সাতক্ষীরা আশাশুনির তেঁতুলিয়ার আলোচিত ধর্ষণ মামলায় উল্লেখিত ঘটনার সত্যতা না পেয়ে বাদীর বিরুদ্ধে ১৭ ধারা মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রার্থনা করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ। অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) আদালতে আশাশুনি থানার ১১(৯)২০ ও জিআর-২১৭/২০ নং-মামলার ৩১নং এই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
জানা গেছে, ডাক্তারী পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী ভিকটিমের ধর্ষণ সংক্রান্তে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী) ডা. এহেছেন আরা এর তত্ত্বাবধানে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্ট পর্যালোচনায় দেখা যায়, ভিকটিমের বয়স অনুযায়ী (৯-১০ বছর) পূর্ণবয়স্ক আসামী দ্বারা ধর্ষণের শিকার হলে ভিকটিম শারীরিক এবং মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে-যা পরীক্ষার সময় পরিলক্ষিত হয়নি। এছাড়া ঘটনার দিন ভিকটিমের পিরিয়ড চলছিল বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া মোবাইলের সিডিআর পর্যালোচনায় দেখা যায়, ঘটনার দিন অভিযুক্ত মিজানুর রহমান মন্টুর অবস্থান ছিল তার বাড়িতে এবং তেঁতুলিয়া বাজারে। তেঁতুলিয়া বাজার থেকে ঘটনাস্থলের দূরত্ব প্রায় ১.৫ কিলোমিটার।
মামলার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীদের বর্ণনা মতে, অভিযুক্ত মন্টু ঘটনার তারিখ ও সময়ে ঘটনাস্থল বা এর আশেপাশে উপস্থিত ছিলেন না। এছাড়া ঘটনার সাক্ষী নুরী ঘটনার দিন ঘটনাস্থল থেকে মন্টুকে চলে যেতে এবং ভিকটিমকে বাড়ি ফিরতে দেখে বলে জানা গেছে। ভিকটিমের চাচা গহর আলী, সাইদ আলী, আকবরসহ একাধিক লোক মামলায় বর্ণিত ঘটনাস্থলের অনতিদূরে কৃষিকাজ করলেও তারা কোন শব্দ বা মন্টুকে ওই এলাকায় ঘুরতে দেখেননি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, মিজানুর রহমান (মন্টু) শিক্ষিত এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। আসন্ন ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দেয়ায় প্রতিপক্ষ দ্বারা তিনি প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। তার সম্মান হানির জন্য মিথ্যা ধর্ষন মামলা দেয়া হয়েছিল।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশাশুনি থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজুর রহমান জানান, ঘটনার প্রাপ্ত তথ্য, সাক্ষ্য-প্রমান এবং ঘটনার পারিপার্শ্বিকতা ও ভিকটিমের ধর্ষণ সংক্রান্তে মেডিকেল পরীক্ষার রিপোর্ট গভীরভাবে পর্যালোচনা করে আদালতে স্পর্শকাতর এ মামলার (১১(৯)২০) চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রদান করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত: গত ১৩ সেপ্টেম্বর ট্রিপল নাইনে ফোন দিয়ে সাবেক মেম্বর ও আসন্ন ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আশাশুনি উপজেলার শাহনগর গ্রামের মৃত মুক্তিযোদ্ধা শাহ ইদ্রিস আলীর ছেলে মিজানুর রহমান মন্টুর বিরুদ্ধে (১২ সেপ্টেম্বর দুপুরে) শিশু (১০) ধর্ষণের অভিযোগ করে আশাশুনি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। এঘটনায় ১৪ সেপ্টেম্বর সহযোগী হিসেবে আম্বিয়াকে এবং পরবর্তীতে মন্টুকে বাইনতলা গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
খুলনা গেজেট/কেএম