তার এবং সহকর্মীদের বিচারের ঘটনা দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় উল্লেখ করে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এটা এখানেই সীমাবদ্ধ নয়, দেশের মধ্যেও সীমাবদ্ধ নয়, সারা দুনিয়ার মানুষ লক্ষ্য করছে এই বিচারে কি হলো। আমরা যা যা করছি তা সবই তারা দেখছে। তিনি বলেন, এই যে ঘটনাগুলো ঘটছে তার পক্ষে লিখুন, বিপক্ষে লিখুন কোন অসুবিধা নাই। কিন্তু এটা রেকর্ডেড। জাতির ইতিহাসের একটা অংশ হয়ে যাবে। এটার জন্য কি আমরা গর্ববোধ করবো, নাকি অপরাধবোধ করবো? এরকম একটা সন্তানকে এমন অপরাধে অপরাধী কেনো করলাম? এগুলোর জবাব থেকে মুক্তি নাই।
রোববার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় জামিন পাওয়ার পর এসব মন্তব্য করেন ড. ইউনূস।
তিনি বলেন, আপনারা আজকের এই ছবিটা তুলে রাখুন। দুর্নীতি দমন কমিশনের বটতলা আমরা সবাই। এটা ঐতিহাসিক একটা ছবি। এটা আজকে-কালকে পত্রপত্রিকায় বের হবে। কিন্তু এটা যুগ যুগ ধরে নানা বইতে প্রকাশিত হবে। আপনারা সেই ইতিহাসের সাক্ষী।
এটা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, একজন নোবেল বিজয়ীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনেছে, জালিয়াতির অভিযোগ এনেছে, মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ এনেছে। আমি একা নই। আমরা আরও ৭ জন, যারা সারাজীবন কঠোর পরিশ্রম করেছে গরীব মানুষের জন্য। এরা কোন চাকরি করতে এখানে আসে নাই। তারাও অর্থ আত্মসাত, জালিয়াতির এবং মানি লন্ডারিংয়ের জন্য অভিযুক্ত।
সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, আপনারা আজকে এখানে উপস্থিত আছেন। আপনারা জন্ম-জন্মান্তর ধরে বলতে পারবেন যে, আমরা উপস্থিত ছিলাম সেখানে। এবং কেনো ছিলেন, কি হয়েছে সেগুলো আপনারা বর্ণনা করবেন। এটা আমার মুখ থেকে শোনার দরকার নেই। আপনারা যা নিজে মনে করবেন তা আপনার পরের প্রজন্মকে জানাবেন। আগের প্রজন্মকে জানাবেন। যারা এখানে উপস্থিত হয়নি তাদের জানাবেন। আইন মানুষের শুভ কামনা করে রচনা করা হয়। আইন মানুষের মনে স্বস্তি আনে, শান্তি আনে। আইন মানুষের মনে আশঙ্কাও জাগায়। ভয়ংকর শঙ্কা জাগায়। আইনকে আমরা কোনদিকে নিয়ে যাব সেটা সমাজের ইচ্ছা। সমাজ কিভাবে করতে চায়। আপনারাও ঠিক করেন, দুর্নীতি দমন কমিশন আজ যে বিচারে বসলো সেটা সঠিক কারণে হয়েছে কিনা, সঠিক ভাবে হয়েছে কিনা। এটা আমার মুখের দিকে তাকানোর কোন দরকার নাই। এটা আপনার মনে যা জাগে তাই করবেন।
নোবেল জয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, আমাদের ছেলে মেয়েরা এগুলো স্কুলে পড়বে। তারা তো নোবেল পুরষ্কারের কথা ভুলতে পারবে না। তখন তারা পড়বে তার নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ দেয়, মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ দেয়, জালিয়াতিতে দেয়; তখন তারা কনফিউশনে পড়ে যাবে। আসলটা কি! এটা কি মুখোশ নাকি আসল মানুষ। তারা একাই নাকি তাদের সাঙ্গপাঙ্গ আছে।
খুলনা গেজেট/ টিএ