‘সুন্দরবনের প্রাণ পশুর নদীর দূষণ ও দখল রুখতে হবে। মুনাফালোভী ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বেপরোয়া শিল্পায়নের দ্বারা আক্রান্ত পশুর নদী। প্রতিনিয়ত পশুর নদীতে তেল-কয়লা-সার ভর্তি কার্গো ও জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটলে দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা লক্ষ্য করা যায় না। ব্যাপক হারে প্লাস্টিক দূষণ দ্বারাও বিপর্যস্ত পশুর নদীর প্রাণবৈচিত্র্য। অন্যদিকে ফারাক্কা বাঁধের বিরুপ প্রতিক্রিয়ায় পর্যাপ্ত মিষ্টি পানির প্রবাহ না থাকায় পশুর নদী এবং সুন্দরবন তার যৌবন হারাচ্ছে। পানির কোন বর্ডার নেই এই কথা মনে রেখেই ধরিত্রী বাঁচাতে জাতীয়-আন্তর্জাতিক সংস্থাকে কাজ করতে হবে।’
রবিবার সকালে মোংলার চরকানার পশুর নদীতে সদ্য ডুবে যাওয়া কয়লা ভর্তি কার্গোডুবির স্থানে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এবং পশুর রিভার ওয়াটার কিপার আয়োজিত আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য নদী দিবস উপলক্ষ্যে ‘পশুর নদী বাঁচাও, সুন্দরবন বাঁচাও’ শীর্ষক মানববন্ধনে বক্তারা একথা বলেন।
রবিবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতি এবং প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মোংলার আহ্বায়ক পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নূর আলম শেখ। মানববন্ধন চলাকালীন সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাপা নেতা সাংবাদিক এম এ সবুর রানা, কমলা সরকার, আব্দুর রশিদ হাওলাদার, গীতিকার মোল্লা আল মামুন, পশুর রিভার ওয়াটাকিপার ভলান্টিয়ার মাহারুফ বিল্লাহ, মেহেদী হাসান বাবু, শেখ রাসেল, পরাগ মনি রাজু প্রমূখ।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় সরকারি প্রবাহমান নদী-খালে বাঁধ দিয়ে চিংড়ি চাষ এবং দখল করে অবকাঠামো নির্মাণ করার ফলে প্রাণ-প্রকৃতিতে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বক্তারা অবিলম্বে নদী-খালের অবৈধ বাঁধ অপসারণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বক্তারা সুন্দরবনের বাপারজোন এলাকার মধ্যে পশুর নদীর পাড়ে অপরিকল্পিত শিল্পায়ন গড়ে ওঠারও সমালোচনা করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালের ব্রাজিলে এক সমাবেশে নদীর প্রতি দায়বদ্ধতা মনে করিয়ে দিতে এ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। সেই সমাবেশে সমবেত হয়েছিলেন বিভিন্ন দেশের বাঁধের বিরুপ প্রতিক্রিয়ার শিকার জনগোষ্ঠির প্রতিনিধিরা।ওই সম্মেলন থেকেই ১৪ মার্চ আন্তর্জাতিক আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস পালনের ঘোষণা হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম