ঠিক ১১ বছর আগে ২০১০ সালে ঢাকার আসাদ গেটে বাস চাপায় মারা যান মো. আবু বকর শেখ। কিশোরী বয়সে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামীকে হারান আকলিমা বেগম। মাত্র দেড় বছরের ছেলে সাকিবকে আঁকড়ে পড়ে ছিলেন স্বামীর ভিটায়। অভাব অনটনেও স্বামীর স্বপ্ন পূরণ করতে ছেলেকে কোরআনের হাফেজ বানাতে মাদ্রাসায় ভর্তি করেছিলেন। মাত্র ১৩ বছর বয়সে আট পারা কোরআনের হাফেজ হয়েছিলেন। কিন্তু গত শনিবার রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় তারও প্রাণ যায়।
বাগেরহাটের ফকিরহাটে গত শনিবার রাতে থ্রি-হুইলার সিএনজি ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে চার মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নিহত হয়। তার একজন উপজেলার পিলজং গ্রামের ১৩ বছরের কিশোর শেখ মো. আব্দুল্লাহ আল সাকিব। সাকিবের বাবা মো. আবু বকর শেখ ২০১০ সালে ঢাকার আসাদ গেটে বাস চাপায় মারা যান। স্বামীর পর ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় বোনকে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছিলেন সাকিবের বড় মামা মো. ইসমাইল ফরাজী।
আকলিমা বেগম বলেন, সন্তানের বিনিময়ে কোনো ক্ষতিপুরণ তিনি চান না। শুধু সড়ক নিরাপদ হোক। পিলজং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোড়ল জাহিদুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার পর সান্ত্বনা দিতে গিয়ে নিজেই বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা বেগম বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে সড়ক যেন নিরাপদ হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
স্বামী ও সন্তান হারানোর বেদনায় এখন কাতর আকলিমা বেগম। পাগলের মতো বারবার প্রশ্ন করেন, কেন রাস্তায় গেলে জীবন ঝরে যায়? কেনইবা সন্তানের আগে তিনি মারা গেলেন না!
খুলনা গেজেট/ এস আই