খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ পৌষ, ১৪৩১ | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  নিখোঁজের ৪২ ঘণ্টা পর কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী নদী থেকে দুই পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার
  ফায়ার সার্ভিস কর্মীকে চাপা দেওয়া ট্রাকচালক আটক
  সচিবালয়ের আগুন সোয়া ৬ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিস

২৮ অক্টোবরের গণহত্যা পূর্বপরিকল্পিত : ডা. শফিকুর

গেজেট ডেস্ক

২৮ অক্টোবরের গণহত্যা পূর্বপরিকল্পিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

রোববার (২৭ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

বিবৃতিতে জামায়াতের আমির বলেন, ২০০৬ সালে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করার উদ্দেশে ২০০৬ সালে চার দলীয় জোট সরকারের মেয়াদ শেষে ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সারা দেশে লগি-বৈঠার তাণ্ডব সৃষ্টি করে। ওইদিন বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে জনসভার আয়োজন করা হয়।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সকাল থেকে জনসভার স্টেজ নির্মাণের কাজ চলছিল। হঠাৎ করে ১৪ দলীয় জোটের সন্ত্রাসীরা গোটা পল্টন এলাকায় জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের ওপর লগি-বৈঠা, লোহার রড ও বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হামলা চালাতে শুরু করে। জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য শুরু হলে চারদিক থেকে ১৪ দলের সন্ত্রাসীরা গুলি করতে করতে জামায়াতের সমাবেশের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। সমাবেশের প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন আমিরে জামায়াত ও শিল্পমন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী। জনসভায় উপস্থিত জনগণ এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর আঘাত করাই ছিল তাদের আসল লক্ষ্য। ওইদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পল্টন এলাকা লগি-বৈঠাধারীদের সন্ত্রাসী তাণ্ডবে এক রক্তাক্ত প্রান্তরে পরিণত হয়। তাদের হামলায় ঢাকাসহ সারা দেশে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন এবং আহত হন সহস্রাধিক নেতাকর্মী।

তিনি বলেন, শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশে ১৪ দলের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে গোটা দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা মানুষ হত্যা করে মৃত মানুষের লাশের ওপর নৃত্য করে বর্বরভাবে আনন্দ-উল্লাস প্রকাশ করে যা সারা বিশ্বের মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। ওই ঘটনা ছিল পূর্বপরিকল্পিত মানবতাবিরোধী গণহত্যা। জামায়াতের আমির বলেন, ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠাধারীদের গণহত্যা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির ঘটনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। ২৮ অক্টোবরের পথ ধরেই তারা দেশে সন্ত্রাসী রাজনীতি শুরু করেছিল তা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। তখন থেকে দেশকে রাজনীতিশূন্য করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার, বাকস্বাধীনতা, ভোটাধিকারসহ মানুষের সকল অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, ২৮ অক্টোবরের নারকীয় গণহত্যার সাথে জড়িত খুনিদের বিচারের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু সরকার সেই মামলা প্রত্যাহার করে বিচারের পথ রুদ্ধ করে খুনিদের রক্ষা করে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ তীব্র গণআন্দোলনের মুখে দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়। আমরা বিশ্বাস করি এই পট-পরিবর্তনের ফলে দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং অবিলম্বে ২৮ অক্টোবরের গণহত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করা হবে। বাংলাদেশের জনগণের দাবি হচ্ছে অবিলম্বে ২৮ অক্টোবরের খুনিদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা পুনরায় সচল করে খুনিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ২৮ অক্টোবরে যারা নিহত হয়েছেন তাদের স্মরণে আলোচনা এবং তাদের শাহাদাত কবুলের জন্য মহান আল্লাহতাআলার কাছে দোয়া করার জন্য আমি জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরের জনশক্তি ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে যারা আহত ও পঙ্গু হয়ে এখনো মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তাদের পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!