সকাল-সন্ধ্যা হরতালকে কেন্দ্র করে খুলনায় দলের ১৪ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে বলে দাবি করেছে খুলনা বিএনপি। একই সঙ্গে রোববার (২৯ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে পুলিশের উপস্থিতিতে খুলনা-যশোর মহাসড়কের বৈকালী বাজারে রাস্তার পূর্ব পাশে বিএনপির ওয়ার্ড কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যায় মিডিয়া সেলের এক ই-মেইল বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে খুলনায় সকাল-সন্ধ্যা হরতালের দিনে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরাদের অগ্নিসংযোগ ও পুলিশের গ্রেপ্তারের মধ্যদিয়ে পালিত হয়েছে। নগরীর বৈকালীতে অবস্থিত ১৪নং ওয়ার্ড কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে শাসকদলের দুর্বৃত্তরা।
অপরদিকে হরতালকে কেন্দ্র করে ২৮ অক্টোবর শনিবার দিনগত রাতে খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৪জন বিএনপি নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক সিরাজুল ইসলাম সানি, ১০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য সামছুজ্জোহা ডিয়ার, ১৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আব্দুল আওয়াল, ৩১ নং ওয়ার্ড বিএনপি সদস্য হান্নান হাওলাদার, ২১ নং ওয়ার্ড বিএনপি কর্মী মিজানুর রহমান, আটরা গিলাতলা ইউনিয়ন ছাএদলের সহ সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম, যোগিপোল ইউনিয়ন যুবদল নেতা মারুফ হাওলাদার, ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা টুটুল ও মিঠুন, ১১নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মী মোঃ বিপ্লব হোসেন, ৩১নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক ফরিদ আহমেদ, খুলনা মহানগর যুবদলের নেতা ডালিম গাজী, ২১ নং ওয়ার্ড বিএনপি কর্মী কালু মিয়া।
এদিকে হরতাল চলাকালে শাসকদলের বিএনপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, পুলিশ কর্তৃক বিনা গ্রেফতারী পরোয়ানায় বিএনপি নেতাদের গ্রেফতারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ, নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খুলনা বিএনপি নেতৃবৃন্দ। বিবৃতিদাতারা অবিলম্বে অগ্নিসংযোগের ঘটনার সাথে যারা জড়িত অবিলম্বে তাদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। বিনা ওয়ারেন্টে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের হয়রানী করা থেকে পুলিশ প্রশাসনকে বিরত থাকার আহবান জানিয়েছেন। একই সাথে হরতাল সফল করায় খুলনাবাসির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন নেতৃবৃন্দ।
রোববার( ২৯ অক্টোবর) প্রদত্ত বিবৃতিতে নেতারা বলেন, অগ্নিসংযোগ ও গ্রেফতার করে চলামান শান্তিপুর্ণ গনতান্ত্রিক আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। আন্দোলনের মধ্যদিয়ে অবৈধ সরকারকে বিদায় করা হবে। বিবৃতিদাতারা হলেন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. শফিকুল আলম মনা, জেলা বিএনপির আহবায়ক আমীর এজাজ খান, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী প্রমুখ।
অপর এক বিবৃতিতে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মামলায় গ্রেফতার দেখানোর ঘটনাটি ন্যাক্কারজনক আখ্যা দিয়ে খুলনা বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ভোট ডাকাত লুটেরা সরকার ক্ষমতার মসনদে টিকে থাকতে মরণ কামড় দিচ্ছে। গেল ১৪ বছরে হামলা-মামলা, খুন-গুম, নির্যাতন-নিপীড়ন করে জনগনের কণ্ঠস্বর বিএনপিতে দমিয়ে রাখা যায়নি। বিদায়কালে অতিউৎসাহী পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে ফ্যাসিষ্ট সরকারের শেষরক্ষা হবে না। তাই অবিলম্বে বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সকল রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু গ্রহনযোগ্য অংশগ্রহণমুলক নির্বাচনের আয়োজন করুন। অন্যত্থায় দেশের কোটি জনতার প্রতিবাদের মুখে লজ্জাজনক পরিস্থিতির দায়ভার আজকের অবৈধ সরকার প্রধানকেই বহন করতে হবে। আগামীকাল ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ৭২ ঘন্টা সারাদেশের অবরোধ কর্মসূচি সফলের উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন খুলনা বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ।
খুলনা গেজেট/কেডি