খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২১শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  নগরীর জিরোপয়েন্টে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের ২৫ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
  নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের সময় বাড়ল ২২ জুন পর্যন্ত

সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ শেষে লোকালয়ে ফিরছে মৌয়ালরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

বনবিভাগ থেকে ১৫ দিনের পাস নিয়ে সুন্দরবনে ঢুকে মধু আহরণ শেষে লোকালয়ে ফিরতে শুরু করেছে মৌয়ালরা। গত পহেলা এপ্রিল থেকে মধু সংগ্রহের জন্য প্রথম দফায় পাস দেওয়া শুরু হয়। তবে ঈদের কারণে মধু সংগ্রহের জন্য বনবিভাগ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে পাস দেয়া শুরু হয় ৭ এপ্রিল। মাত্র ১৫ দিনের জন্য বনে ঢোকার পাস নিয়ে মৌয়ালরা পশ্চিম বনবিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন সুন্দরবনে প্রবেশ করে। পাসের মেয়াদ শেষ হতে চলায় সময় থাকতেই তারা ফিরে আসছেন।

বনবিভাগ সূত্র জানায়, প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ থেকে সুন্দরবনের মধু আহরণে মৌয়ালদের সরকারিভাবে পাস (অনুমতি পত্র) ইস্যু করা হয়। তবে এবার রোজার ঈদের কারণে আনুষ্ঠানিক পাশ ইস্যু শুরু হয় ৭ এপ্রিল থেকে। চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে এক লাখ ৫০ হাজার কেজি মধু ও চার হাজার কেজি মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বন বিভাগ। এসময় প্রায় ৩২ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হওয়ার কথা রয়েছে।

ডুমুরিয়া এলাকার মৌয়াল বাক্কার মালি বলেন, মাত্র ১৫ দিনের পাসের মেয়াদ শেষ হতে চলায় এবং এবছর মধু সংগ্রহকারী নৌকা কম হওয়ায় সবাই কমবেশি মধু পেয়েছি। কোনরকম বিপদ ছাড়াই মধু সংগ্রহ করে ফিরতে পেরেছি এজন্য আল্লাহর কাছে হাজারো শুকরিয়া।
তিনি আরো বলেন, সুন্দরবন থেকে মধু আহরণ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মৌয়ালরা বনে প্রবেশ করে। মৌয়ালরা মধু সংগ্রহ করতে যাওয়ার আগে আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসীদের কাছ থেকে দোয়া নিয়ে জীবনের ঝুঁকি উপেক্ষা করে পিতা-মাতা সন্তান রেখে সুন্দরবনে মধু আহরণের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।

গাবুরা হরিশখালী গ্রামের মৌয়াল বিল্লাল সাজোনি বলেন, সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে গেলে জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। সুন্দরবনে মধু খোঁজা আর বাঘ খোঁজা একই কথা। সুন্দরবনে বাঘ থাকে গভীর জঙ্গলে। একই সাথে ঝোপের আড়ালে মধুও থাকে বেশি। তবে এবছর বৃষ্টি না হওয়ায় মধু কম, তারপরেও যা হয়েছে ভালো হয়েছে। তবে এবার নৌকার সংখ্যা কম হওয়ায় সবাই কম বেশি মধু পেয়েছে।

সুন্দরবন থেকে ফিরে আসা অন্যান্য মৌয়ালরা জানান, যা মধু হয়েছে তাতে তারা অনেক সন্তুষ্ট। সুন্দরবনের গভীরে গিয়ে প্রতিনিয়ত বাঘ ও বনদস্যুদের ভয় তাদের তাড়া করে বেড়ায়। তারা আরো বলেন, সুন্দরবনে বনদস্যুদের কারণে আমরা আতঙ্কে ছিলাম। ওদের হাতে ধরা পড়লে নৌকা প্রতি ৫০ হাজার টাকা দিতে হতো। এছাড়া এক শ্রেণীর জেলেরা মাছ ধরার পাস নিয়ে বনে ঢুকে মধুর চাক কেটে নিয়ে এসছে। যে কারণে এবার মধু অন্যবারের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম।

মধু আহরণ শেষে সুন্দরবন থেকে নিরাপদে ফিরে আসতে পেরে মৌয়ালরা বনবিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে নিরাপত্তা আরো জোরদার করার দাবি জানান।

খুলনা গেজেট/জেএম

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!