সাতক্ষীরায় বিচারপ্রার্থীর আইনজীবী হওয়ার সুবাদে এক যুবলীগ নেতার স্ত্রীকে ফুসলিয়ে ভাড়া বাড়িতে রেখে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলা, নগদ টাকা ও সোনার গহনা আত্মসাত এর প্রতিবাদ করায় যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখমের অভিযোগে জজ কোর্টের পিপি এড. আব্দুল লতিফসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠণিক সম্পাদক শহরের রসুলপুরের হাসানুজ্জামান লাভলু বাদি হয়ে রবিবার সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম এর আদালতে এই মামলা দায়ের করেন। বিচারক মোঃ হুমায়ুন কবীর বাদির অভিযোগ তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অপর আসামীরা হলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ওয়ারিয়া গ্রামের আকাশ বিশ্বাস, নুরুল উল্লাহ বিশ্বাস ও কামারবায়সা গ্রামের পলাশ সরদার।
মামলার বিবরণে জানা যায়, সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠণিক সম্পাদক শহরের রসুলপুরের হাসানুজ্জামান লাভলুর সঙ্গে ওয়ারিয়া গ্রামের বিপাশা বিশ্বাসের ১২ বছর আগে বিয়ে হয়। শারীরিক অসুস্থতার কারণে দু’বছর আগে ভারতে চিকিৎসা নিতে যান লাভলু। এ সময় তার স্ত্রী বিপাশা বিশ্বাস একই এলাকার নজরুল ও রবিউলের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেন। সে বাদি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন জজ কোর্টের বর্তমান পিপি এড. আব্দুল লতিফ। এ সময় বিপাশার উপর আব্দুল লতিফের কু’নজর পড়ে। একপর্যায়ে লতিফ তাকে ফুসলিয়ে নিয়ে রসুলপুরে তার বাড়ির এলাকায় ব্যাংক কর্মকর্তা মারুফ হোসেনের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে রেখে তার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ভারত থেকে দেশে ফিরে তিনি স্ত্রীকে বাড়িতে না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করতে থাকেন।
একপর্যায়ে খোঁজ পেয়ে গত ১৯ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ব্যাংক কর্মকর্তা মারুফের বাড়ির তিন তলায় বিপাশা ও লতিফকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় আব্দুল লতিফ রান্নাঘর থেকে বটি এনে লাভলুকে কুপিয়ে জখম করেন। লতিফের মোবাইল ফোন পেয়ে আকাশ বিশ্বাস, নুরুল উল্লাহ বিশ্বাস ও পলাশ সরদার ওই ঘরে এসে লাভলুকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে জখম করে। এসময় লাভলুর প্যান্টের পকেটে থাকা ট্রাক ভাড়ার ৫৫ হাজার টাকা নিয়ে নেয় লতিফ। এ ছাড়া লতিফ তার স্ত্রী বিপাশার নামে তিনটি ব্যাংকে রাখা প্রায় আট লাখ টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছে। লাভলুর দেওয়া সাড়ে চার লাখ টাকা মূল্যের ছয় ভরি ওজনের সোনার গহনা আত্মসাৎ করে। মারাত্মক জখম লাভলুকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এড. আব্দুল লতিফ বলেন, তিন মাস আগে বিপাশা ডিভোর্স দিয়েছে লাভলুকে। ডিভোর্স না মেনে অধিকার ফলাতে যেয়ে মারপিট করায় বিপাশা গত ১৯ নভেম্বর বাদি হয়ে লাভলুর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে। তাছাড়া বিপাশার বাবা তার ঘনিষ্ট বন্ধু। বিপাশাকে তিনি মা বলেই সম্বোধন করেন। তাই তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের কোন প্রশ্নই ওঠে না।
সাতক্ষীরা মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের পেশকার আনোয়ার হোসেন মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বাদী একই বিষয় নিয়ে থানায় একটি অভিযোগ করলেও পুলিশ সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড না করায় বাদী আদালতে মামলা করেছেন বলে জানান।
খুলনা গেজেট/এনএম