শন অ্যাবট।
বাংলাদেশ একাদশ : লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাওহিদ হৃদয়, শেখ মেহেদি হাসান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান।
অস্ট্রেলিয়া একাদশ : ডেভিড ওয়ার্নার, ট্র্যাভিস হেড, মিচেল মার্শ, স্টিভ স্মিথ, মার্নাস লাবুশেন, জস ইংলিশ, মার্কাস স্টয়নিস, শন অ্যাবট, প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), অ্যাডাম জাম্পা ও জশ হ্যাজলউড।
খুলনা গেজেট/এনএম