নির্বাচনের ছয় মাস বাকী থাকতেই সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাই নিয়ে নানা আলোচনার মধ্যে খবর উঠেছে। ঠিক এমন সময় সিসিক নির্বাচনে এবার প্রার্থী হচ্ছেন না বলে নিজের মনোভাব প্রকাশ করেছেন বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
আগামীতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপি কাউকে মনোনয়ন দেবে না, দলের এমন সিদ্ধান্ত মেনেই তিনি এ অবস্থান নিয়েছে। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হলে, তাঁর সিদ্ধান্তও পাল্টাতে পারে।
মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, দলের সিদ্ধান্ত আছে স্থানীয় কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়া। দলের সিদ্ধান্তই আমার সিদ্ধান্ত। দল যদি প্রার্থী হতে বলে তাহলে আমার সিদ্ধান্তেরও পরিবর্তন হবে।
২০২১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন উপজেলা পরিষদে উপনির্বাচনে ও সব পৌরসভা নির্বাচনে সরকারের নগ্ন হস্তক্ষেপ এবং নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে চরম ব্যর্থতার প্রতিবাদে স্থানীয় কোনো নির্বাচনেই অংশ না নেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগের দিন দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলেও সে সময় জানান তিনি।
এদিকে দল মনোনয়ন না দিলেও বতর্মান মেয়র আরিফুল হক প্রার্থী হচ্ছেন বিষয়টি আলোচিত ছিল সিলেট বিএনপিতে। কেননা, টানা দুবার তিনি এ দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, রাজনীতিতে অনেক কথাই হয়। আমি যেহেতু দলের নির্বাহী কমিটির সদস্যও, তাই দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
অপরদিকে সিলেট বিএনপি নেতাদের একটি সূত্র জানায়, আরিফুল হক চৌধুরী মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী না হলেও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ অথবা সিলেট-৪ আসনে মনোনয়ন চাইবেন। বিষয়টি তিনি ইতিমধ্যে দলের হাইকমান্ডকে জানিয়েছেন। হাইকমান্ড থেকে ইতিবাচক বা নেতিবাচক কোনো সিদ্ধান্তই তাকে জানানো হয়নি। তাকে দলের পক্ষে কাজ করে যেতে বলা হয়েছেে আরিফুল ঘনিষ্টরা সাংবাদিকদের জানান।
২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সব কেন্দ্র মিলিয়ে আরিফুল হকের প্রাপ্ত ফলাফলে তিনি নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের চেয়ে ৬ হাজার ১৯৬ ভোট বেশি পেয়েছিলেন। আরিফুলের প্রাপ্ত ভোট ৯২ হাজার ৫৯৩ ভোট। অন্যদিকে বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৮৬ হাজার ৩৯৭।
সিলেট পৌরসভাকে সিটি করপোরেশন ঘোষণা করা হয় ২০০২ সালে। প্রথম নির্বাচন হয় চারদলীয় জোট সরকার আমলে। এতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছিলেন বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। তিনি পৌরসভা থাকাকালে চেয়ারম্যান থেকে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। পরে ২০০৮ সালে কারাগারে থাকা অবস্থায় দ্বিতীয়বার বিজয়ী হন কামরান। তৃতীয় নির্বাচন হয় ২০১৩ সালের ১৫ জুন। এ নির্বাচনে কামরানের সঙ্গে মেয়র পদে প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। এতে আরিফুল হক পেয়েছিলেন ১ লাখ ৭ হাজার ৩৩০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বদরউদ্দিন আহমদ কামরান পেয়েছিলেন ৭২ হাজার ২৩০ ভোট।
খুলনা গেজেট/কেডি