সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় শুরু হওয়া ম্যাচে টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমেছিল টাইগাররা। ২৫৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমেছিল তারা। তবে সেটা টপকাতে পারেননি। বাংলাদেশ থেমে গেছে ১৬৮ রানে। ৮৬ রানের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন লিটন দাসরা।
তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ২৫৪ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে নিউজিল্যান্ড। টার্গেট তাড়া করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের তারকা লেগ স্পিনার ইশ সৌধির বলে বিভ্রান্ত হয়ে ৪১.১ ওভারে ১৬৫ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।
এদিন টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেই কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমানের গতির মুখে পড়ে যায় কিউইরা। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ‘দ্য ফিজে’র বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন ওপেনার উইল ইয়াং। বৃহস্পতিবার সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৮ রান করা ইয়াং এদিন ফেরেন শূন্য রানে।
অন্য ওপেনার ফিন অ্যালানকেও সাজঘরে ফেরান মোস্তাফিজ। সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন ফিন। তার বিদায়ে ২৬ রানে ২ ওপেনারকে হারায় নিউজিল্যান্ড।
এরপর নিউজিল্যান্ড শিবিরে আঘাত হানেন এই ম্যাচে অভিষেক হওয়অ পেসার খালেদ আহমেদ। তার বলে তাওহিদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন চ্যাড বোস। তার বিদায়ে ৭.৫ ওভারে দলীয় ৩৬ রানে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় নিউজিল্যান্ড।
ব্যাটিং বিপর্যয়ে দলের হাল ধরেন হেনরি নিকোলস ও টম ব্লান্ডেল। চতুর্থ উইকেটে তারা ১১১ বলে ৯৫ রানের জুটি গড়েন। তাদের এই জুটিতে খেলায় ফেরার পাশাপাশি বড় স্কোর গড়ার পুঁজি পায় নিউজিল্যান্ড।
২৬.১ ওভারে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ১৩১ রান। এরপর সময়ের ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকে কিউইরা। ৬১ বলে ৪৯ রান করে খালেদ আহমেদের দ্বিতীয় শিকারে পরিনত হন হেনরি নিকোলস।
ছয় নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে শেখ মেহেদি হাসানের শিকার হওয়ার আগে ১০ রান করেন রাচিন রবিন্দ্র। ৬৬ বলে ৬ চার আর এক ছক্কায় সাহায্যে ৬৮ রান করে হাসান মাহামুদের শিকারে পরিনত হন টম ব্লান্ডেল।
ম্যাকেঞ্জিকে এলবিডব্লিউ করে ফেরান নাসুম আহমেদ। কাইল জেমিসনকে ফেরান শেখ মেহেদি। এরপর লুকি ফার্গুনসনকেও ফেরান মেহেদি। ৩৫ রান করে ইনিংসের শেষ ওভারে দশম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন ইশ সৌধি।
শনিবার ২৫৫ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে এক উইকেটে ৬০ রান করে ভালো পজিশনেই ছিল বাংলাদেশ দল।
এরপর ইশ সৌধির স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে মাত্র ৩২ রানের ব্যবধানে তানজিদ হাসান তামিম, সৌম্য সরকার, তাওহিদ হৃদয়ের পর দেশ সেরা ওপেনার তামিম ইকবালের উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। একের পর এক উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে যায় টাইগাররা।
ইনিংসের শুরুতে বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। তিন নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৬ রানে ফেরেন তরুণ ব্যাটসম্যান তানজিদ হাসান তামিম।
দীর্ঘদিন পর খেলতে নামা সৌম্য সরকার ব্যাটিংয়ে নেমে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ক্যাচ তুলে দিয়ে গ্লোল্ডেন ডাক মারেন।সাম্প্রতিক সময়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা তাওহিদ হৃদয় ফেরেন মাত্র চার রান করে।
ইনিংসের শুরু থেকে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে যাওয়া তামিম ইশ সৌধির চতুর্থ শিকারে পরিনত হন। ৫৮ বলে সাতটি বাউন্ডারির সাহায্যে ৪৪ রান কেরে ফেরেন দেশ সেরা এই ওপেনার। তার বিদায়ে ১৮.৫ ওভারে ৯২ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ২৯ বলে ১৭ রান করে ফেরেন শেখ মেহেদি হাসান।
আট নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে দলের নিশ্চিত পরাজয় জেনেও ৩০ বলে দুই চার এক ছক্কায় ২১ রানের ইনিংস খেলে দলের পরাজয়ের ব্যবধান কিছুটা কমান স্পিনার নাসুম আহমেদ।
শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে পেসার খালেদ আউট হওয়ার মধ্য দিয়ে ৪১.১ ওভারে ১৬৫ রানে ইনিংস গুটায় বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ১০ ওভারে ৩৯ রানে ৬ উইকেট শিকার করেন ইশ সৌদি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ ৩৮ ওভারে ১৫৩/৮ (*, নাসুম ৩*, হাসান ০, মাহমুদউল্লাহ ৪৯, মেহেদী ১৯, তামিম ৪৪, হৃদয় ৪, সৌম্য ০, তানজিদ তামিম ১৬, লিটন ৬)
নিউ জিল্যান্ড ৪৯.২ ওভারে ২৫৪/১০ (ট্রেন্ট বোল্ট ১*, ইশ সোধি ৩৫, লকি ফার্গুসন ১৩, কাইল জেমিসন ২২, উইল ইয়াং ০, ফিন অ্যালেন ১২, চ্যাড বাওয়েস ১৪, নিকোলস ৪৯, রাচিন রবীন্দ্র ১০, টম ব্লান্ডেল ৬৮, কোল ম্যাককনচি ২০)
খুলনা গেজেট/কেডি