সাতক্ষীরায় গবেষণারত অবস্থায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তরুণ নৃবিজ্ঞানী রাশিদ মাহমুদ বুধবার(৩১ মার্চ) সন্ধ্যায় মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্নালিলাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪৭ বছর। গবেষণার কাজে তিনি বেশকিছুদিন ধরে সুন্দরবন সংলগ্ন সাতক্ষীরার শ্যামনগরে অবস্থান করছিলেন।
অধ্যাপক রাশিদ মাহমুদ ছিলেন ফেনি জেলার পাঁচগাছিয়া গ্রামের চেয়ারম্যানবাড়ির মাহমুদুল হক তাহেরের ছেলে। মৃত্যুকালে তিনি বৃদ্ধ পিতা-মাতা, স্ত্রী ও দুই শিশু পুত্রসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গিয়েছেন। খবর পেয়ে রাতেই তার স্বজনরা মৃতদেহ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
জানা যায়, শ্যামনগরের ভুরুলিয়া ইউনিয়নের চালিতাঘাটা গ্রামে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে তিনি গবেষণার কাজ করতেন। তার সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন তারই ছাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নিসর্গ নিলয়। সন্ধ্যায় একটি ভার্চুয়াল মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করার জন্য অধ্যাপক রাশিদ মাহমুদ নিসর্গ নিলয়কে তার রুমে রেখে অন্য একটি রুমে চলে যান। এসময় তিনি অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে পড়ে জ্ঞান হারান। পরবর্তীতে তাকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অধ্যাপক রাশিদ মাহমুদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র। পরে কিছুদিন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপনা করতেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গবেষণার কাজের জন্য শ্যামনগরে বেশ কিছুদিন ধরে অবস্থান করছিলেন তিনি।
মৃতের ভায়রা যশোর চৌগাছা প্রেসক্লাবের সভাপতি জিয়াউর রহমান রিন্টু জানান, অধ্যাপক রাশিদ মাহমুদ ডায়াবেটিসের রোগি ছিলেন। তিনি কমিউনিটি ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট বিষয় নিয়ে গবেষণারত ছিলেন। সবশেষ ২০ মার্চ তিনি শ্যামনগরে আসেন। ১ এপ্রিল ঢাকায় ফেরার প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার কারণে তিনি সপরিবারে ঢাকায় অবস্থান করতেন।
শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎস্যক তৌহিদুর রহমান বলেন, ডায়াবেটিসের কারনে হাইপো থেকে স্ট্রোকজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নাজমুল হুদা জানান, পরিবারের সদস্যরা ময়না তদন্ত ছাড়াই মৃতদেহ গ্রহণের লিখিত আবেদন করায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মৃতদেহ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেএম