হেফাজত ইসলামের আমীর বাংলাদেশ কওমী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান শাইখুল হাদিস আল্লামা শাহ আহমদ শফীর জানাজায় লাখো মানুষের ঢল নামে। শনিবার জোহরের নামাজের পর বেলা দু’টায় আল-জামিয়াতুল আহালিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
মাদ্রাসার প্রান্তর ছাড়িয়ে জানাজার সারি দীর্ঘ হয় চট্টগ্রাম- হাটহাজারী খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি মহাসড়কের প্রায় চার কিলোমিটার উত্তর দক্ষিণে। এতে প্রায় আট লক্ষের অধিক মানুষ জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। হাটহাজারী মাদ্রাসার ময়দান, ঈদগা ময়দান, বাজার সড়ক, বাস স্টেশন জিরো পয়েন্ট মোড়, কলেজ গেইট, ফায়ার সার্ভিস মোড়, সরকারি মেডিকেল গেটসহ খাগড়াছড়ি রাঙ্গামাটি মহাসড়কের ওপর, বিভিন্ন বিল্ডিং এর ছাদে দাঁড়িয়ে নামাজে জানাজায় মানুষ শরিক হন।
দেশ-বিদেশের ও জেলার শীর্ষ আলেমরা ছাড়াও মাদ্রাসার ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ এতে যোগ দেন। জানাজায় ইমামতি করেন আল্লামা শাহ আহমদ শফীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ দা: বা:। অন্যদের মধ্যে যোগ দেন চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনের এমপি সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি।
জানাজাকে ঘিরে পুরো হাটহাজারীতে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব, বিজিবি মোতায়েন করা হয়। মাঠে ছিলেন সাতজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
শনিবার সকাল সাড়ে ছয়টা থেকে চট্টগ্রাম-হাটহাজারী রাঙ্গামাটি খাগড়াছড়ি মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
জানাযার শেষে লাখো ভক্তবৃন্দ ও শিক্ষার্থীদের অশ্রুসিক্ত শ্রদ্ধায় হাটহাজারী মাদ্রাসার ভেতরে উত্তর পাশে বায়তুল আতিক জামে মসজিদ সংলগ্ন ‘মগবরায়ে জামেয়া’ নামক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুলেন্সে করে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার আজগর আলী হসপিটালে নিয়ে গেলে সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের সময় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দেশের শীর্ষ কওমী আলেম আল্লামা আহমদ শফীর শরীরে বাসা বেঁধেছিলো নানা রোগ। ১০৫ বছর বয়সী এ প্রবীণ আলেম ডায়াবেটিকস, উচ্চ রক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।
খুলনা গেজেট / এমএম /এনএম