খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বিচার বিভাগকে ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে : ড. ইউনূস
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৩৮৯
  পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব : প্রধান উপদেষ্টা

সুইস ব্যাংক নিয়ে আতঙ্ক, পতন ঠেকাতে জরুরি ঋণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ দুই ব্যাংক সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিবি) ও সিগনেচার ব্যাংকের পতনের পর সুইজারল্যান্ডের ক্রেডিট সুইস ব্যাংক নিয়ে গ্রাহকদের মাঝে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। গ্রাহকদের আস্থা ফেরাতে সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে ক্রেডিট সুইস ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে বলেছে, ক্রেডিট সুইস ব্যাংক তারল্য বৃদ্ধি ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করেছে। এর অংশ হিসাবে বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৫৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের একটি চুুক্তিতে পৌঁছেছে ব্যাংকটি। বিশ্বজুড়ে ব্যাংকিং খাতে সংকটের আশঙ্কা তীব্র হওয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বারস্থ হয়েছে ক্রেডিট সুইস।

বুুধবার মধ্যরাতে ঋণের ঘোষণা দেওয়ার কিছুক্ষণ পর ক্রেডিট সুইসের শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বুধবার সকালের দিকে প্রথম দফায় ব্যাংকটির শেয়ারের ২৫ শতাংশ পতন ঘটে। তবে ঋণ চুক্তির পর কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে ক্রেডিট সুইসের শেয়ার।

গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক ও সোমবার সিগনেচার ব্যাংকের পতন বিশ্বজুড়ে ব্যাংকিং খাতে সংকটের আশঙ্কা তৈরি করেছে। মার্কিন বৃহৎ এই দুই প্রতিষ্ঠানের পতনের পর অন্যান্য ব্যাংক নিয়েও গ্রাহকদের মাঝে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

ক্রেডিট সুইস ব্যাংকের বৃহত্তম অংশীদার সৌদি ন্যাশনাল ব্যাংক সুইজারল্যান্ডের এই ব্যাংকের শেয়ার আর কিনবে না বলে ঘোষণা দেওয়ার পর গ্রাহকদের মাঝে চরম আতঙ্ক দেখা দেয়। এই আতঙ্ক অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়েছে। হঠাৎ করে বৈশ্বিক ব্যাংকিং খাতে অস্থিরতা তৈরি হওয়ায় এশিয়া ও ইউরোপের শেয়ারবাজারে মন্দা দেখা দিয়েছে।

২০০৮ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের পর বিশ্বের প্রথম কোনও বৃহৎ ব্যাংক হিসাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে জরুরি ঋণ নিলো ক্রেডিট সুইস ব্যাংক। ক্রেডিস সুইস ব্যাংক সংকটের মুখোমুখি হওয়ায় অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো তাদের আক্রমণাত্মক সুদের হার বৃদ্ধি বজায় রাখতে সক্ষম হবে কিনা তা নিয়ে গুরুতর সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

তবে নীতিনির্ধারকরা জোর দিয়ে বলেছেন, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এক দশকেরও বেশি সময় আগের বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের চেয়ে আলাদা। কারণ ব্যাংকগুলোর এখন ভালো পুঁজি ও তারল্য রয়েছে। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক মন্দার সময় ব্যাংকগুলোর পুঁজি রাতারাতি তলানিতে নেমে যায়।

সুইজারল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেডিট সুইস ব্যাংক বলেছে, সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে ৫০ বিলিয়ন সুইস ফ্রাঙ্ক (৫৪ বিলিয়ন ডলার) পর্যন্ত ঋণ নেওয়ার একটি বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত জামানতের বিপরীতে ক্রেডিট সুইসকে তারল্য সরবরাহের নিশ্চয়তাও দিয়েছে সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক।

১৮৫৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সুইজারল্যান্ডের ক্রেডিট সুইস ব্যাংক। গত কয়েক বছরে নানা ধরনের কেলেঙ্কারির মুখোমুখি হয়েছে এই ব্যাংকটি। অর্থপাচার, গুপ্তচরবৃত্তি এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ব্যাংক থেকে চলে যাওয়ার মতো ঘটনা ব্যাংকটিকে সংকটের মুখে ফেলেছে।

এর মধ্যে ব্যাংকটির ইউএস অ্যাসেট ম্যানেজার আর্চেগোসের আর্থিক কেলেঙ্কারি ও যুক্তরাজ্যের গ্রিনসিল ফার্মের দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার ঘটনা আরও বেশি ঝুঁকিতে ফেলেছে ক্রেডিট সুইস ব্যাংককে। এর আগে, ২০২১ সালের মার্চে গ্রিনসিল দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পর ক্রেডিট সুইসের বাজারমূল্য প্রায় ৮০ শতাংশ ধসে যায়।

এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকটি আগামী বছরের আগে মুনাফা করতে পারবে না বলে সতর্ক করে দিয়েছে ক্রেডিট সুইস ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ফ্রন্টলাইন অ্যানালিস্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ক্রেডিট সুইসের সাবেক ব্যাংক বিশ্লেষক ড্যানিয়েল ডেভিস বিবিসিকে বলেছেন, ব্যাংকের ‘মিলিয়নেয়ার এবং বিলিয়নেয়ার গ্রাহকরা তাদের সহনশীলতার শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছেন বলে মনে হচ্ছে। যে কারণে তারা গত ছয় মাস ধরে ব্যাংকটি থেকে অর্থ তুলে নিচ্ছেন। ব্যাংকটি থেকে অর্থ তুলে নেওয়ার ঘটনা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে।

খুলনা গেজেট/ এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!