প্রায় ২৯ ঘণ্টা পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ সচল করে দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ সচল করা হয়। এর আগে রোববার রাত সাড়ে সাতটার দিকে বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী উমর ফারুক বলেন, উপাচার্যের বাসভবনে বিদ্যুতের যে লাইনটি গিয়েছে, সেই একই লাইন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০/৩৫ জন কর্মচারীর বাসায়ও বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। উপাচার্য ভবনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় ওই কর্মচারীরাও বিদ্যুতহীন হয়ে পড়েছিলেন।
তিনি বলেন, বাসায় রোগীরা সমস্যায় পড়েছেন জানিয়ে কর্মচারীরা আমাদের কাছে বিদ্যুৎ সংযোগ সচল করে দেওয়ার অনুরোধ করেন। তাদের অনুরোধে আজ রাতে বিদ্যুৎ সংযোগ সচল করে দিয়েছি।
গত কয়েকদিন ধরে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলন চলছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। আন্দোলনের অংশ হিসেবেই উপাচার্যের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
উপাচার্যের বাসভবনে সোমবার শিক্ষকরা খাবার নিয়ে প্রবেশ করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, প্রয়োজনে তারাই খাবার সরবরাহ করবেন।
শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত ১৩ জানুয়ারি। সেদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েকশ ছাত্রী। গত শনিবার ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
পরদিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও হল ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও হল ছাড়ার ঘোষণা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, খুলনা ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ।