খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬

স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবিতে কুয়েটে শিক্ষকদের কালো ব্যাচ ধারণ ও মৌন মিছিল

একরামুল হোসেন লিপু

সার্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন হতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি অবিলম্বে প্রত্যাহার ও স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবিতে ১৯ মে দেশের বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কালো ব্যাচ ধারণ করে মৌন মিছিল ও মানববন্ধন করেছে। মানুষ গড়ার কারিগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দাবি, তাদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল ঘোষণা করা হোক।

একই দিন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)’র শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির ব্যানারে কালো ব্যাজ ধারণ করে মৌন মিছিল করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে মৌন মিছিলটি স্বাধীনতার স্তম্ভ “দূর্বার বাংলা”র গিয়ে শেষ হয়। দাবির স্বপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, যখন সর্বজনীন পেনশন ঘোষণা করা হয় তখন আমরা সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার যখন এই সর্বজনীন পেনশনে নিজস্ব একটা কাঠামোগত দিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সকল শিক্ষক যারা চাকরি করেন তারা সমাজের ক্রিম এবং রাষ্ট্রের একটা উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে তারা সর্বজনীন পেনশনের ভিতর নিয়েছেন। কিন্তু তাদের কাঠামোগত পরিবর্তন এখানে আমলারা, আর্মি পুলিশ প্রশাসন এবং কলেজের শিক্ষকদের ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা যে জিনিষটা জানতাম আমাদেরকে সাধারণত স্ব-শাষিত প্রতিষ্ঠানের অডিয়েন্সটাকে আমাদেরকে দেওয়া হয়েছিলো আর সকল সুযোগ-সুবিধা সংস্থাপক এবং অর্থনৈতিক সকল সুযোগ সুবিধাটা আমাদের সরকারিভাবেই প্রাপ্য। এটা জেনেই বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বতন্ত্রতাবোধ করে ছেলে-মেয়েদের উচ্চ শিক্ষা দিয়ে থাকি। যখন আমাদেরকে তাদের সাথে ডিস্ট্রিমিশন করে তখন হৃদয়ে অত্যন্ত ব্যথিত হই। সাধারণ মানুষের কাছে শিক্ষা সম্পর্কে যে নেতিবাচক ধারণা যায় সেটা আমাদের অত্যন্ত ব্যথিত করে। আমরা এটার প্রতিবাদ জানাই।

সরকার প্রধান কোন এক সময় আমাদের আন্দোলনের ফলে বলেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে একটা স্বতন্ত্র পে- স্কেল দেবে। কিন্তু দীর্ঘদিন হয়ে গেলো সেই স্বতন্ত্র পে-স্কেলের ধারণা এখনও আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি। অর্থাৎ কোন দিকেই না দিয়ে হঠাৎ এ ধরনের বৈষম্যমূলক নীতি কখনও শিক্ষিত সমাজ মেনে নিতে পারে না।

“দূর্বার বাংলা” পাদদেশে দেওয়া বক্তৃতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মোঃ আব্দুল হাসিব বলেন, শিক্ষকদের একটা প্রজ্ঞাপনে অন্তর্ভুক্ত করে একটা সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা জারি করা হয়েছে। আমরা সকলেই অনেক দিন ধরে একটা সুবিধা ভোগ করে আসছি। কিন্তু সেই সুবিধা যদি হঠাৎ করে কেড়ে নেওয়া হয় তাহলে অবশ্যই শিক্ষকরা মর্মাহত হবে। আমরা সর্বজনীন বলতে বুঝি সকলের জন্য একই হবে। কিন্তু সেটা শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য এটা করে অন্যদের এটা ব্যতিরেকে কখনও সর্বজনীন হতে পারে না। এরজন্য আমরা এটার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমরা সকলে জানি মেধাবীরাই শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করে থাকেন। আমরা যদি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলে থাকি টপ টেন পার্সেন্ট সর্বোচ্চ ১০ পার্সেন্ট ছাড়া কেউ এ্যাপ্লাই করতে পারে না। যেখানে সর্বত্র মেধাবীরা আসে তাদের যদি সুযোগ-সুবিধা কেড়ে নেওয়া হয় তাহলে মেধাবীরা ভবিষ্যতে এ পেশায় আসতে চাইবে না। তিনি বলেন, আমরা সবাই জানি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাচ্ছেন। আর এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে যারা মেধাবী ছিলেন তারা যদি শিক্ষকতা পেশায় না আসেন তাহলে আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়াই একটা অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে।

তিনি বলেন, আমি বিনীত অনুরোধ জানাবো প্রশাসনের যারা দায়িত্বে আছেন এই প্রজ্ঞাপন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হোক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মোঃ আলমগীর হোসেন বলেন, এই তপ্ত রৌদ্রে আন্দোলন করা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অত্যন্ত অবমাননাকর।এই অবমাননাকার পরিস্থিতি শিক্ষকদের হজম করা খুবই কষ্টসাধ্য। আজকে এই মৌন মিছিল কালোবাজ ধারণের মতো পদক্ষেপ নিতে আমরা বাধ্য হয়েছি।

 

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!