গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) মাস্টাররোলের কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে একটি চক্র লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সোশ্যাল মাধ্যমে এমন ঘটনার কল রেকর্ড ও লেনদেন সংক্রান্ত ডকুমেন্ট ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিষয়টি তদন্ত করে দেখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, সম্প্রতি ‘বশেমুরবিপ্রবি প্রেসক্লাব’ নামক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সংগঠনের ফেসবুক পেইজে চাকুরি প্রত্যাশী এক ব্যক্তি ও তাঁর স্ত্রীর কলরেকর্ড ও লেনদেন সংক্রান্ত স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগে রখাস্ত হওয়া কর্মচারী আকাশ শিকদারসহ একাধিক কর্মচারীর টাকা লেনদেনের বিষয় উঠে এসেছে। ওই কর্মচারী চাকরির জন্য ভুক্তভোগীর কাছ থেকে চার লাখ টাকা নেয়ার বিনিময়ে একটি ব্যাংক চেক প্রদানের প্রমাণ রয়েছে। নিয়োগ নিয়ে আলাপচারিতার ক্ষুদে বার্তার অসংখ্যা স্ক্রিনশটও সেখানে তুলে দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, চাকরি প্রার্থী ওই ব্যক্তিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টাররোলে চাকরি দেয়ার কথা বলে চার লাখ টাকা নেন আকাশ শিকদার। তাঁর সাথে জড়িয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত একাধিক ব্যক্তি। শুধু এক ব্যক্তির কাছ থেকেই ৪ লাখ টাকা নেয়নি চক্রটি। তাদের কথোপকথনের রেকর্ড থেকে দেখা যায় এমন ৪-৫ জনের চাকরির জন্য তারা টাকা নিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিযুক্ত এক কর্মচারী বলেন, টাকাটা আমি নেই নি। নিয়েছে আকাশ। আমার ভুল হয়ে গেছে। ওরা আমাকে কৌশলে জড়িয়ে ফেলেছে। কিন্তু এখন বের হতে পারছি না।
অবশ্য ঘটনার মূল অভিযুক্ত আকাশ শিকদারের একাধিক মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, আকাশ শিকদার ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ৬৩ পিস ইয়াবাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে গ্রেপ্তার হন। এরপর তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সম্প্রতি কর্মচারী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেশকিছুদিন ধরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরব হয়ছেন।
বশেমুরবিপ্রবি প্রক্টর ড. মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, কল রেকর্ড শুনে আমি হতবাক হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনার স্থান। এটা বাণিজ্যের জায়গা না। দ্রুত তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা উপাচার্য স্যারের সাথে কথা বলবো।
এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে রেজিস্ট্রার মোঃ দলিলুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। দ্রুতই তদন্ত কমিটি গঠন করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মিটিংয়ে থাকায় বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুবের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি। তবে উপাচার্যের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড সম্পর্কে উপাচার্য অবগত হয়ে বিষয়টি নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন।
খুলনা গেজেট/কেডি