সাতক্ষীরায় সপ্তম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রীকে অপহরণের দায়ে এক ব্যক্তির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আাদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (৩ জুলাই) সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ জি আযম এ রায় ঘোষণা করেন। তবে সাজাপ্রাপ্ত আসামি পলাতক রয়েছে।
সাজাপ্রাপ্ত আসামির নাম আছাফুর রহমান (৪১)। তিনি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খড়িয়াটি গ্রামের আরিফ সরদারের ছেলে। অপহরণের শিকার স্কুল ছাত্রী আশাশুনি উপজেলার খড়িয়াটি গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, আশাশুনি উপজেলার খড়িয়াটি গ্রামের সপ্তম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রীকে স্কুলে যাওয়া আসার পথে কুপ্রস্তাব দিতো একই গ্রামের আছাফুর রহমান। কুপ্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় ওই ছাত্রীকে অপহরণের হুমকি দেওয়া হয়। একপর্যায়ে ২০১১ সালের ৭ নভেম্বর ওই ছাত্রী তার ফুফুর বাড়ি বাঁকায় যাওয়ার সময় গ্রামের আসাদুল ইসলামের বাড়ির সামনে থেকে মোটরসাইকেলে করে অপহরণ করে আছাফুর। পরে ৯ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় জাহাঙ্গীর মাষ্টার আছাফুরের ডেরা থেকে ওই ভিকটিমকে উদ্ধার করে তার বাবার হাতে তুলে দেন। এ ঘটনায় ২১ নভেম্বর ওই ছাত্রীর বাবা বাদি হয়ে আছাফুরের নাম উল্লেখ করে আশাশুনি থানায় ২০০০ সালের সংশোধিত ২০০৩ এর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭/৩০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। অপহরণের শিকার স্কুল ছাত্রী ২৪ নভেম্বর আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেয়। পুলিশ পরে ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে আসামি আছাফুর রহমান আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পায়।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক আবু জাফর ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি আছাফুর রহমানের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই বছরের পহেলা জুলাই আসামি আছাফুরের বিরুদ্ধে অপহরণের ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়। সাফাই সাক্ষী দেওয়ার পর আসামি আছাফুর আর আদালতে আসতো না।
মামলার সাতজন সাক্ষীর জবানবন্দি ও নথি পর্যালোচনা করে আছাফুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক মোঃ জি আযম তাকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন।
কারাদন্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জজ কোর্টের বিশেষ পিপি অ্যাড. জহুরুল হায়দারে বাবু।
আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাড. বসির আহম্মেদ। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন জজ কোর্টের বিশেষ পিপি অ্যাড. জহুরুল হায়দার বাবু।
খুলনা গেজেট/ এস আই