সাতক্ষীরার আশাশুনিতে পুলিশ কর্তৃক দু’জন মুক্তিযোদ্ধার সাথে অসাদাচারণ ও কটুক্তি করায় বীর মুক্তিযোদ্ধা দীনেশ চন্দ্র মন্ডল আত্মহত্যার ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার(২৩ নভেম্বর)দুপুরে আশাশুনি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষনা দেন উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামের মৃত. মানিক চন্দ্র মন্ডলের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা দীনেশ চন্দ্র মন্ডল।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ও মৌখিকভাবে তিনি জানান, রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আমার মটর সাইকেল যোগে বাড়ী থেকে আশাশুনিতে আসার পথে আশাশুনি বাইপাস সড়কের ৩ রাস্তার মোড়ে (দক্ষিণে) এসআই জুয়েল আমাকে গাড়ী থামাতে বলে। তার নির্দেশমত আমি গাড়ী থামাই। পরে সোহাগ নামের একজন কনস্টেবল আমাকে বলে ‘এই গাড়ী রাস্তার পাশে আন’। আমি বলি কাকা কি হয়েছে বলেন? তিনি বলেন রাস্তার উপর কথা বলবো না। গাড়ী রাস্তার পাশে আন। এরপর তিনি রুক্ষ মেজাজে অশালীন ভাষায় বলতে থাকলে আমি বলি, কাকা আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তাছাড়া আমি একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা। আমার ছেলে পুলিশে চাকরি করে। এরপর গাড়ীর লাইট টা প্লাস দিয়ে কেটে নেয়। পরে হর্ণ কাটার জন্য প্লাস বের করে একটি হর্ণ কাটতে যায়। আমি তখন বাঁধা দেই। এসময় সে বলে দু’টি হর্ণ রাখা যাবে না। সে বাঁধা না মানলে, আমি বলি ঘটনাটি আমি এসপিকে বলব। তখন সে আরও উত্তেজিত হয়ে নোংরা ভাষায় কথা বলতে থাকে। এ সময় সেখানে শতাধিক পথচারী উপস্থিত ছিল। আশপাশের দোকানদারও আমার সঙ্গে কি ব্যবহার হয়েছে, তা দেখেছে। ঘটনাটি শুধু আমার সঙ্গে ঘটেনি। আমার আগে অপর এক মুক্তিযোদ্ধা আফসার গাজীকেও একইভাবে অপমান করা হয়েছে বলে ওই সময় জেনেছি। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা আফসার গাজীর গাড়ীর সামনে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত স্টিকার ছিড়ে ফেলে দিতে উদ্দ্যত হয় ওই পুলিশ কনস্টেবল সোহাগ। তিনি বক্তব্যের এক পর্যয়ে বিষের বোতল এক হাতে নিয়ে বলেন, এহেন অপমান জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানের জন্যে অতীব দুঃখজনক ও আত্মহত্যার শামিল।
বীর মুক্তিযোদ্ধা দীনেশ চন্দ্র মন্ডল আরো বলেন, ওই পুলিশ কনস্টেবল কোন পরিবার থেকে এসেছে, কার ইন্ধনে এ সব কথা বলেছে, বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য এবং ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রীসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সঠিক বিচার যদি না পাই তাহলে আমি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবো।
এ ঘটনায় তিনিসহ মুক্তিযোদ্ধা আফছার গাজী বিষয়টি লিখিতভাবে ওই দিন সন্ধ্যায় আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মৌখিকভাবে থানা অফিসার ইনচার্জকে অবহিত করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আফছার আলী গাজী, আব্দুর করিম, কাত্তিক চন্দ্র মন্ডল, মাষ্টার আকবর আলী প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/এ হোসেন