খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ পৌষ, ১৪৩১ | ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’ আজ

সুন্দরবনের বিষ দস্যু ও তাদের সহযোগিদের বিরুদ্ধে পুলিশের কঠোর হুশিয়ারি

মোংলা প্রতিনিধি

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে মোংলা থানা চত্বরে থানা পুলিশের আয়োজনে মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দীন’র সভাপতিত্বে উপজেলার সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী, স্থানীয় সুধী সমাজ ও সাংবাদিকসহ অন্যান্য পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) জনাব জয়দেব চৌধুরী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বিষ দিয়ে শিকার করা মাছ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তা ছাড়া ওষুধ প্রয়োগে যখন মাছ ধরা হয়, তখন মাছসহ ছোট ছোট পোকা পর্যন্ত মারা যায়। জীববৈচিত্র্যেরও মারাত্মক ক্ষতি হয়। তাই এভাবে মাছ ধরা বন্ধ করতে হবে।

প্রতিবছর ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের নদীতে মাছের প্রজনন মৌসুম চলে। এই তিন মাস সুন্দরবনে সব ধরণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। অভয়ারণ্য এলাকাগুলোতে সারা বছরই জেলে-বাওয়ালিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকে। কিন্তু জেলেদের একটি অংশ কোনো নিষেধাজ্ঞাই মানে না। জেলেরা বনের খালে বিষ দিয়ে মাছ ধরে নিয়ে যায়। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও কিছু নেতার মদদ রয়েছে এসব জেলের পেছনে। প্রতিদিনই স্থানীয় মৎস্য আড়তে এসব মাছ বিক্রি হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, খালের পানিতে বিষ দিলে পানি বিষাক্ত হয়ে যায়, তখন মাছ ভেসে ওঠে, মারাও যায়। জেলেরা অল্প সময়ে সেই মাছ ধরে নিয়ে আসে। এর ফলে শুধু মাছ নয়, অন্যান্য জলজ প্রাণিও মারা যায়। সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র্যের বড় ধরণের ক্ষতি হয়। আবার বিষ দিয়ে শিকার করা মাছ খেলে মানুষেরও ক্ষতি হয়। বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দরবন নিয়ে আমাদের গর্বের অন্ত নেই। কিন্তু এই বন রক্ষায় এবং বনের উন্নয়নে আমাদের অবহেলা যেন তার চেয়েও বেশি। সুন্দরবনের খালগুলোতে বিষ দিয়ে মাছ ধরা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। সুন্দরবন রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত থেকেও যারা অবৈধ মাছ ধরায় সহযোগিতা করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

বন ও প্রাণী রক্ষা করতে না পারলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা অসম্ভব। প্রাণী ও বন রক্ষা করতে না পারলে দেশের সার্বিক প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হবে না। তাই বন্যপ্রাণী রক্ষায় প্রাকৃতিক বন রক্ষার ওপর তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

এসময় মোংলা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, বাগেরহাট পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক, মোংলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুনীল কুমার বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম হোসেন, মোংলা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আব্দুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর দাস, সহকারী পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান তুষার, রামপাল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম আশরাফুল আলম, মোংলা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ, আত্মসমর্পণকৃত জলদস্যু, সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল জেলে, মৌয়াল, পর্যটক বহনকারী বিভিন্ন জলযানের মালিক/চালক, মোংলা বাজার বণিক সমিতির নেতৃবৃন্দ এবং মোংলা উপজেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিক এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।

খুলনা গেজেট/ টিএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!