মোংলায় সুন্দরবনের গহিনে বিষ দিয়ে মাছ শিকারের প্রস্তুতকালে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় কিটনাশকসহ বরফ বোঝাই নৌকা ও জাল উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। সোমবার গভীর রাতে বনের জোংড়া অফিস সংলগ্ন কেউনার খালের মোহনা থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়। তবে অভিযান চলাকালে এর সাথে সংশ্লিষ্ট কাউকে আটক করতে পারেনি বনরক্ষীরা।
বন বিভাগ সূত্রে জানায়, গত ১ জুলাই থেকে সুন্দরবনের নদী ও খালে সকল ধরনের মাছ শিকার করা বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। তাই এখানকার কিছু অসাধু জেলে বেশধারী দুর্বৃত্ত ও বিষ দস্যুরা কিটনাশক দিয়ে বনের গহীনে মাছ শিকারের চেষ্টা করে। তাই পূর্ব সুন্দরবনে চাঁদপাই রেঞ্জের জোংড়া খালের অপর দিকে একটি ছোট খাল দিয়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করায় একটি নৌকাসহ বিপুল পরিমাণ বিষ আটক করা হয়েছে।
দিনগত রাত ২ টার দিকে এক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চাঁদপাই রেঞ্জের পশুর নদীতে অভিযান চালানো হয়। এসময় একটি নৌকা পশুর নদী দিয়ে বনের মধ্যে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে বন রক্ষীরা ধাওয়া করে। এসময় বরফ বোঝাই একটি নৌকা ফেলে রেখে নদী সাঁতরিয়ে বনে উঠে ৩/৪ জন দুর্বৃত্ত পালিয়ে যায়। জব্দকৃত নৌকায় তল্লাশী চালিয়ে ১৬ বোতল ভারতীয় কিটনাশক, এক কেজি ওজনের ৬ পাকেট গুড়ো বিষ, যা দিয়ে অবৈধভাবে ব্যবহার করে সাদা মাছ শিকার করা হয়। এছাড়া একটি টোনা জাল ও এক কেবিন বরফ উদ্ধার করা হয়েছে।
বন বিভাগের উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেন চাঁদপাই রেঞ্জের বন রক্ষী শেখ আব্দুল মালেক এবং এর সাথে সহায়তা করেন মোঃ মিজানুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন বন রক্ষী।
চাঁদপাই স্টেশন কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান বলেন, গোপন সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে বন রক্ষীদের একটি চৌকস টিম সুন্দরবন সংলগ্ন নদী এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযান চালানোর সময় বন রক্ষীদের উপস্থিতি বুঝতে পেরে নৌকায় থাকা বরফ ও কিটনাশক রেখে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে বনের গহীনে পালিয়ে যায় তাই কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
তিনি আরো জানায়, আমরা উদ্ধার করা নৌকা থেকে অবৈধভাবে ব্যবহার করা বিষ টোনা জাল এক কেবিন বরফ উদ্ধার করি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রেঞ্জ অফিসে এনে তা নষ্ট করা হয়েছে।
পুর্ব সুন্দরবনের চাদঁপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ এনামুল হক জানান, দুইমাস সুন্দরবনে অনুপ্রবেশে করে মাছ শিকার, পরিবহন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্ত সরকারের এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এবং সুন্দরবনে বিষ নিয়ে যাওয়ার অপরাধে তাদের নৌকা ও বিপুল পরিমাণ বিষ জব্দ করা হয়।
তিনি আরো বলেন, সুন্দরবনে অবৈধভাবে মাছ শিকার চোরাচালান ও সুন্দরবনের সম্পদ রক্ষায় বনরক্ষীদের অভিযান পরিচালনা সব সময় অব্যাহত রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম