খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সোনারগাঁওয়ে টিস্যু গোডাউনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১২ ইউনিট
  আগামীতে সরকারের মেয়াদ হতে পারে চার বছর : আলজাজিরাকে ড. ইউনূস

সাবেক সেনা ও পুলিশপ্রধানের দুর্নীতির বিষয়ে যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

গেজেট ডেস্ক 

সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদের ব্যাপক দুর্নীতি নিয়ে সম্প্রতি বেশ আলোচনা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এবার এই বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।

মঙ্গলবার স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরও জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে ডেথ স্কোয়াড ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (ব়্যাব) সদস্যদের বাংলাদেশে থেকে নিয়োগ দেওয়া অব্যাহত রাখা প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

দুর্নীতির সুযোগ করে দেওয়ার মূল হোতা ক্ষমতাসীন সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কোনো পদক্ষেপ নেবে কিনা জানতে চাইলে বাইডেন প্রশাসনের এই কর্মকর্তা বলেন, দুর্নীতি দমনে যুক্তরাষ্ট্রের বিশদ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসাবে শীর্ষ পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং দুর্নীতি দমনকে রাখা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে। নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে কোনো আগাম ঘোষণা দেয় না।

ব্রিফিংয়ের শুরুতে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ব়্যাবের সদস্যদের জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োগ দেওয়া অব্যাহত রাখা প্রসঙ্গে ডয়েচে ভেলে, সাডেচ সায়েতিং এবং নেত্র নিউজের রিপোর্টের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে স্টেট ডিপার্টমেন্ট করেসপন্ডেন্ট জানতে চান— জার্মান ও সুইডেনভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলে, সাডেচ সায়েতিং এবং নেত্র নিউজের যৌথ অনুসন্ধানী রিপোর্টে বলা হয়েছে— বাংলাদেশের ডেথ স্কোয়াড ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (ব়্যাব) বর্তমান এবং সাবেক সদস্যরা নিয়মিতভাবেই জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োগ পাচ্ছেন। চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে যুক্তরাষ্ট্র যেখানে ব়্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, সেই প্রেক্ষাপটে এই বাহিনীর সদস্যদের যেভাবে শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োগ দেওয়া অব্যাহত রয়েছে, সে বিষয়ে আপনারা কতটা উদ্বিগ্ন? কারণ যুক্তরাষ্ট্র তার দেশের জনগণের ট্যাক্সের আয় থেকে শান্তিরক্ষা বাহিনীর মোট খরচের প্রায় ২৭ শতাংশ জোগান দিচ্ছে।

জবাবে মিলার বলেন, এই রিপোর্টগুলো সম্পর্কে আমরা অবগত। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে শান্তিরক্ষা মিশন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে। জাতিসংঘের যে যথাযথ নীতিমালা রয়েছে, সেটা মেনে শান্তিরক্ষা মিশনে যারা নিয়োগ পাবে, তারা যেন মানবাধিকারের সুরক্ষার পক্ষে থাকে তা নিশ্চিত করাটা জরুরি।

জাতিসংঘের এসংক্রান্ত নীতিমালা অনুসারে সংস্থাটি চায় শান্তিরক্ষা মিশনে যেসব দেশ তাদের পুলিশ এবং সেনাসদস্যদের নিয়োগ দেবে, নিয়োগকৃতরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িত নয় বলে মন্তব্য করেন এই মুখপাত্র।

অপর এক প্রশ্নে দুর্নীতির অভিযোগে ব্যাপক আলোচিত সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদের কথা উল্লেখ করে এই প্রতিবেদক জানতে চান বাংলাদেশের সদ্য বিদায়ী পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদের ব্যাপক দুর্নীতির বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুই ধাপে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো এজেন্সি কী যুক্তরাষ্ট্র কিংবা অন্য কোনো দেশে এই পুলিশপ্রধানের কোনো সম্পদের খোঁজ পেয়েছে কিনা? যদি তার সম্পদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র কী সেগুলো জব্দ করেছে? একইভাবে বাংলাদেশের আরেক দুর্নীতিবাজ সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের বিদেশে সম্পদের কোনো তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রয়েছে কিনা? অতিসম্প্রতি আপনারা তার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।

আপনারা কী বর্তমান সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেবেন কিনা? কারণ ক্ষমতাসীন শীর্ষ নেতৃত্বের কাছ থেকেই এ দুই কর্মকর্তা অবাধে যা কিছু করতে মন চায় তা করার স্বাধীনতা পেয়েছেন। তারা যা করতে (দুর্নীতি) চেয়েছেন তা করেছেন কিংবা বলতে পারেন সবকিছুই করেছেন।

জবাবে মিলার বলেন, আপনার প্রথম প্রশ্ন প্রসঙ্গে বলছি— আমার কাছে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে বলার মতো কিছু নেই। দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে— যেসব অভিযোগ এবং মিডিয়া রিপোর্টের তথ্যসমূহ আপনি এখানে তুলে ধরেছেন আমরা সে বিষয়ে অবগত।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া অবস্থানের কথা তুলে ধরে এই মুখপাত্র বলেন, একটা বিষয়ে আমাদের অবস্থান খুব স্পষ্ট। আমরা বিশ্বাস করি যে দুর্নীতির কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হয়, উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়, স্থিতিশীলতা ব্যাহত হয় এবং গণতন্ত্র খর্ব হয়।

যুক্তরাষ্ট্র দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপ প্রসঙ্গে স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রধান মুখপাত্র মিলার বলেন, আমরা দুর্নীতি দমনকে জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছি। বিশদ এই নীতির পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসাবে শীর্ষ পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে এখন ঘোষণা করার মতো কিছু নেই। কারণ আপনি জানেন যে, নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আগে আমরা আগাম ঘোষণা করি না।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!