হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া কমিয়ে হজ প্যাকেজ পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। একইসঙ্গে বিমান ভাড়া নির্ধারণে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত একটি স্বতন্ত্র টেকনিক্যাল কমিটি গঠনের প্রস্তাবও করেছে হাব। রোববার (২ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই দাবি জানিয়ে লিখিত আবেদন করা হয়।
হাব সভাপতি এম. শাহাদাত হোসাইন তসলিমের সই করা আবেদনে বলা হয়েছে, বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা সৌদি সরকারের কাছেও প্রশংসিত হয়েছে। হজযাত্রীদের ভোগান্তি নিরসনকল্পে সামগ্রিক হজ ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য আপনি (প্রধানমন্ত্রী) যে অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন, তা বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনার ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে। পবিত্র হজের সঙ্গে বাংলাদেশের মুসলমানদের আবেগ-অনুভূতি নিবিড়ভাবে জড়িত। বিষয়টি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভীষণ রকমের স্পর্শকাতরও বটে। কেবল হজযাত্রীদের পরিবার পরিজন, আত্মীয়স্বজন এবং পাড়া-প্রতিবেশীই নয়, বাংলাদেশের সব মুসলিম নাগরিক হজ ব্যবস্থাপনার বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে।
যে সব হজযাত্রী ২০২৩ সালে হজে যাবেন, তাদের বেশিরভাগ ২০১৮ ও ২০১৯ সালে প্রাক-নিবন্ধিত হয়ে সে সময়ের করা আর্থিক বাজেটে হজে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু হজযাত্রীদের অতিরিক্ত বিমান ভাড়া এবং হজ প্যাকেজের উচ্চমূল্যে ইতোমধ্যে হজযাত্রীসহ ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
আবেদনে আরও বলা হয়, এ বছরের বিমান ভাড়া ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু তা বাস্তবতার নিরিখে অনেক বেশি ও অযৌক্তিক। যে কারণে হজ প্যাকেজ ঘোষণার পর সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য হয়নি, বরং সমালোচিত হয়েছে। যেহেতু বিমান একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, তাই তাদের একক কর্তৃত্বে ভাড়া নির্ধারণ যথাযথ হয়নি। ২০২২ সালে হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল মূলত করোনা মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধে জেট ফুয়েলের মূল্য বৃদ্ধি এবং তখন করোনায় বিমানের কিছু আসন খালি রেখে ফ্লাইট পরিচালনার কারণে। সে পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের প্রত্যাশা ছিল- করোনা পরবর্তী বিমান ভাড়া কমতে পারে। বর্তমানে জেট ফুয়েলের মূল্য বৃদ্ধি পায়নি, সৌদি আরব কোনও নতুন চার্জ আরোপ করেনি। এবার বিমানের আসন খালি রেখে হজযাত্রী পরিবহন করতে হবে না। অথচ হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া ৫৭ হাজার ৭৯৭ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। যাকে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা অযৌক্তিক মনে করেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সারা দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা কেবল আপনার দিকেই তাকিয়ে আছে। তাই উদ্ভুত পরিস্থিতি বিবেচনায় এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত একটি স্বতন্ত্র টেকনিক্যাল কমিটির মাধ্যমে হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া কমিয়ে হজ প্যাকেজ পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে আপনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।