সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতা ছাড়া দেশটির সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড সম্ভব ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত অ্যাগনেস ক্যালামার্ড।
শনিবার তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদুলু এজেন্সিকে এক সাক্ষাৎকারে বিচারবহির্ভূত হত্যা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ক্যালামার্ড বলেন, সুনির্দিষ্ট প্রমাণ না থাকলেও তিনি যুবরাজকেই প্রধান সন্দেহভাজন মনে করছেন।
২০১৮ সালের অক্টোবরে ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন সৌদি ভিন্নমতাবলম্বী ও ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট জামাল খাশোগি। বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হলে তাকে হত্যার কথা স্বীকার করে রিয়াদ কর্তৃপক্ষ।
তাদের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় কর্মকর্তাদের ভুলে নিহত হন ওই সাংবাদিক। তবে তার মৃতদেহের কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।
প্রথমে রিয়াদের পক্ষ থেকে খাশোগিকে হত্যার কথা অস্বীকার করা হলেও তুরস্কের সংবাদমাধ্যমগুলো সৌদি আরবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রমাণ হাজির করতে থাকে।
মার্কিন তদন্ত সংস্থা সিআইএ ও পশ্চিমা দেশগুলোও বলে আসছে, এই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা সৌদি যুবরাজ।
সেই ধারাবাহিকতায় জাতিসংঘ দূত ক্যালামার্ড বললেন, ‘আমি মনে করি, কে এই হত্যাকাণ্ডের আদেশ দিয়েছেন, কিংবা কারা এতে প্ররোচনা দিয়েছে তা নির্ধারণের ক্ষেত্রে তিনি (যুবরাজ) প্রধান সন্দেহভাজন। তবে, তিনি যে এই আদেশ দিয়েছেন তার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ আমার কাছে নেই। তবে পরিস্থিতিগত প্রমাণ থেকে বোঝা যায়, যুবরাজ সালমানের সংশ্লিষ্টতা ছাড়া এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে না।’
মানবাধিকার বিষয়ক এই আইনজীবীর বিশ্বাস, সিআইএ’র কাছে যুবরাজের (জড়িত থাকার) তথ্য থাকতে পারে।’
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এ ঘটনায় পাঁচ কর্মকর্তাকে প্রাণদণ্ড দেয়ার কথা ঘোষণা করলেও তাদের নাম প্রকাশ করেনি সৌদি আরব। তুরস্ক আলাদাভাবে এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চালিয়েছে। ৩ জুলাই (শুক্রবার) ইস্তাম্বুলের একটি আদালতে অভিযুক্তদের অনুপস্থিতিতেই ২০ সৌদি নাগরিকের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়।
ক্যালামার্ডের মতে, অভিযুক্ত ২০ সৌদি কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে হলেও তুরস্কে শুরু হওয়া মামলার শুনানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘তুরস্কের বিচার আসামিদের অনুপস্থিতিতেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কারণ সবাই জানত, সৌদি আরব তুরস্কে আসামিদের বিচারের মুখোমুখি হতে দেবে না। আমি বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চাই, বিচারে আসামিদের প্রতিনিধিত্ব করছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীরা।’
সৌদি আরবের চেয়ে তুরস্কের বিচার সুষ্ঠু হবে বলে আশাপ্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা।