চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা সংশোধন করেছে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৪১ জন বলে জানানো হয়েছে। সোমবার(৬ জুন) দুপুরে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, কিছু মরদেহ চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নেয়া হয়েছিল। সেখানে একবার গণনা করা হয়। আবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও সেগুলো গণনা করা হয়। তাতে সংখ্যা বেড়ে ৪৯ হয়ে গিয়েছিল। পরে সব মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। তাই মৃতের প্রকৃত সংখ্যা ৪১। এরপর আর কোনো মৃতদেহ উদ্ধার হলে তা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার রাতে সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে বেসরকারি ওই কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। সেখানে থাকা রাসায়নিকের কন্টেইনারে একের পর এক বিকট বিস্ফোরণ ঘটতে থাকলে আগুন ভয়ঙ্কর মাত্রা পায়। রোববার দিনভর চেষ্টা চালিয়েও তা নেভানো যায়নি পুরোপুরি।
ডিপোতে আগুনের দাপট কিছুটা কমলে রোববার সকাল থেকে একের পর এক লাশ বের করে আনতে থাকেন উদ্ধারকর্মীরা।
কিন্তু এরপর জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের বরাতে সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন রকম তথ্য আসতে থাকে, তাতে মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা নিয়ে তৈরি হয় বিভ্রান্তি। রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা প্রশাসন ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় মৃতের সংখ্যা নিয়ে তিন রকমের তথ্য জানায়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাদের কাছে ৪১টি মরদেহ থাকার কথাই বলে আসছিল। কিন্তু রাতে জেলা প্রশাসন নিহতের সংখ্যা জানায় ৪৫। আর সিভিল সার্জনের কার্যালয় একাধিকার মৃতের সংখ্যা বদল করে।
রাত ১০টার দিকে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ফেসবুক পেইজে নিহতের সংখ্যা দেয়া হয় ৪৯ জন। এরপর তা দুইবার সংশোধন করে ৪৫ জন ও ৪৬ জন করা হয়। পরে রাত ১১টা ২০ মিনিটে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমে ফোন করা হলে তারা জানায়, নিহতের সংখ্যা ৪৯ জনই হবে।
অন্যদিকে চট্টগ্রামের সহকারী কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকের স্টাফ অফিসার প্লাবন কুমার বিশ্বাস জানান, রাত ১০টা তারা ৪৯ জনের মৃত্যুর তথ্য পেয়েছেন, তাদের মধ্যে ৯ জন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী।
কিন্তু সোমবার সকালে লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়ার সময় ওই তথ্যে ভুল থাকার বিষয়টি স্পষ্ট হয়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা ৪১টি লাশই পেয়েছে। জেলা প্রশাসন জানায়, ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু হয়েছে ৪১ জনের। আর সিভিল সার্জন কার্যালয় জানায়, হাসপাতালের তথ্যই অনুসরণ করতে হবে।