খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  অ্যান্টিগা টেস্ট: প্রথম দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তুলল ২৫০, বাংলাদেশ পেল ৫ উইকেট

১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জমায় অহেতুক প্রশ্ন করা যাবে না

গেজেট ডেস্ক

পঞ্চাশ হাজার টাকার বেশি জমার ক্ষেত্রেও অর্থের উৎস জানতে চাইছে অনেক ব্যাংক। ছোট অঙ্কের জমা দিতে গিয়ে নানা প্রশ্নের মুখে পড়ে কেউ কেউ ব্যাংকে টাকা রাখায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। এমন বাস্তবতায় এখন থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জমায় বাড়তি প্রশ্ন না করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রোববার অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। সভা থেকে অনিয়ম জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ বিতরণে কোনো চাপ আসলে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানাতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় চার ডেপুটি গভর্নর এবং ব্যাংকগুলোর এমডিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবির চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আর এফ হোসেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক ব্রিফ করেন।

সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, সভায় গভর্নর কিছু ইতিবাচক খবর দিয়েছেন। বাণিজ্য ঘাটতি অনেক কমেছে। মাস দুয়েকের মধ্যে পরিস্থিতি আরও সহনীয় হবে। তারল্য নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অনেক কথা হচ্ছে। প্রথম দিকে টাকা উত্তোলন কিছু বাড়লেও এখন আবার জমার হার বাড়তে শুরু করেছে। এ নিয়ে কোনো অস্থিতিশীলতা নেই।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ব্যক্তিগত ও গাড়ির ঋণে ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদহার নেওয়ার বিষয়ে মাস খানেক আগে মৌখিকভাবে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ব্যাংক খাতের অনিয়মের তদন্ত জোরদার হয়েছে। কোনো অনিয়ম ধরা পড়লে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থা নেবে।

মেজবাউল হক সাংবাদিকদের জানান, রমজানে প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ ঠিক রাখতে আমদানি যেন কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে এলসি মার্জিনের শর্ত শিথিল বা অন্য কোনো সহায়তা প্রয়োজন হলে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় ঋণ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে চলতি অর্থবছর ব্যাংকগুলোর জন্য ৩৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। প্রতিটি ব্যাংককে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার আলোকে ঋণ বিতরণ করতে বলা হয়েছে। কোনো ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে না পারলে অনর্জিত অংশ অন্য ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।

তিনি বলেন, ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা জমার মানে সেটা পূর্ণাঙ্গ কেওয়াইসি আছে। ফলে যে কোনো পরিমাণের টাকা জমার ক্ষেত্রে অনেক সময় গ্রাহক ভোগান্তিতে পড়েন। এ রকম বাস্তবতায় ব্যাংক হিসাবে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জমার ক্ষেত্রে নূ্যনতম প্রশ্ন করতে বলা হয়েছে। এর বেশি অঙ্কের জমায় ব্যাংক উৎসসহ বিভিন্ন প্রশ্ন করবে। এ ছাড়া অনেক ব্যাংকের সেবা বিশেষ করে অ্যাপভিত্তিক সেবা প্রতিবন্ধীদের ব্যবহারের উপযুক্ত নয়। তাঁদের জন্য ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের এ মুখপাত্র বলেন, ইসলামী ব্যাংক দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক। এই ব্যাংকের আমানত সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ রয়েছে। কোনো ধরনের অপপ্রচার বা গুজবে বিভ্রান্ত হওয়া ঠিক হবে না। ব্যাংকটির আমানত ফেরতে নিশ্চয়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক এই ব্যাংকের বিষয়ে তদন্ত করছে। তদন্ত শেষ হলে হয়তো বলা যাবে, আসলে কী ঘটেছে। তবে দেশের ভালো ব্যাংকটি নিয়ে কোনোভাবেই বিভ্রান্ত হওয়া ঠিক হবে না। তিনি বলেন, যে কোনো ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন ও জমা একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। টাকা উত্তোলন হবে, জমা হবে এটাই স্বাভাবিক।

বৈঠকে জানানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক দুটি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সনদ যাচাই করতে গিয়ে জাল সনদে চাকরির তথ্য পেয়েছে। তাই আগামী ৬ মাসের মধ্যে সবার সনদ যাচাই করে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানাতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, করোনা-পরবর্তী অর্থনীতিতে বাড়তি চাহিদা এবং উচ্চ আমদানি দায় মেটাতে গিয়ে ডলার বিক্রির ফলে উদ্বৃত্ত তারল্য কমেছে। সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে অতিরিক্ত তারল্য কমে ১ লাখ ৭০ হাজার ৩২৫ কোটি টাকায় নেমেছে। গত বছরের জুনে যা ছিল ২ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আর চলতি বছরের জুন শেষে ২ লাখ ৩ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা। এতে আন্তঃব্যাংক কলমানির সুদহার বেড়েছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে সব পণ্যের দর বৃদ্ধি এবং দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য পরপর দুইবার বাড়ার ফলে গত কয়েক মাস মূল্যস্ম্ফীতি অনেকটা লাগামহীন হয়ে পড়েছে। ফলে চলতি অর্থবছরের জুনে সরকারের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী গড় মূল্যস্ম্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা কষ্টসাধ্য হবে। সামগ্রিক পরিস্থিতির উন্নয়নে কৃষি খাতের পাশাপাশি সিএমএসএমই খাতে ঋণ বিতরণ বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!