খুলনা, বাংলাদেশ | ১৮ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৩ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০২২
বছর ঘুরে দরজায় কড়া নাড়ছে দূর্গাপূজা

সাতক্ষীরায় রংতুলির আচড়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

বছর ঘুরে দরজায় কড়া নাড়ছে দূর্গাপূজা। আর মাত্র ৫দিন পরেই শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। তাই তো শেষ মূহুর্ত্বের প্রস্তুতিতে ব্যস্থ সাতক্ষীরার প্রতিমা শিল্পীরা। দিনরাত পরিশ্রম করে নিপুন হাতে তৈরী করছেন দেবি দূর্গাকে। দেবি দূর্গাকে মনেরমত করে সাজাতে রংতুলির আচড়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা।

সাতক্ষীরা জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের দেয়া তথ্যমতে এবার সাতক্ষীরা জেলার সাতটি উপজেলা ও দুটি পৌর সভায় ৫৬২টি মন্ডপ ও মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ৯৯টি, আশাশুনিতে ৯৫টি, দেবহাটায় ২১টি, কলারোয়ায় ৩৯টি, তালায় ১৯৬টি, কালীগঞ্জে ৪৯টি ও শ্যামনগর উপজেলায় ৬৩টি মন্ডপ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) জেলার পৌর শহরের বেশ কয়েকটি মন্দির ও পূজা মন্ডপ ঘুরে দেখা গেছে ইতিমধ্যে বেশির ভাগ প্রতিমা তৈরির অবকাঠামোর কাজ শেষ হয়েছে। এখন রংতুলির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা। দেবী দুর্গাকে মনেরমত করে সাজাতে রংতুলির কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছেন তারা।

প্রতিমার পরিপূর্ণ রূপ দিতে রংতুলির শেষ আঁচড় দেওয়া হচ্ছে। শিল্পীদের কেউ কেউ আবার সাজসজ্জার কাজ করছেন।
জেলা শহরের কাটিয়া কর্মকারপাড়া মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন দেবহাটা উপজেলার টিকিট গ্রামের নিরঞ্জন সরকারসহ কয়েকজন।

তিনি বলেন, আমরা এবার গ্রুপ করে বেশ কয়েকটি মন্দিরের কাজ করছি। কোথাও ১০দিন, আবার কোথাও ১২দিন সময় লাগছে। প্রতিমা তৈরী শেষে এখন চলছে রংয়ের কাজ। একই সাথে চলছে প্রতিমার সাজসজ্জার কাজ। আশা করছি আগামী ২/১ দিনের মধ্যে প্রতিমা তৈরীর পুরো কাজ শেষ হবে।

সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া কর্মকারপাড়া মন্দির কমিটির সভাপতি গৌর দত্ত বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও সাতক্ষীরায় জাকজমকপূর্ন পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। নির্বিঘেœ এবং আনন্দঘন পরিবেশে এবারও পূজা সম্পন্ন করতে পারবো বলে আমরা আশা করছি। কেননা প্রশাসনের পাশাপাশি বিএনপি ও জামায়াত সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দরা আমাদেরকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। কাজেই আমাদের পূজা উদযাপনের সার্বিক কার্যক্রম খুব সুন্দরভাবে চলছে। দেশবাসীকে অগ্রিম শারদীয় শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

সাতক্ষীরা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, ব্যাপক উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। যদিও জেলায় এবার কয়েকটি উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সে কারণে কিছু পূজা কম হবে। এরপরও সাতক্ষীরা জেলায় ৫৬২টি পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি আরো বলেন, পূজা মন্ডপের নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের নেতৃবৃন্দ বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। তারা আশ্বস্ত করেছেন, কোনো অসুবিধা হবে না। আপনাদের পাশে আমরা আছি এবং থাকব। সবাই মিলেমিশে সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করব। এছাড়া জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার এমনকি খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মহোদয় আমাদের নিয়ে বসে সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। আমরা আমাদের কথা বলেছি, তারা তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা আশা করি, সেই নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করব। তারাও নিরাপত্তার বিশেষ ব্যবস্থা করবেন।

বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, এবারের দুর্গাপূজা খুব উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপন হবে।

এদিকে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকার পূজা মন্ডগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্বে টহল কার্যক্রম জোরদার করেছে বিজিবি সদস্যরা। বুধবার (২ অক্টোবর) থেকে তারা বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকার ৮ কিলোমিটারের মধ্যে সাতক্ষীরা সদর ও কলারোয়া উপজেলার ৪০টি পূজামন্ডপে টহল কার্যক্রম চলাবে।

সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটেলিয়ানের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ আশরাফুল হক, পিবিজিএম, পিএসসি, জি বলেন, শারদীয় দূর্গাপূজা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং জনমনে আস্থা ও মনোবল বৃদ্ধিতে সীমান্তবর্তী এলাকার পূজা মন্ডপ গুলোতে নিরাপত্তা টহল কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। পূজা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত বিজিবি টহল কার্যক্রম অব্যহত রাখবে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!