সাতক্ষীরায় গত ২৪ ঘন্টায় করোনা উপসর্গ নিয়ে এক নারীসহ তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ জানুয়ারি তাদের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে জেলায় ৩১ জানুয়ারি সোমবার পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৮৮ জন এবং করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন মোট ৭৯৭ জন।
করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তিরা হলো, সাতক্ষীরা পাটকেলঘাটা থানার পুটিয়াখারী গ্রামের মৃত জঙ্গল দাসের ছেলে অখিল দাস (৮০), সাতক্ষীরা শহরের মেহদিবাগ এলাকার মোস্তাফিজুল ইসলামের স্ত্রী হাফিজা খাতুন(৫৫) ও যশোরের মনিরামপুর উপজেলার চাকলা পারখাজরা গ্রামের মৃত কানাই লাল সিংহ এর ছেলে বিষ্ণপদ সিংহ (৭০)।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে গত ১৭ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারির মধ্যে তারা সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ জানুয়ারি বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরায় নতুন করে আরো ৭১ জন করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। এসময় র্যাপিড এন্টিজেন কীট ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ (সামেক) হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে মোট ১৩৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার ৫৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এর একদিন আগে শনাক্তের হার ছিল ৫২ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
সামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছে মোট ৫৪ জন রোগী। এর মধ্যে ১১ জনের করোনা পজেটিভ ও বাকি ৪৩ জন সন্দেহজনক (সাসপেক্টেড)। নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (আইসিইউ) ভর্তি আছে ৩ জন।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ হুসাইন সাফায়াত জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরা সামেক হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে ৮২ টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪৭ জনের করোনা সনাক্ত হয়। এছাড়া সদর হাসপাতাল সহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে র্যাপিড এন্টিজেন কীটে ৫১ টি নমুনা পরীক্ষা করে আরো ২৪ জনের করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৫৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, জেলায় ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ৩৬১ জন। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৮৫৯ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছে ১৪ জন। বর্তমানে জেলায় করোনা রোগী রয়েছে ৪১৪ জন। এরমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর সংখ্যা ১১ জন। বাড়িতে হোম আইসোলেশনে আছেন ৪০৩ জন। জেলায় প্রথম থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৮৮ জন এবং উপসর্গে মারা গেছেন আরো ৭৯৭ জন। জেলায় গড় সংক্রমণের হার ২০ দশমিক ৩৩ শতাংশ।
সিভিল সার্জন আরো জানান, গত ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলায় ১ লক্ষ ৬১ হাজার ৩৮৩ জন এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন। আর দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯৩ হাজার ৯৯ জন। এদিকে সেনোফর্ম ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯ লক্ষ ১২ হাজার ৯৪৪ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ৮ লক্ষ ৫১৭ জন। ফাইজার ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ২ লক্ষ ২৩ হাজার ৪৭ জন। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ২৩ হাজার ৭৬৪ জন। সিনোভ্যাক ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৪৫০ জন। এস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ২০ হাজার ২৩ জন এবং ফাইজার ভ্যাকসিনের বুষ্টার ডোজ গ্রহণ করেছেন ৯১ জন।
তিনি আরো জানান, সাতক্ষীরা জেলায় এ পর্যন্ত প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ১৪ লক্ষ ২২ হাজার ৮২৪ জনকে। দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে ৯ লক্ষ ১৭ হাজার ৩৮০ জনকে এবং তৃতীয় ডোজ ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে ২০ হাজার ১১৪ জনকে।
খুলনা গেজেট/এনএম