খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  কুমিল্লায় ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশার ৫ যাত্রী নিহত
  মানবতাবিরোধী অপরাধ : চিফ প্রসিকিউটর দেশে না থাকায় ফখরুজ্জামান ও সাত্তারের জামিন শুনানি ২ সপ্তাহ পেছাল আপিল বিভাগ
  আজ থেকে জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ শুরু
  অ্যান্টিগা টেস্ট: শেষ দিনে বাংলাদেশের দরকার ২২৫ রান, হাতে ৩ উইকেট
সাতক্ষীরা সিটি কলেজ

১২ শিক্ষকের তথ্য জালিয়াতির তদন্ত সম্পন্ন, অধ্যক্ষের ভুল স্বীকার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা সিটি কলেজের অনার্স শাখায় নিয়োগপ্রাপ্ত ১০ জন ও কৃষি ডিপ্লোমা শাখায় নিয়োগপ্রাপ্ত ১২ জন শিক্ষকের তথ্য জালিয়াতি করে তৃতীয় শিক্ষক হিসেবে এমপিও ভুক্তির জন্য তালিকা মাউশিতে পাঠানোর অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।

মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মাউশির মহাপরিচালকের নির্দেশে খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একটি তদন্তকারি দল সিটি কলেজে এসে সরেজমিনে এ তদন্ত করেন। তদন্তকালে অধ্যক্ষ আবু সাঈদ নিজের কৃতকর্মের জন্য ভুল স্বীকার করেছেন।

জানা যায়, সাতক্ষীরা সিটি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের বঞ্চিত ও প্রতারণার শিকার শিক্ষক বিধান চন্দ্র দাশ ও তার স্ত্রী চম্পা রানী মন্ডলের মাউশি’র মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো পৃথক দু’টি অভিযোগ করেন।

এতে বলা হয়- অধ্যক্ষ মোঃ আবু সাঈদ ২০১৫ সালের ২৬ জানুয়ারি সাতক্ষীরা সিটি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের পর পরিচালনা পর্ষদের তৎকালিন সভাপতি, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ জাহিদুর রহমান, বর্তমান জেলা শিক্ষা অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন, খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের সমসাময়িক কর্তব্যরত কর্মকর্তার যোগাসাজসে ২০১৫ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০১৯ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষকদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, নিয়োগ ও যোগদান সংক্রান্ত তথ্য জালিয়াতি, তথ্য গোপন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকুরী বিধি ,শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা, ২০১৮ সালের ২৮ আগষ্ট ও ২০১৯ সালের ১২ মার্চ জারিকৃত পরিপত্র উপেক্ষা করে উৎকোচ নিয়ে ডিগ্রী স্তরের ২য় ও ৩য় শিক্ষক হিসেবে ২১ জন শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করেন। এসময় আরো ১২জনের তথ্য জালিয়াতি করে এমপিও ভুক্তির জন্য মাউশিতে তথ্য পাঠান অধ্যক্ষ আবু সাঈদ।

অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়েছে যে, উপরোক্ত তথ্য জালিয়াতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে তদন্তে আসেন উপসহকারি পরিচালক প্রবীর কুমার দাশ। যার তদন্ত এখনও চলমান আছে। একই বিষয়ে গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মাউশির নির্দেশে মাধ্যমিক ও উচচ শিক্ষা অধিদপ্তরের খূলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালকসহ তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত দল তদন্ত করেন এবং তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

পরবর্তীতে সিটি কলেজের অনার্স শাখায় নিয়োগপ্রাপ্ত ১০ জন ও কৃষি ডিপ্লোমা শাখায় নিয়োগপ্রাপ্ত ২ জন শিক্ষকের তথ্য জালিয়াতি করে তৃতীয় শিক্ষক হিসেবে এমপিও ভুক্তির জন্য তালিকা মাউশিতে পাঠানোর অভিযোগের তদন্ত করতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় সিটি কলেজে আসেন মাউশির খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান। এ সময় তিনি মাউশিতে এমপিও ভুক্তির জন্য তালিকাভুক্ত ১২জন শিক্ষকের কাছে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে ১০ জন শিক্ষক বলেন, তারা অনার্স শাখায় নিয়োগ। অপর দু’জন বলেন তারা কৃষি ডিপ্লোমায় নিয়োগ। তারা কখনো ডিগ্রী স্তরের শিক্ষক ছিলেন না। কে বা কারা তথ্য জালিয়াতি করে মাউশিতে এমপিও ভুক্তির জন্য তালিকা পাঠিয়েছেন তা তাদের জানা নেই। তদন্তকারি কর্মকর্তার বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ আবু সাঈদ বলেন, রাজনৈতিক চাপে বাধ্য হয়ে তাকে অনিয়ম ও দূর্ণতির আশ্রয় নিয়ে তালিকা পাঠাতে হয়েছে। এজন্য তিনি ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সিটি কলেজের অধ্যক্ষ আবু সাঈদের সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সবই তো শুনেছেন তদন্তকারি কর্মকর্তার কাছে। আমি আর কি বলব।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারি উপপরিচালক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রাজনৈতিক চাপে পড়ে অনিয়ম ও দূর্নীতির মাধ্যমে ১২ জন শিক্ষককে এমপিও ভুক্তির জন্য নাম পাঠিয়ে তিনি ভুল করেছেন মর্মে তার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন অধ্যক্ষ আবু সাঈদ।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!