রোমাঞ্চকে ইউরোর সমার্থক শব্দ হিসেবে বিবেচনা করার দাবি কি কোথাও উঠেছে? একের পর এক রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের পর এমন ভাবনা কারো মাথায় চেপে বসলে সেটা খুব বেশি অমূলক হবে না! শেষ ষোলোর নাটকীয় সব ম্যাচের পর কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম ম্যাচও গড়িয়েছে টাইব্রেকারে।
গোল, পাল্টা গোলে সমতা, এরপর লাল কার্ড। আক্রমণ এবং আক্রমণ স্প্যানিশদের, কিন্তু দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন একজন। সুইজারল্যান্ডের গোলরক্ষক সমের। শেষ পর্যন্ত নায়ক হয়ে উঠলেন স্পেন গোলরক্ষক উনাই সিমন। নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে ড্র থাকা ম্যাচ তারা জিতেছে টাইব্রেকার, প্রথম দল হিসেবে উঠে গেছে সেমিফাইনালে।
ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে গিয়েছিল স্পেন। যদিও সেটি ছিল আত্মঘাতী গোল। ৮ মিনিটের সময় কোকোর নেওয়া কর্নার উড়ে এসে পড়েছিল বক্সের বাইরে থাকা সার্জিও বুস্কেটসের পায়ে। তিনি সেটা শট নিয়েছিলেন গোলমুখে। তা জাল খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল কম। কিন্তু সুইডিশ ফুটবল ড্যানিশ জাকারিয়ার পায়ে লেগে গোল হয়।
ওই এক গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় লুইস এনরিকে শিষ্যরা। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ৬৮ মিনিটে স্পেনের ডিফেন্ডারদের ভুলে খেলায় সমতা নিয়ে আসে সুইজারল্যান্ড। গোল করে স্পেনকে এগিয়ে দেন জর্ডান শাকিরি। বড় টুর্নামেন্টে এটি তার অষ্টম গোল। বিশ্বকাপ ও ইউরোতে সমান চারটি করে গোল করেছেন তিনি।
শাকিরির এই গোলের পর যখন আবারও ফ্রান্স ম্যাচের পুনরাবৃত্তির স্বপ্ন দেখছে সুইজারল্যান্ড। তখনই তাতে আঘাত লাগে রেমো ফ্রেউলারের লাল কার্ড দেখায়। মরেনোকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন তিনি।
দশজনের দল হয়ে পড়ায় সুইডিশদের জন্য লড়াইটা হয়ে পড়ে আরও কঠিন। যেখানে থাকতে পারেননি শাকিরি। ফ্রেউলারের লাল কার্ড দেখার মিনিট খানেক পরই তাকে তুলে নেন সুইডিশ কোচ।
এরপর তাদের নেতৃত্বের ভার পান গোলরক্ষক সমের। আর্মব্যান্ড হাতে পেয়েই যেন নিজেকে অন্যভাবে চেনান তিনি। স্পেনের একের পর এক আক্রমণ ঠেকিয়ে সুইডিশদের নায়ক বনে যান সমোর।
পুরো ১২০ মিনিটের খেলায় ১০টি সেভ দেন সমের। যা কি না চলতি ইউরোয় সর্বোচ্চ সেভের রেকর্ড। অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটেও কোনো গোল না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
সেখানেও চলে নাটক। স্পেনের পক্ষে প্রথম শট নিতে এসে গোলপোস্টে মারেন সার্জিও বুস্কেটস। তবে নাটকীয়তার বাকি তখনো। ফ্যাবিয়ান স্কার ও ম্যানুয়েল আকনাজির নেওয়া টানা দুই পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমন। যিনি কি না আগের ম্যাচেই হাস্যকর ভুলে আত্মঘাতী গোল খেয়ে ভিলেন বনতে বসেছিলেন। পরে মিস করেন এডওয়ার্ড ভার্গাসও। টাইব্রেকারে ৩-১ এ জয় পায় সুইডেন।