ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে আশংকাজনক হারে বাড়ছে মহামারি করোনার সংক্রমণ। গত সাতদিনে উপজেলায় ৯৮ জনের দেহে করোনা পরীক্ষায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯জন। পরীক্ষা বিবেচনায় আক্রান্তের হার ৪০ শতাংশ। ফলে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে।
সোমবার উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও দুই জন। এরা হলেন কুল্যাগাছা ভাতুড়িয়া গ্রামের মৃত- করিম মন্ডলের ছেলে মসলেম উদ্দিন (৬০) ও লক্ষীপুর গ্রামের হানেফ আলীর ছেলে ওমর আলী (৭০)। এর মধ্যে মসলেম উদ্দিন সকাল ৭ টার দিকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মার যান। আর নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল ৪ টার দিকে মৃত্যু হয় ওমর আলীর।
এর আগে গত ১৮ জুন শুক্রবার উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে জাহানারা খাতুন নামে আরও এক নারী করোনায় মারা যান। এ নিয়ে গত সাতদিনে উপজেলায় করোনায় মারা গেলেন ৩ জন। আর উপজেলায় করোনায় আকান্ত হয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাড়াল ৮ জনে।
নিহত মসলেম উদ্দিনের স্বজনরা জানান, তিনি জ্বর, সর্দি, কাশি ও শরীরে ব্যাথাজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ১৬ জুন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে জানান তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। পরে তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সকাল ৭ টার দিকে তার মৃত্যু হয়। বাদ জোহর স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইসলামী ফাউন্ডেশনের তত্বাবধানে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
নিহত ওমর আলীর ভাই ইউনুছ আলী জানান, তার ভাই গত ১৮ জুন থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই হার্টসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে ভুগছিলেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জামিনুর রশিদ জানান, ১৬ জুন মসলেম উদ্দিনকে র্যাপিড অ্যান্টিজেন মেশিনে করোনা পরীক্ষার পর তার রিপোর্ট পজেটিভ আসে। ওইদিনই তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। আজ সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। আর ওমর আলী গত ১৮ জুন থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তবে তার হার্টেরও সমস্যা ছিল।
তিনি আরও জানান, হঠাৎ সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। গত সাতদিনে উপজেলায় ৯৮ জনের দেহে র্যাপিড অ্যান্টিজেন মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষা করে ৩৯ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট পাওয়া গেছে।
ইউএনও সৈয়দা নাফিস সুলতানা জানান, ইতোমধ্যে এই মহামারি প্রতিরোধে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী ও উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্তে উপজেলায় সাতদিনের কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। এই বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থায় রয়েছে উপজেলা প্রশাসন।