খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  অ্যান্টিগা টেস্ট: তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ২৬৯/৯, পিছিয়ে ১৮১ রানে

সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশ, করোনার ভারতীয় ধরণ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা

রুহুল কুদ্দুস, সাতক্ষীরা

মহামারি করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ধরণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় দুই সপ্তাহের জন্য সীমান্ত বন্ধ ঘোষণার পর ভারত থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈধভাবে ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে বাংলাদেশে আসার পাশপাশি প্রায় প্রতিদিনই অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারত থেকে আসছে মানুষ। কিন্তু ইমিগ্রেশন যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করা হলেও অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে আসা নাগরিকদের কোয়ারেন্টাইনের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে না। ফলে দেশে করোনার ভারতীয় ধরণ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়ন সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার মাদরা সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকালে তিন বাংলাদেশী নাগরিককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিজিবি।

আটককৃতরা হলেন, রাজধানী ঢাকার বক্সীনগর এলাকার নারায়ন সরকারের ছেলে মানিক সরকার (৩২), সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আখড়াখোলার জিয়ারুল সরদারের ছেলে আতিকুর রহমান রাসেল (২০) ও যশোরের ইছামতি গ্রামের শৈলেন বিশ্বাসের ছেলে সুবর্ণ বিশ্বাস (৩০)।

এর আগে বুধবার (২৮ এপ্রিল) রাতেও অনুরূপভাবে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার তলুইগাছা সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে দেশে আসার সময় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা গায়েনবাড়ি গ্রামের রহমান উজিয়া কাগুচির ছেলে আজগর আলী (৪৫), তার স্ত্রী রুবিয়া বিবি (৩৫), মেয়ে আফরোজা খাতুন (১৫) ও আশা খাতুন (০৭) কে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে বিজিবি।

এদিকে করোনার ভারতীয় ধরণ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কায় সম্প্রতি যশোর জেনারেল হাসপাতালে থেকে পালানো ভারত ফেরত ১০ করোনা রোগীকে নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় হলেও অবৈধভাবে দেশে আসা বাংলাদেশী নাগরিকদের নিয়ে তেমন কোন তোড়জোড় দেখা যাচ্ছে না। ভাবটা এমনই যে, যারা বৈধ পথে আসছেন, শুধুমাত্র তাদের মাধ্যমেই করোনার ভারতীয় ধরণ ছড়াতে পারে। আর যারা অবৈধভাবে আসছেন তাদের দ্বারা করোনার ভারতীয় ধরণ ছড়াবে না। সাতক্ষীরা বিজিবি ও পুলিশের গত দু’দিনের কার্যক্রমে অন্তত তাই প্রতীয়মান হচ্ছে।

গত দু’দিনে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার মাদরা ও সদর উপজেলার তলুইগাছা সীমান্ত থেকে পৃথক দু’টি অভিযানে সাত বাংলাদেশীকে আটক করে বিজিবি। দু’টি ঘটনাতেই বিজিবি অনুপ্রবেশকারীদের আটকের পর যথাক্রমে কলারোয়া ও সদর থানায় সোপর্দ করে এবং পুলিশ যথা নিয়মে তাদের মামলা দিয়ে কোর্টে প্রেরণ করে। দুটি ঘটনার একটিতেও তাদের কোয়ারেন্টাইনে রাখার বিষয়টি বিবেচনা করা হয়নি।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরের জনসংযোগ শাখায় যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, নিয়ম অনুযায়ী অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

আর কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর খায়রুল কবীর জানান, বিজিবি আমাদের কাছে দিলে আমাদের দায়িত্ব আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া। পাসপোর্ট আইনে মামলা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করা। থানায় তাদের কোয়ারেন্টাইন করার কোন বিশেষ ব্যবস্থা নেই।

সাতক্ষীরার নাগরিক নেতা অধ্যক্ষ আনিসুর রহিম বলেন, সীমান্তে বিজিবি’র হাতে আটক অবৈধ অনুপ্রবেশকারিদের করোনা পরীক্ষা বা কোয়ারেন্টাইনে রাখার কোন ব্যবস্থা না থাকায় তাদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসের ভারতীয় ধরণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা যে নেই তা কিন্তু বলা মুশকিল। তাদের মধ্যে কেউ ওই ভাইরাসের বাহক হয়ে থাকলে তা দ্রুত মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। তাই বৈধভাবে ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট দিয়ে বাংলাদেশে আসা যাত্রীদের সাথে অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে আসা লোকদেরও কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করার দরকার। তিনি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!