সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোস্তাকিম বিল্লাহ’র স্মরণে শোক র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে কুয়েট ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই শোক র্যালি করেছে। এদিন শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করেন। তার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য শিক্ষার্থীরা ভিসির নিকট আবেদন করেছেন।
কুয়েট শিক্ষার্থীরা জানায়, মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) ভোরে কুয়েটের বিল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট (বিইসিএম) বিভাগের ৪র্ধ বর্ষের শিক্ষার্থী মুস্তাকিম বিল্লাহ তার বাড়ি জামালপুরে যাওয়ার পথে মায়মনসিংহ টাংগাইল সড়কে বাস-ট্রাক সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় মুস্তাকিম গুরুতর আহত হয়। এসময় তার মাথার খুলির পেছনের অংশ ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে যায় ও চোখে গুরুতর আঘাত লাগে। প্রথমে তাকে টাঙ্গাইলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তারা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। হাসপাতালে প্রায় ৫ ঘন্টার অপারেশনের পর তাকে অপারশন থিয়েটার থেকে বের করে আইসিউতে রাখা হয় লাইফ সাপোর্টে।এরপর বুধবার আনুমানিক রাত ১১ টায় তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় মোস্তাকিম বিল্লাহর সকল সহপাঠী, শিক্ষকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
শিক্ষার্থীরা আরও জানায়, মোস্তাকিম বিল্লাহর বাড়ি জামালপুর জেলার গোপালপুরে হেলেঞ্চা উত্তর পাড়ায়। পরিবারে আছেন মা, বাবা আর ৪ বোন।বাবা এলাকার মসজিদের সাবেক ইমাম।পরিবারের উপার্জনক্ষন ব্যক্তি বলতে তেমন কেউ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আজ সকল ক্লাস ল্যাব বর্জনসহ বিকেল ৩টা টায় একটি শোক র্যালির আয়োজন করা হয়। সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর বরাবর তার পরিবারের আর্থিক সহায়তার জন্য একটি আবেদন করা হয়।
মোস্তাকিম বিল্লাহর বন্ধু এবং সহপাঠী অভিষেক চক্রবর্তী ধীমান বলেন, মুস্তাকিমের মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। বিগত কয়েক বছরে আমাদের দেশে বিভিন্নসময় সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক বিভিন্ন ইস্যু এবং মুভমেন্টের পরেও আমরা দেখতে পাচ্ছি যে তাতে সার্বিক পরিস্থিতি খুব একটা উন্নত হয় নি৷ যদি হতো তবে হয়তো আজকে আমাদের বন্ধু আমাদের মাঝে জীবিত থাকতো। ফিটনেসবিহীন যানের ব্যবহার এবং বেপরোয়া ড্রাইভিং এর জন্য এখনো সড়ক দূর্ঘটনায় অকালে ঝরে যাচ্ছে অসংখ্য প্রাণ। এক্ষেত্রে আমরা আশা করবো সরকারি পর্যায়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের এবং সড়ক নিরাপত্তা আইনের আরও জোরদার প্রয়োগের। সকল ড্রাইভার এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে এবং সার্বিক জনসচেতনতা সৃষ্টি করে অনাকাংখিত সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিহত করার উদ্যোগ নেওয়ার৷”