মনোয়ারা বেগম (৪২)। স্বামী মারা যান প্রায় পাঁচ বছর আগে। ছিলোনা কোন জায়গাজমি বা মাথা গোঁজার ঠাঁই। দিনমজুর স্বামীর আয়েই চলতো তাদের জীবিকা। স্বামীর মৃত্যুর পর অন্যের বাসাবাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন মনোয়ারা বেগম। রাতও কেটেছে পথে পথে আর মানুষের বাসাবাড়ির বারান্দায়। অবশেষে তার মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে মুজিববর্ষ উপলক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রলালয়ের অর্থায়নে নির্মিত প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে। ঘর পেয়ে খুশি মনোয়ারা। তিনি ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার আদর্শ আন্দুলিয়া গ্রামের মৃত- আনিচুর রহমানের স্ত্রী। বর্তমানে তিনি ওই এলাকার আরশিনগর গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ভূমিহীন-গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ১ম ও ২য় পর্যায়ে ৪০টি গৃহনির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ওই আরশিনগর গুচ্ছগ্রামে ৮জন ভূমিহীন ও গৃহহীনকে দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের এই ঘর। সেখানেই মনোয়ারা বেগমের বসবাস।
ঘর পেয়ে আবেগ আপ্লুত মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘নিজের কোন জায়গাজমি বা ভিটেমাটি ছিলো না। পথে পথে আর মানুষের বাড়িতে বাড়িতে জীবন কেটেছে। কোনদিন স্বপ্নেও ভাবিনি নিজের একটি ঘর হবে তাও আবার পাকা ঘর। এ আমার ঘর নয় বেহেস্ত। এ আমার শান্তির নীড়। এছাড়া চমৎকার নকশায় মজবুত নির্মাণসামগ্রী আর টেকসই ঘর পেয়ে মনোয়ারা বেগমের যেন আনন্দের শেষ নেই। তার মতো সবাই এই ঘর পেয়ে খুশি।’ শনিবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান এসব ঘর পরিদর্শনকালে মনোয়ারা বেগমরা এভাবেই তাদের খুশির কথা জানান।
এদিন জেলা প্রশাসক আরশিনগর গুচ্ছগ্রাম ছাড়াও উপজেলার মালিপাড়া, কাঁপাশহাটিয়া, কলাফুলোসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভূমিহীন-গৃহহীনদের জন্য নির্মিত এই ৪০ টি ঘর পরিদর্শন করেন। তিনি এসময় অসহায় এসব পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের খাদ্য সহায়তাও দেন।
এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সেলিম রেজা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন, ইউএনও সৈয়দা নাফিস সুলতানা, পিআইও মুহম্মদ জামাল হুসাইন, ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা পলাশ, গোলাম মোস্তফা, শরাফত দৌলা ঝন্টু প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/এনএম