খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড
  অ্যান্টিগা টেস্ট: তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ২৬৯/৯, পিছিয়ে ১৮১ রানে

সাতক্ষীরায় অক্সিজেন সংকটে ৭ রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের অস্বীকার

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরা করোনা ডেডিকেটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেন বিপর্যয়ের কারনে ৭ জন রোগী মারা যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (৩০ জুন) সন্ধ্যায় ৭টার পর এই বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়। ফলে অক্সিজেনের অভাবে তারা মারা গেছেন বলে একাধিক রোগীর স্বজনের অভিযোগ। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি অক্সিজেনের চাপ সামান্য কমলেও সরবরাহ একেবারে বন্ধ হয়নি এবং এ কারণে কোন রোগী মারাও যায়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে মৃত্যুবরণকারীরা হলেন, আইসিইউ ইউনিটের করোনা পজেটিভ রোগী সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের ভাড়াশিমলা এলাকার মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে আকরাম হোসেন খান (৬৩), সিসিইউতে শহরের ইটাগাছা এলাকার মফিজুল ইসলামের স্ত্রী খাইরুন নেছা (৪০), কুকরালী আমতলা এলাকার মনিরুজ্জামানের স্ত্রী করোনা আক্রান্ত নাজমা খাতুন, শ্যামনগরের সোনাখালি এলাকার কাশেম গাজীর ছেলে আশরাফ হোসেন, সাধারণ ওয়ার্ডে আশাশুনির বকচরা গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম পারভেজ (৫৪), কালিগঞ্জের জগন্নাথপুর এলাকার সৈয়দ আলি পাড়ের ছেলে আবু জাফর মোঃ শফিউল আলম তুহিন, আশাশুনির নৈকাটি গ্রামের বেনু গাজির ছেলে আব্দুল হামিদ (৭৫)।

মৃত আকরাম খানের ছেলে তাজ মাহমুদ অভিযোগ করে বলেন, বুধবার বিকাল থেকে হাসপাতালে অক্সিজেন এর চাপ কম ছিলো। সন্ধ্যা ছয়টার পর হঠাৎ করে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় তার পিতার মৃত্যু হয়েছে। এ সময় বারবার অক্সিজেনের ব্যবস্থা করার কথা বললেও কর্তৃপক্ষ তাদের কথায় কান দেয়নি। এসময় হাসপাতলে কোন ডাক্তারকে পাওয়া যায়নি। অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় তার পিতার মতো আরো ৫/৬ জন রোগী মারা গেছেন বলে তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, বাবা যখন মারা গেছে। তখন ফোন দিয়ে আমাদের ডাকছে। আগে থেকে আমাদের জানানো হলে বাবার সাথে শেষ দেখা করতে পারতাম। এখানকার চিকিৎসার সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। আমার বাবাকে হারিয়েছি। ভবিষ্যতে এভাবে যেন আর কেউ তার বাবাকে না হারান এজন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এব্যাপারে বিভাগীয় তদন্তের দাবী জানানা তিনি।
মৃত রবিউল ইসলামের ছোট ভাই আসাদুল ইসলাম জানান, তার ভাই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল। সন্ধ্যার পর হঠাৎ করে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারনে তার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের প্রধান ডা. মানস কুমার মন্ডল বলেন, বিকেল থেকে হাসপাতালে অক্সিজেনের লেভেল কমে যায়। সকালে এই বিষয়ে জানানো হয়েছিল। যশোর থেকে অক্সিজেন নিয়ে আসা হয়েছে। রাত ৮টার আগেই হাসপাতালে অক্সিজেনের অবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে।

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার কুদরত-ই-খুদা অক্সিজেন সরবরাহ একেবাওে বন্ধ হওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, সাময়িকভাবে অক্সিজেনের চাপ কম ছিলো। রাত আটটার দিকে আবার তা স্বাভাবিক হয়ে আসে। হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ছাড়াও ৭০/৮০ টি সিলেন্ডার সবসময় স্টকে রয়েছে। কাজে অক্সিজেন সরবরাহ ঘাটতি হওয়ার কোন প্রশ্নই ওঠে না এবং এ কারণে কোন রোগী মারা যায়নি।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন হুসাইন শাফায়েত বলেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অক্সিজেনের সংকট দেখা দেওয়ার কথা না। সেন্টাল অক্সিজেন ছাড়াও ৭০টির অধিক সিলিন্ডার আছে। শুনেছি কয়েকজন মারা গেছে। তবে করোনায় ৪ জন মারা গেছে। এখানে কর্তৃপক্ষের কোন গাফিলতি ছিলে কিনা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!