রাজধানীর কুড়িল ফ্লাইওভারে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মায়শা মমতাজ মিম (২২) শুক্রবার ছুটির দিনের সকালে ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে স্কুটি নিয়ে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। ফ্লাইওভারের মাঝে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক শর্মি হোসেন মিমের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে ফেসবুকে লিখেছেন, সকাল ৯.৩০য় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সির ডাক্তারের ফোন পেলাম। ইংরেজি বিভাগের আন্ডারগ্রাজুয়েটের ছাত্রী মায়শা মমতাজ মিম কুড়িলের সামনে বাইক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে। ডাক্তার জানালেন হাসপাতালে তার লাশ নিয়ে গিয়েছেন একজন গরিব রাজমিস্ত্রি। আহা, কত গাড়ি, বাইক, বাস হয়তো পাশ দিয়েই চলে গেছে। কারো সময় হয়নি থামার।
তিনি আরও লিখেছেন, হাসপাতালে আনার পর তার ব্যাগে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড পাওয়া গেছে। আমার নম্বর ডাক্তার পেয়েছেন আমার আরেক ছাত্রীর কাছ থেকে। জিজ্ঞাসা করলেন মেয়েটার বাবা-মা’র সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব কিনা। আমি সঙ্গে সঙ্গে প্রক্টর অফিসকে জানালাম। উনারাও খবর পেয়েছেন। তারা বাবা এখন কুর্মিটোলার পথে। মেয়ের মৃত্যুসংবাদ এখনো জানানো হয়নি তাকে। কি নিদারুণ বিস্ময় অপেক্ষা করছে ভদ্রলোকের জন্য!
শর্মী হোসাইন ওই পোস্টে লিখেছেন, আজ আমাদের বিভাগে একটা ইভেন্টে আসার জন্য মেয়েটা রওনা হয়েছিল। দুই বছর অনলাইনে ক্লাস করা বাচ্চা মেয়েটা হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ের এইসব এক্সট্রাকারিকুলার অনুষ্ঠানে খুব আনন্দ নিয়ে যুক্ত হয়েছিল– কিছু কাজ শিখবে, প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে একটু আড্ডা দেবে, রাতে কিছু ছবি পোষ্ট করবে। এইই তো। শেষ হয়ে গেল সব।
তিনি লিখেন, শহরের সড়কগুলো কেন এরকম তরুণখেকো হয়ে উঠলো জানেন? কেন রাস্তায় স্পিড লিমিট দিতে পারিনি আমরা? কেন একটা নূন্যতম নিরাপদ সড়ক বানাতে পারিনি আমরা? নিজেকে এই প্রশ্ন গুলো করেন প্লিজ।
ওই পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, মনে পড়ছে ২০১৮ সালে এই কুড়িলেই যে ছাত্রীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নিরাপদ সড়কের জন্য ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেই মেয়েটির নামও ছিল মিম, তার বাবা ছিলেন একজন বাসচালক।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই হোটেল রেডিসনের সামনে অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীদের চাপা দেয় জাবালে নূর (ঢাকা মেট্রো ব-১১৯২৯৭) পরিবহনের একটি বাস। এতে চাপায় ঘটনাস্থলেই শিক্ষার্থী দিয়া আক্তার মিম ও আবদুল করিম নিহত এবং ১২ জন গুরুতর আহত হন।